এক জেলায় তিন প্রেসিডেন্টপুত্রের মনোনয়নপত্র দাখিল

স্টাফ রিপোর্টার: দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য কিশোরগঞ্জে তিন প্রেসিডেন্টপুত্র মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। গতকাল মুক্তিযুদ্ধকালীন বাংলাদেশ সরকারের প্রথম অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলামের পুত্র আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এলজিআরডি মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এমপি, প্রয়াত প্রেসিডেন্ট মো. জিল্লুর রহমানের পুত্র বিসিবি প্রেসিডেন্ট নাজমুল হাসান পাপন এমপি এবং প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদের পুত্র রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক এমপি’র মনোনয়নপত্র দাখিল করা হয়েছে। তাদের মধ্যে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম কিশোরগঞ্জ-১ (সদর-হোসেনপুর), নাজমুল হাসান পাপন কিশোরগঞ্জ-৬ (ভৈরব-কুলিয়ারচর) এবং রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক কিশোরগঞ্জ-৪ (ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম) আসন থেকে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। তবে তিন প্রেসিডেন্টপুত্রের মধ্যে কেউই সশরীরে মনোনয়নপত্র দাখিল করেননি। মনোনয়নপত্র দাখিল উপলক্ষে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম কিশোরগঞ্জে এলেও জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সংলগ্ন জেলা আইনজীবী সমিতি ভবনে নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে অবস্থান করেন। রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে দুপুরে জেলা প্রশাসক এসএম আলমের কাছে তার পক্ষে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মনোনয়নপত্রের প্রস্তাবক অ্যাড. আতাউর রহমান মনোনয়নপত্র জমা দেন। এর আগে রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিকের পক্ষে জেলা পরিষদের প্রশাসক অ্যাড. মো. জিল্লুর রহমান রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। এছাড়া নাজমুল হাসান পাপনের পক্ষে ভৈরব উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব সায়েদুল্লাহ মিয়া ভৈরবের সহকারী রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেন। জেলায় এ তিন প্রেসিডেন্টপুত্রের মনোনয়নপত্র দাখিলই ছিলো গতকাল সোমবার কিশোরগঞ্জে মনোনয়নপত্র দাখিলের ক্ষেত্রে সবচেয়ে আলোচিত বিষয়।

অন্যদিকে কিশোরগঞ্জ-৩ (করিমগঞ্জ-তাড়াইল) আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী বর্তমান মন্ত্রিসভার যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নুর পক্ষেও গতকাল সোমবার করিমগঞ্জ এবং তাড়াইলের সহকারী রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে পৃথক মনোনয়নপত্র জমা দেন দলীয় নেতাকর্মীরা। তবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহের মাধ্যমে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণের ঘোষণা দিয়েও শেষ পর্যন্ত মনোনয়নপত্র দাখিল করেননি আলোচিত বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান রঞ্জন। সব মিলিয়ে জেলার ৬টি আসনে গত দু দিনে মোট ১৯ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। এর মধ্যে কিশোরগঞ্জ-৪ (ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম) আসনে একমাত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন প্রেসিডেন্টপুত্র রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক। বাকি ৫টি আসনের মধ্যে কিশোরগঞ্জ-১ (সদর-হোসেনপুর) আসনে ২ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। তারা হলেন, আওয়ামী লীগ প্রার্থী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ও জাতীয় পার্টির প্রার্থী মোস্তাইন বিল্লাহ। কিশোরগঞ্জ-২ (কটিয়াদী-পাকুন্দিয়া) আসনে আওয়ামী লীগের ২ জনসহ মোট ৫ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। তারা হলেন, এডভোকেট মো. সোহরাব উদ্দিন (আওয়ামী লীগ-ঘোষিত প্রার্থী), আলহাজ এমএ মান্নান (আওয়ামী লীগ), বদরুল আমিন বাচ্চু (জাতীয় পার্টি), সোহরাব উদ্দিন আহাম্মেদ (বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশন) এবং সাবেক সংসদ সদস্য আনিসুজ্জামান খোকন (স্বতন্ত্র)। কিশোরগঞ্জ-৩ (করিমগঞ্জ-তাড়াইল) আসনে মোট ৩ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। তাদের মধ্যে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু জাতীয় পার্টি, নাসিরুল ইসলাম খান আওলাদ আওয়ামী লীগ এবং আওয়ামী লীগ থেকে সদ্য পদত্যাগী সাবেক সংসদ সদস্য ড. মিজানুল হক স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। কিশোরগঞ্জ-৫ (বাজিতপুর-নিকলী) আসনে মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে ৫টি। মনোনয়নপত্র জমাদানকারীরা হচ্ছেন, সংসদ সদস্য মো. আফজাল হোসেন (আওয়ামী লীগ), এস এম দ্বীন ইসলাম (জাতীয় পার্টি) খায়রুল আহসান (বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশ), ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অজয় কর খোকন (স্বতন্ত্র) এবং জাতীয় পার্টির সাবেক নেতা ডা. আশরাফ আলী মোল্লা (স্বতন্ত্র)। এছাড়া কিশোরগঞ্জ-৬ (ভৈরব-কুলিয়ারচর) আসনে ৩ জন মনোনয়নপত্র দাখিলকারী হচ্ছেন, সংসদ সদস্য নাজমুল হাসান পাপন (আওয়ামী লীগ), মো. রিয়াজুল হক খান (জাতীয় পার্টি) এবং ভৈরব পৌরসভার সাবেক মেয়র ফখরুল আলম আক্কাস (স্বতন্ত্র)।