খোশ আমদেদ মাহে রমজান

প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউসুফ আলী: আজ ৮ রমজান। পূণ্যের বসন্ত পবিত্র মাহে রমজানের রহমত দশকের আজ অষ্টম দিন। রমজান মাসের বিশেষত্ব ও ফজিলতের অন্যতম কারণ হলো এই মাসেই মহাগ্রন্থ আল-কোরআন নাজিল হয়। আল্লাহ তায়ালার ঘোষণা, রমজান মাসই হলো সে মাস, যাতে নাজিল করা হয়েছে কোরআন, যা মানুষের জন্য হেদায়েত এবং সত্যপথ যাত্রীদের জন্য স্পষ্ট পথ নির্দেশ আর ন্যায় ও অন্যায়ের মাঝে পার্থক্য বিধানকারী (বাকারা: ১৮৫)। শুধু তাই নয়, অন্যান্য বড় বড় আসমানি কিতাবও এই মাসেই নাজিল হয়। হযরত ইব্রাহিম (আঃ) এর সহীফাসমূহ এই মাসের ১ অথবা ৩ তারিখে নাজিল হয়। হযরত দাউদ (আঃ) কে ১২ অথবা ১৮ রমজান যাবূর কিতাব দেয়া হয়। হযরত মুসা (আঃ) কে ৬ রমজান তাওরাত কিতাব দেয়া হয়। হযরত ঈসা (আঃ) কে ১২ অথবা ১৩ রমজান ইঞ্জিল কিতাব দেয়া হয়। এতে বোঝা যায় যে, আল্লাহপাকের কিতাবের সাথে এই মাসের বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে। এই কারণেই এই মাসে বেশি বেশি কোরআন তেলাওয়াত করা দরকার। কোরআন হলো একটি জীবন্ত মো’জেজা। এটিই পৃথিবীর একমাত্র ধর্মগ্রন্থ যা এখনও অবিকল অবস্থায় আছে এবং কিয়ামত পর্যন্ত থাকবে। এর তেলাওয়াতের মাধ্যমে আমাদের জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে আল্লাহর নির্দেশনা সম্পর্কে জানা যায়। হাদিসে এসেছে, তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তি সর্বোত্তম যে নিজে কোরআন শরীফ শিখে এবং অপরকে শিক্ষা দেয় (বুখারি, আবু দাউদ, তিরমিজি, ইবনে মাজাহ, নাসায়ী)। অন্য এক হাদিসে হুজুর (সাঃ) এরশাদ করেন, যে ব্যক্তি কোরআনের একটি অক্ষর পড়বে সে এক নেকি লাভ করবে এক নেকি দশ নেকির সমান হবে। আমি বলি না যে আলিফ-লাম-মীম একটি অক্ষর বরং আলিফ একটি অক্ষর, লাম একটি অক্ষর এবং মীম একটি অক্ষর (তিরমিজি)। এই সওয়াব রমজান ছাড়া অন্য মাসের জন্য প্রযোজ্য। রমজান মাসে এই সওয়াব কমছে কম আরও ৭০ গুণ বৃদ্ধি করা হয়। অপর হাদিসে রাসুলে কারীম (সাঃ) বলেন, তোমরা আল্লাহর নৈকট্য ওই জিনিস থেকে অধিক আর কোনো জিনিস দ্বারা হাসিল করতে পারবে না, যা স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা হতে বের হয়েছে, অর্থাৎ কালামে পাক (আবু দাউদ, তিরমিজি, হাকিম)। তাই আসুন, আমরা সবাই মিলে এই মহিমান্বিত মাসে বেশি বেশি কোরআন তেলাওয়াত করি, কোরআনের অর্থ বুঝি এবং মহান আল্লাহর সান্নিধ্য লাভ করি। (লেখক: অধ্যাপক, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়)।