মাত্র ১০ টাকা নিয়ে গণ্ডগোলের পর ছুরি দিয়ে মিলনকে খুন করে শিপলু

২০ টাকার গাঁজা আর এক প্যাকেট সিগারেট কিনে সেবন করে দু বন্ধু : ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি

 

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা পৌর কলেজপাড়ার যুবক মিলন হোসেনের একমাত্র খুনি তার বন্ধু মসজিদপাড়ার শিপুলকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। খুনের মাত্র ৩০ ঘণ্টার মধ্যে নানাবাড়ি থেকে গ্রেফতার হয়েছে সে। মাত্র ১০ টাকার জন্য গণ্ডগোলের এক পর্যায়ে গাঁজা কাটা ছুরি দিয়ে উপর্যুপরি আঘাতে মিলনকে খুন করে শিপলু। সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে ১৬৪ ধারায় দেয়া জবানবন্দিতে সে এ খুনের কথা স্বীকার করে। ফলে আটক অন্যদের পুলিশ ছেড়ে দিয়েছে।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা পৌর কলেজপাড়ার শরিফ মণ্ডলের ছেলে মিলন হোসেন (২৬) চুয়াডাঙ্গার ঝিনাইদহ বাসস্ট্যান্ড এলাকার মায়ের দোয়া স্টিল কিং ওয়েল্ডিঙের দোকানের কর্মচারী। বছরখানেক আগে একই দোকানে কাজ করতো চুয়াডাঙ্গা মসজিদপাড়ার কুদ্দুস আলীর ছেলে শিপলু। সেই থেকে দুজনের মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত রোববার রাত ৮টার দিকে দুজন শহরের আরামপাড়াস্থ মোহাম্মদী শপিং কমপ্লেক্সের পেছনের একটি আমবাগানে বসে। এরপর সোমবার সকালে ধারালো অস্ত্রাঘাতে খুন হওয়া মিলনের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার হয়। সেই সাথে খুনের কাজে ব্যবহৃত রক্তমাখা ছুরিটিও উদ্ধার করে পুলিশ। ওই দিন জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চুয়াডাঙ্গা মাঝেরপাড়ার আব্দুস সালামের ছেলে বেকারি শ্রমিক আশাদুল (১৭), আরামপাড়ার মায়ার ছেলে সুজন (১৫) ও একই পাড়ার হানিফের ছেলে রাজুকে (১৪) আটক করা হয়। সুজনের দেয়া প্রাথমিক তথ্য নিয়ে পুলিশ আসল খুনিকে গ্রেফতারের জন্য অভিযানে নামে। এরই সূত্র ধরে সোমবার রাত ২টার দিকে সদর ফাঁড়ি ইনচার্জ এসআই খায়ের সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার পিরোজখালী গ্রামে অভিযান চালান। ওই গ্রামের  নানাবাড়ি থেকে শিপলুকে (২৩) গ্রেফতার করে পুলিশ। তাকে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের দফতরে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে সে খুনের কথা স্বীকার করে। খুনের কথা স্বীকারের পর শিপলুকে গতকাল হাজির করা হয় চুয়াডাঙ্গার বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফিরোজ মামুনের আদালতে। সেখানে সে খুনের কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেয়। বিজ্ঞ বিচারক ফিরোজ মামুন তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি ১৬৪ ধারায় রেকর্ড করেন।

পুলিশসূত্রে জানা যায়, জবানবন্দিতে শিপলু বলেছে ‘গত রোববার রাত ৮টার দিকে আমি ২০ টাকার গাঁজা ও এক প্যাকেট সিগারেট কিনি। মিলন গাঁজা বানায়। আমরা দুজন বসে বসে গাঁজা ও সিগারেট খেয়ে শেষ করি। রাত সাড়ে ৯টার দিকে আমি গাঁজা কেনার ২০ টাকার মধ্যে ১০ টাকা মিলনের কাছে চাই। এতে মিলন রেগে উঠে আমার বুকের ওপরে লাথি মারে। আমি এ সময় ক্ষিপ্ত হয়ে হাতে থাকা ছুরি এলোপাতাড়ি চালাই। এরপর আমি বাড়িতে যেয়ে শুয়ে থাকি। আমার ধারণা ছিলো মিলন জখম হলেও মরবে না। কিন্তু সকালে জানতে পারি পুলিশ মিলনের লাশ উদ্ধার করেছে। এ কথা শোনার পর আমি চুয়াডাঙ্গা ছেড়ে আমার নানাবাড়ি পদ্মবিলা ইউনিয়নের পিরোজখালী চলে যাই।’ মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই কাইয়ুম জানান শিপলুর জবানবন্দি রেকর্ডের পর তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *