চুয়াডাঙ্গা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক স্বল্পতা চরমে ॥ পাঠদান ব্যাহত

কামরুজ্জামান বেল্টু: চুয়াডাঙ্গা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান ভেঙে পড়েছে। শিক্ষক সংকটের কারণে প্রায় প্রতিটি শ্রেণিরই দুটি শাখা একীভূত করেও পাঠদান সম্ভব হচ্ছে না। কয়েক বছর ধরেই এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। তবে তীব্র থেকে তীব্রতর হয়েছে চলতি বছরে। শিক্ষক বদলি করা হলেও শূন্যপদে নতুন শিক্ষকের পদায়নের অভাবেই এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে মন্তব্য নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষকদের।
চুয়াডাঙ্গা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালরে নবম শ্রেণির ছাত্রী সুরাইয়া সুলতানা রিমুর আত্মহত্যার পর গঠিত তদন্ত দলের সুপারিশে বিদ্যালয়ের ৪ শিক্ষককে বদলি  করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন হলেও শোনা যাচ্ছে, বদলির আদেশ নিয়ে চুয়াডাঙ্গা বালিকা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ৪ জন সহকারী শিক্ষক মেহেরপুরে যোগদানকারী সহকারী শিক্ষক হাসানুজ্জামান হেদায়েত, মাসুদুর রমান, রহিমা খাতুন ও ওয়াহিদা পারভীন পপি চুয়াডাঙ্গা ভি.জে স্কুলে ফেরার জোর তদবির করছেন। এরা ভি.জে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে বদলির আদেশ পেলে তাদের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারী ছাত্রীদের ভয়ানক ক্ষতির কারণ হতে পারে বলে মন্তব্য অনেকের। আন্দোলনকারী সেই শিক্ষার্থীদের মধ্যে এ ধরনের অজানা আতঙ্ক তো রয়েছেই। তাছাড়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক সঙ্কট দিন দিন তীব্র থেকে তীব্রতর হওয়ায় পাঠদান চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদটি শূন্য। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন সহকারী প্রধান শিক্ষক স্বপন কুমার মালাকার। বিদ্যালয়ের ৫০টি সহকারী শিক্ষক পদের মধ্যে মাত্র ২৩ জন সহকারী শিক্ষক দায়িত্ব পালন করছেন। ছাত্রীর সংখ্যা ২ হাজার ২১৫ জন। ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারীর পদ ১০টি থাকলেও ৮টি শূন্য। অফিস সহকারী পদ দুটির একটিতেও লোকবল নেই। এ অবস্থায় চুয়াডাঙ্গা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় চলছে কীভাবে? ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বললেন, প্রভাতীর ও দিবা বিভাগের দুটি করে মোট ৪টি শাখা। শিক্ষক সঙ্কটের কারণে দুটি বিভাগে একটি করে শাখা করা হয়েছে। প্রতি শ্রেণির প্রতি শাখায় ছাত্রী ৬০ জন, দুটি শাখা একীভূত করার কারণে এখন এ সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২০ জন করে। ফলে শ্রেণিকক্ষের পরিবেশ কতোটা পাঠন-পঠনের উপযোগী তা শিক্ষানুরাগীদের বুঝতে নিশ্চয় অসুবিধা হচ্ছে না। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি পুনঃপুন জানিয়েও প্রতিকার পাচ্ছি না।
চুয়াডাঙ্গা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের বর্তমান করুণদশা দূর হবে কবে? জবাব মিলছে না।