খালেদা জিয়ার জামিনের বিরুদ্ধে আপিলের ওপর আদেশ আজ

স্টাফ রিপোর্টার: জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেয়া জামিনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও রাষ্ট্রপক্ষের করা লিভ টু আপিলের ওপর শুনানি শেষ হয়েছে। আজ সোমবার এ বিষয়ে আদেশ দেবে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। গতকাল রোববার শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের চার বিচারপতির বেঞ্চ আদেশের জন্য ওইদিন দিন ধার্য করে দেন। আপিল বিভাগের আদেশের পরই খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেয়া জামিন বহাল রয়েছে কিনা তা আজ জানা যাবে।

এদিকে লিভ টু আপিলের শুনানিকে কেন্দ্র করে গতকাল সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা। সকাল থেকে প্রধান ফটকসহ আদালত ভবনে প্রবেশের প্রতিটি ফটকে মোতায়েন করা হয় অতিরিক্ত পুলিশ। পরিচয়পত্র যাচাই করে আদালত প্রাঙ্গণে প্রবেশের অনুমতি দেয়া হয় আইনজীবী, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন ব্যক্তিকে। ফলে বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত বিচারপ্রার্থী অনেকেই সময়মত আদালত প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে পারেননি।

বুধবার আপিল বিভাগ খালেদা জিয়াকে দেয়া হাইকোর্টের জামিন রোববার পর্যন্ত স্থগিত করে দেয়। পাশাপাশি দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষকে লিভ টু আপিল দায়েরের নির্দেশ দিয়ে শুনানির দিন ধার্য করে দেয়। পাশাপাশি স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের জন্যও খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে একটি আবেদন করা হয়। সেই মোতাবেক তিনটি আবেদনের ওপর গতকাল শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।

শুনানিতে দুদক কৌঁসুলি খুরশীদ আলম খান বলেন, সাজার মেয়াদ, জামিনের অপব্যবহার না করা, বয়স ও শারীরিক অসুস্থতা এবং পেপারবুক প্রস্তুতের বিষয় বিবেচনায় নিয়ে খালেদা জিয়াকে হাইকোর্ট জামিন দিয়েছে। কিন্তু মাদকদ্রব্য আইনের একটি মামলায় ইতঃপূর্বে আপিল বিভাগ দুই বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত এক ব্যক্তিকে জামিন দেয়নি। এই যুক্তি দেয়ার পরেও হাইকোর্ট খালেদা জিয়াকে জামিন দিয়েছে। এটা ঠিক হয়নি।

রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার বিচারকে নস্যাত করতে সকল পন্থাই আসামিপক্ষ গ্রহণ করেছেন। যার কারণে ২০০৯ সালের মামলা চলতি বছরে এসে বিচার শেষ হয়েছে। তিনি বলেন, আপিল শুনানির পূর্বেই যদি নিম্ন আদালতের সাজা আসামি ভোগ করে ফেলার সম্ভাবনা থাকে তখনই জামিনের বিষয়টি বিবেচনা করা হয়ে থাকে। কিন্তু হাইকোর্ট খালেদা জিয়াকে যে বিবেচনায় জামিন দিয়েছে তা সঠিক হয়নি। অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, হাইকোর্ট ৪ মাসের মধ্যে এই মামলার পেপারবুক প্রস্তুত করতে বলেছে। আপনারা (আপিল বিভাগ) এটা দুই মাস নির্ধারণ করে দিন। আর এখনই যদি তাকে জামিন দেয়া হয় তাহলে আপিল শুনানি অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।

খালেদা জিয়ার আইনজীবী এজে মোহাম্মদ আলী বলেন, হাইকোর্ট কয়েকটি বিষয় বিবেচনায় নিয়ে আপিলকারীকে জামিন দিয়েছেন। এতে আপিল বিভাগের হস্তক্ষেপ করা ঠিক হবে না। তবে যেসব মামলায় জামিন দেওয়ার ক্ষেত্রে হাইকোর্ট যুক্তি তুলে ধরেনি সেক্ষেত্রে আপিল বিভাগ হস্তক্ষেপ করেছেন। তিনি বলেন, বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য মশিউর রহমানকে দুদকের মামলায় ১০ বছরের সাজা দিয়েছে নিম্ন আদালত। সম্প্রতি হাইকোর্ট তাকে ওই মামলায় জামিন দিয়েছেন। আপিল বিভাগ তা বহাল রেখেছেন।

শুনানিকালে খালেদা জিয়ার পক্ষে আইনজীবী মওদুদ আহমদ, জয়নুল আবেদীন, মাহবুবউদ্দিন খোকন প্রমুখ আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন।