জবাবদিহিতার অভাবে ব্যাংকিং খাতে বিশৃঙ্খলা

আমাদের ব্যাংকিং খাতের অস্থিরতা আজকের নয়। অব্যবস্থাপনা, অদক্ষতা আর সমন্বয়হীনতার কারণে ব্যাংকিং খাত সবচেয়ে অস্থিতিশীল হিসেবে চিহ্নিত। সেই সাথে নানামুখী কেলেঙ্ককারির কারণেও মানুষের আস্থার অভাব তৈরি হয়েছে এ খাতকে ঘিরে। সাম্প্রতিককালে রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর আর্থিক কেলেঙ্ককারি আমাদের ব্যাংকিং খাতকে ফেলে দেয় হুমকির মুখে।

গণমাধ্যমে রাজনৈতিক বিবেচনায় লাইসেন্স পাওয়া নতুন নয় ব্যাংক বিতর্কে জড়িয়েছে। প্রকাশিত খবর অনুযায়ী এগুলোর মধ্যে রয়েছে এনআরবি, এনআরবি গ্লোবাল, এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক, ইউনিয়ন, মেঘনা, মিডল্যান্ড, মধুমতি, দ্যা ফারমার্স ও সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এসকে সুর চৌধুরী বলেন, নতুন নয় ব্যাংকের মধ্যে দু’তিনটির অবস্থা খুবই নাজুক। এদের মধ্যে এক ধরনের অসুস্থ প্রতিযোগিতা চলছে। এ অসুস্থ প্রতিযোগিতার কারণে তারা পিছিয়ে পড়ছে। তাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ব্যাংক যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছে। অর্থনীতিবিদরা বলে থাকেন দুর্বল নীতিমালা ও জবাবদিহিতার অভাবে ব্যাংকিং খাতে বিশৃঙ্খলা বিরাজ করছে। অর্থনীতি হলো রাজনীতির প্রাণ। অর্থনীতিতে ব্যাঘাত সৃষ্টি হলে রাজনীতিতে তার কুপ্রভাব পড়তে বাধ্য। ব্যাংকগুলোকে ভারি অঙ্কের মন্দ ঋণের বোঝা টানতে হচ্ছে। খেলাপি ঋণের সংস্কৃতিও আমাদের ব্যাংকিং খাতের অন্যতম দিক। ভুয়া, অস্তিত্বহীন, নাম সর্বস্ব ও খেলাপি প্রতিষ্ঠানের নামে শ শ কোটি টাকা ঋণ অনুমোদন দিয়ে ব্যাংকের সম্পদ খুঁইয়ে চলেছে পরিচালনা পর্ষদ। সাম্প্রতিক উদাহরণ বেসিক এর সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকার ঋণ। যা এখন উচ্চ আদালতের নির্দেশে দুদক তদন্ত শুরু করেছে। ব্যাংক হচ্ছে মানুষের আস্থার স্থান, সঞ্চয়ের ভরসাস্থল, বিশ্বাসের এই জায়গাটুকু কোনও ক্রমেই ক্ষতিগ্রস্ত হতে দিতে পারি না। এ খাতে সব ধরনের আর্থিক দুর্নীতি রোধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।