দশ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে আড়াই লাখ টাকা আদায়ও করে অপহরণকারীরা

 অপহৃত স্কুলছাত্র অভি ও তরুণ কৃষক লিটন মুক্ত

স্টাফ রিপোর্টার: নানাবাড়ি শিবপুরে বেড়াতে গিয়ে অপহৃত চুয়াডাঙ্গা ভি.জে স্কুলের ৭ম শ্রেণির ছাত্রসহ তরুণ কৃষক লিটন মুক্ত হয়েছে। গতকাল বুধবার ভোরে পার্শ্ববর্তী হরিণাকুণ্ডুর চকটাবাড়ি গ্রামের অদূরে এদেরকে ছেড়ে দেয়া হয়। পরে সেখান থেকে পুলিশ উদ্ধার করে। ঠিক কতো টাকা মুক্তিপণের মাধ্যমে এদেরকে মুক্ত করা হয়েছে তা নিশ্চিত করে জানা না গেলেও এলাকায় গুঞ্জন রয়েছে, পরশু রাতে আড়াই লাখ টাকা প্রদান করা হয়। এরপরই অপহৃত দুজনের মুক্তি মেলে। পুলিশ শিবপুরের লাল্টুকে আটক করেছে। সে এলাকার অস্ত্রধারী গ্যাঙের সদস্য।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা নূরনগরের সুজন আলীর ছেলে আশিকুর রহমান অভি (১৪) চুয়াডাঙ্গা ভি.জে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণির ছাত্র। সে তার মায়ের সাথে সম্প্রতি মামাবাড়ি চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের কুতুবপুর ইউনিয়নের শিবপুরে বেড়াতে যায়। গত ১ জুন রাতে অভি তার মামাবাড়ির প্রতিবেশী লিটন হোসেনের (৩০) ঘরে বসে টিভি দেখছিলো। রাত আনুমানিক সাড়ে ১০টার দিকে একদল অস্ত্রধারী পানি খাওয়ার কথা বলে বাড়িতে প্রবেশ করে। খাসকররার রাস্তা চিনিয়ে দেয়ার কথা বলে অভিকে অপহরণ করে। পিছু নেয় লিটন। তাকেও অপহরণ করা হয়। লিটন শিবপুর গ্রামের মতিয়ার রহমানের ছেলে।তিনি পেশায় একজন কৃষক। হরিণাকুণ্ডু থানা পুলিশ অপহৃত দুজনকে উদ্ধারের পর চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের হাতে তুলে দেয়। গতরাতে থানা নিয়ে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

হরিণাকুণ্ডু থানার ওসি এরশাদুল কবির বলেন, গ্রেফতারকৃত লাল্টু চুয়াডাঙ্গার সদর উপজেলার শিবপুর গ্রামের শুকুর আলীর ছেলে। তিনি চরমপন্থি সংগঠন পূর্ববাংলার কমিউনিস্ট পার্টির (জনযুদ্ধ) ক্যাডার। গত রোববার রাতে সে প্রতিবেশী মামা লিটনের বাড়িতে বসে টিভিতে আইপিএল ক্রিকেট খেলা দেখছিলো। রাত আনুমানিক সাড়ে ১০টার পানি খাওয়ার কথা বলে ১৪-১৫ জনের একদল অস্ত্রধারী বাড়িতে প্রবেশ করে। এ সময় অভি তাদের পানি এনে খাওয়ায়। পরে অপহরণকারীরা খাসকররার রাস্তা চিনিয়ে দেয়ার কথা বলে অভি ও লিটনকে। রাস্তায় নিয়ে দুজনকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করা হয়। পরে তাদের পরিবারের কাছে দশ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে আড়াই লাখ টাকা আদায়ও করে অপহরণকারীরা। আড়াই লাখ টাকা লেনদেন শেষে অভি ও লিটনকে হরিণাকুণ্ডু উপজেলার পোলতাডাঙ্গা গ্রামে রেখে যায়। বুধবার ভোররাতে বাকি আড়াই লাখ টাকা চটকাবাড়িয়া গ্রামের খালের পাড়ে দেয়ার কথা ছিলো। এ খবর পেয়ে পুলিশ আগে থেকে ওই এলাকায় অবস্থান নেয়। ভোররাত ৩টার দিকে টাকা লেনদেনের সময় পুলিশ ধাওয়া করে লাল্টুকে গ্রেফতার করে। তার অন্য সঙ্গীরা পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় হরিণাকুণ্ডু থানায় অপহৃত দু স্কুলছাত্রের পিতা বাদী হয়ে দুটি মামলা করেছেন।