দর্শনায় শিশুদের প্রাক প্রাথমিক শিক্ষায় আলোকিত করছে মৌচাক

 

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনায় হতদরিদ্র বাগদি, গড়াই ও দাস পরিবারের নতুন প্রজন্মের কোমলমতি শিশুদের প্রাথমিক শিক্ষায় উৎসাহিত করতে ও ঝরে যাওয়ারোধে প্রাক প্রাথমিক শিক্ষায় অক্ষরজ্ঞানে আলোকিত করতে এগিয়ে এসেছে বেসরকারি সামাজিক উন্নয়ন সংস্থা মৌচাক নামের একটি সংগঠন।সংগঠনটি নিজ এলাকায় কোনো ঢাক ঢোল না বাজিয়ে অতি নীরবে এলাকার হতদরিদ্র দর্শনার কালিদাসপুর বাগদি পল্লির কোমলমতি শিশুদের আলোকিত করে প্রাথমিক শিক্ষার জন্য সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়ায় এ উদ্যোগকে এলাকাবাসীর নিকট ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে। শিশুদের অভিভাবক তাদের সন্তানদের নিজ গণ্ডির মধ্যে রেখে প্রাক প্রাথমিক অক্ষরজ্ঞানে শিক্ষা দিতে পেরে তারা খুশি।

দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা পৌর এলাকার রামনগর মেমনগর বিডি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পাশে এলাকার হতদরিদ্র বাগদি, গড়াই,দাসও জেলে পরিবারের কোমলমতি ২২ জন ছাত্রছাত্রী নিয়ে নীরবে গড়ে ওঠে প্রাক প্রাথমিক শিক্ষালয়। নতুন প্রজন্মের হতদরিদ্র ২২ জন কোমলমতি শিশুদের মধ্যে প্রাক প্রাথমিক শিক্ষার আলো পৌঁছে দিতে ও আলোর পথ দেখাতে দর্শনার সামাজিক উন্নয়ন সংস্থা মৌচাক নামের সংগঠন প্রাথমিক পর্যায়ে কাজ শুরু করেছে। সংগঠনটি প্রাক প্রাথমিক বিদ্যালয় নাম দিয়ে কোমলমতি শিশুদের প্রাথমিক শিক্ষা থেকে ঝরে যাওয়ারোধে প্রাক প্রাথমিক শিক্ষার অক্ষর জ্ঞানে আলোকিত করতে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের উৎসাহ দিতে কিছু নিয়মনীতি ও শিক্ষার যাবতীয় উপক্রম ফ্রি দিয়ে লেখাপড়ার দায়িত্ব নিয়ে কাজ শুরু করেছে।এ বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীর বয়স ৫ বছর বয়সের কিছু বেশি। শুক্রবার বাদে প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে ১১টা পর্যন্ত একজন শিক্ষক তাদের হাতে-কলমে শিক্ষা দিচ্ছেন।এ বিদ্যালয়ের শিশুরা সবাই তাদের পাঠ্যবই এখন নিজেরাই পড়তে ও লিখতে পারে। এ পল্লির শিক্ষার্থীরা স্কুলে লেখাপড়া করতে পেরে অভিভাবকদের মতো তারাও খুশি।

এ বিদ্যালয়ে পডুয়া নিশা, দীপঙ্কর,শ্রীমতি রিতু, কাকলী মাহনী, মায়া, চয়ন,জীবন, শিশির, সজিব, সমিত্র, অন্তরাসহ অনেকে এ প্রতিনিধিকে জানায়, প্রতিদিন স্যার আমাদের নানা ধরনের পড়া শেখান। ব্লাকবোর্ডে হাতে লিখে বাংলা ও ইংরাজি অক্ষরগুলো চিনিয়ে দেন। আমরা সবাই মিলে শব্দ উচ্চারণ করে মুখস্থ করি। বই, খাতা,কলম,পেন্সিল, কার্টার, স্কেল স্কুলের ব্যাগেভরে স্কুলে এসে নিয়মিত পড়াশুনা করে বাড়ি ফিরে যাই। আমরা এখন পড়তে পারি ছড়া বলতে পারি ও আমরা সবাই লিখতে পারি।

এ বিদ্যালয়ের শিক্ষক জিল্লুর রহমান রিপন বলেন, কোমলমতি শিশুরা প্রতিদিন নিয়মিতভাবে বিদ্যালয়ে আসে। তারা সবাই মেধাবী।তাদের মধ্যে শিক্ষার ইচ্ছা যথেষ্ট রয়েছে।কালিদাসপুর বাগদি পল্লির সরদার শ্রী গোপাল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, খেটে খাওয়া হতদরিদ্র অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের নিয়ে লেখাপড়ার জন্য চরমভাবে উদ্বিগ্ন ছিলেন। কোমলমতি শিশুদের লেখাপড়ার জন্যে সার্বিকভাবে এই সামাজিক প্রতিষ্ঠান সহযোগিতার হাত বাড়ানোর কারণে তারা সবাই খুশি।

মৌচাক সংগঠনের সমন্বয়কারী আশরাফুল ইসলাম বলেন, শিক্ষা উন্নতির চাবিকাঠি। শিক্ষা ব্যতীত কোনো জাতি উন্নতি লাভ করতে পারে না। আর এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হলো- এ সমস্ত কোমলমতি শিশুদের সরকারিভাবে প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণের জন্য তাদের অভিভাবক ও শিশুদের উৎসাহিত করা এবং ঝরে যাওয়ারোধ ঠেকানো।