বারোর ফাইনালকেও ছাপিয়ে গেলো আঠারোর কান্না!

মাথাভাঙ্গা মনিটর: কে কাকে সান্ত্বনা দেবেন! তাসকিন-আবু হায়দাররা সাইডলাইনে দাঁড়িয়ে চোখ মুছছেন! কে পেতে দেবে বুক, বাড়িয়ে দেবে সান্ত্বনার কাঁধ? ঠিক যেন ফিরে এল ২০১২ সালের এশিয়া কাপের ফাইনাল। সাকিব কাঁদছেন। নাসির কাঁদছেন। কাঁদছিলো আসলে সারা দেশ। প্রবাসীরাও। এবারও কাঁদতে তৈরি ছিলো বাংলাদেশ। অশ্রু তো আনন্দেরও হয়। কিন্তু শেষ বলে ৫ রান দরকার এমন সমীকরণ মিলিয়ে দিলেন দীনেশ কার্তিক! যাকে নামানো হয়েছিলো বিজয় শঙ্করেরও পরে। সেই কার্তিক যেন তির ছুড়লেন একের পর এক! এবং জিততে জিততে আরও একটি ফাইনালে হেরে যাওয়ার জ্বালায় পুড়লো বাংলাদেশ।

দ্বিপাক্ষিক সিরিজ অনেকবারই জিতেছে বাংলাদেশ। কিন্তু একের বেশি দল খেলেছে এমন টুর্নামেন্টগুলো এখনো একটিও জেতেনি। এই কথা ইদানিং এতো এতো আলোচনা হয়েছে, অনেকে কান পচে যাওয়ার জোগাড়! কিন্তু এর থেকে মুক্তি মিলতে যা করার দরকার, সেই যে করতে পারছে না বাংলাদেশ। বারবার এতো কাছে এসেও এত দূরের মনে হচ্ছে অধরা সাফল্যটি। আজ নিদাহাস ট্রফির ফাইনালে বাংলাদেশ হারলো শেষ বলের ছক্কায়!

এ নিয়ে বাংলাদেশ ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টির ৫টি টুর্নামেন্টের ফাইনালে উঠলো। প্রতিবারই ফাইনালে আশার গান শুনিয়েও হতাশায় মুড়ে যাওয়ার গল্প লিখতে হয়েছে। ২০০৯ সালে ঢাকায় ত্রিদেশীয় ওয়ানডে সিরিজের ফাইনালে বাংলাদেশ হেরেছে ২ উইকেটে। সেবার ৬ রানে শ্রীলঙ্কার ৫ উইকেট ফেলে দিয়েছিলো বাংলাদেশ। সেবারও রুবেলের এক ওভার এলেমেলো করে দিয়েছিলো সব। মুত্তিয়া মুরালিধরন নামের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ব্যাটিং দিয়ে অনেক হাস্যরসের জন্ম দেয়া স্পিন কিংবদন্তি হয়ে গিয়েছিলো যেন জয়াসুরিয়া!

এরপর ২০১২ সালের এশিয়া কাপের ফাইনালে মিরপুরের সেই মাঠেই ২ রানে হার। প্রতিপক্ষ ছিলো পাকিস্তান। টুর্নামেন্টটা এশিয়া কাপ ছিলো বলে দুঃখটা ছিলো আরও বেশি। ২০১৬ এশিয়া কাপের ফাইনালেও সুযোগ এসেছিলো সেই দুঃখ মোছার। এবার টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে অবশ্য। কিন্তু এবার ভারত স্রেফ উড়িয়ে দিয়েছিলো বাংলাদেশকে। জিতেছিল ৮ উইকেটে।

২০১৮ সাল শুরুর পর ওয়ানডে সিরিজটা খুব বেশি দিন পুরোনো গল্প নয়। ত্রিদেশীয় সিরিজে বাংলাদেশের শুরুটা হয়েছিলো দুর্দান্ত। কিন্তু সাকিবকে হারিয়ে ফেলা বাংলাদেশ পথও হারিয়ে ফেলতে শুরু করে টুর্নামেন্টের মাঝপথে। শেষে ফাইনাল হারে ৭৯ রানে। এবারের ফাইনালটির দুঃখ কি এশিয়া কাপের চেয়ে বেশি? মর্যাদায় অবশ্যই এশিয়া কাপ অনেক এগিয়ে। কিন্তু এবার বাংলাদেশ যেভাবে হারলো, সেটার হতাশা ২০১২-র ফাইনালের সঙ্গে মিলে যায় অনেকভাবেই। দুঃখ যদি বেশি নাও হয়!