মেয়েকে দেখানোর কথা বলে মাকেও পাচারের চেষ্টা : তিন পাচারকারীপাকড়াও

দামুড়হুদার মুন্সিপুর সীমান্ত দিয়ে সুবলপুর গ্রামের দু কিশোরীকে ভারতে পাচার : বিজিবির পদক্ষেপ

 

দর্শনা অফিস/দামুড়হুদা প্রতিনিধ: দামুড়হুদার মুন্সিপুর সীমান্ত দিয়ে ফরিদা খাতুন (১৪) নামের এক নবম শ্রেণির ছাত্রীকে ভারতে পাচার করে দিয়েছে এলাকার সংঘবদ্ধ পাচারকারীচক্র। পাচার হওয়া ওই স্কুলছাত্রীর মা রহিমা খাতুন মেয়ের খোঁজে ওই চাপারকারীচক্রের এক সদস্যের বাড়িতে গেলে পাচারকারীচক্র তাকেও পাচার করার চেষ্টা করে। এসময়ে বিজিবি সদস্যরা ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ৩ পাচারকারীকে গ্রেফতার করেছে। মুন্সিপুর সীমান্ত এলাকা থেকে উদ্ধার করেছে ভারতে পাচার হওয়া ওই ছাত্রীর মাকে। এ ঘটনায় বিজিবি বাদী হয়ে আটক ওই পাচারকারীর বিরুদ্ধে মামলা দায়েরপূর্বক থানায় সোপর্দ করেছে। গতকাল শুক্রবার বিকেল ৩টার দিকে উপজেলার মুন্সিপুর সীমান্ত এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন, উপজেলার সুবলপুর গ্রামের বাবুল হোসেনের ছেলে রুহুল আমিন (২৬), একই গ্রামের আমির হোসেনের ছেলে আবুল কালাম (৪৬) ও মুন্সীপুর গ্রামের তেতুল বক্সের ছেলে সোহেল রানা (২৮)। পাচার হওয়া ছাত্রী ফরিদা উপজেলার সুবোলপুর গ্রামের আকমান আলীর মেয়ে। সে দামুড়হুদা পাইলট গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্রী।

পাচার হওয়া ছাত্রীর মা রহিমা খাতুন জানান, গত বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে মেয়ে ফরিদা স্কুলে যাওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে বের হয়। মেয়ে সারাদিন বাড়ি না ফেরায় প্রতিবেশী দাউদ আলীর ছেলে মোজামের বাড়িতে গেলে মোজামের স্ত্রী বলেন তোমার মেয়ে এবং একই গ্রামের ছানোয়ারের মেয়ে টুনু (১৩) ভারতে চাকরি করার জন্য মুন্সিপুর বর্ডার দিয়ে ভারতে চলে গেছে। তারা ভালো জায়গায় আছে এবং মোটা মাইনে পাবে। কেন তোমাকে কিছু বলে যায়নি। এসময় আমি মেয়েকে একনজর দেখার ইচ্ছা ব্যক্ত করলে ওই সংঘবদ্ধ পাচারকারীচক্র মেয়েকে দেখানোর নাম করে আমাকে মুন্সিপুর সীমান্তের কাছে নিয়ে যায় এবং এক দালালের মাধ্যমে আমাকে ভারতে পাচারের চেষ্টা করে। এসময় আমি বিজিবি সদস্যদের হাতে ধরা পড়ি।

মুন্সিপুর বিজিবি ক্যাম্পের হাবিলদার তোতা মিয়া জানান, ছানোয়ারের মেয়েকে ভারতে পাচার করেছে কিনা আমার জানা নেই। তবে গতকাল শুক্রবার বিকেলে ফরিদা ও তার মা রহিমা খাতুনকে ভারতে ১৫ হাজার টাকা বেতনের চাকরি দেয়ার কথা বলে একই গ্রামের মোজাম ও রুহুল আমিনসহ ৪ জন তাদেরকে মুন্সীপুর সীমান্তে নিয়ে যায়। এক পর্যায়ে ফরিদা খাতুনকে সীমান্তের ৯৩/৫ পিলারের কাছ দিয়ে ভারতে পাচার করে এবং নদীয়া জেলার চাপড়া থানার হাটখোলা গ্রামের চান্দুর হাতে তুলে দেয়। মা রহিমা তাদের গতিবিধি দেখে সন্দেহ হলে চিৎকার দেয়। এসময় মুন্সীপুর ক্যাম্পের টহলরত বিজিবি সদস্যরা রহিমা খাতুনকে উদ্ধার করে এবং পাচারকারী রুহুল আমিন, আবুল কালাম ও সোহেল রানাকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত পাচারকারী আবুল কালাম জানান, তারা বেশ কিছুদিন ধরে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে নারী ও শিশুদেরকে চাকরি দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ভারতে পাচার করে আসছে। এ ঘটনায় মুন্সীপুর বিজিবি ক্যাম্পের কমান্ডার তোতা মিয়া বাদী হয়ে গতকার রাত ১০টার দিকে ওই তিন পাচারকারীর বিরুদ্ধে দামুড়হুদা মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছেন।