হিসাববিজ্ঞানের ছাত্রের চলার পথে বেহিসেব

 

সকল প্রতিকূলতাকে পরাস্ত করে লক্ষ্যের খুব কাছে পৌঁছে করুণ পরাজয় বরণ করতে হলো আরিফকে। হিসাববিজ্ঞান নিয়ে সম্মান শেষবর্ষ পেরিয়ে যখন জীবনের সুনিপূণ হিসেবে বসবে ঠিক তখনই টের পেলো বেহিসেবি চলনে তথা অসতর্কতায় কতোটা সর্বনাশ হয়ে গেছে তার।

‘বাঁচতে হলে জানতে হবে’ বিজ্ঞাপনের গুরুত্ব চুয়াডাঙ্গা গাড়াবাড়িয়ার হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান আরিফুল ইসলাম আরিফ কি উপলব্ধি করেনি? নাকি অজ্ঞাতবসেই বাসা বেঁধেছে মারণব্যাধি এইডস? না, এ রোগ ছোঁয়াচে নয়। নিরাপত্তা পদ্ধতি অবলম্বন ছাড়াই দৈহিক মিলনে, প্রয়োজনীয় পরীক্ষা না করেই আক্রান্ত ব্যক্তির রক্ত গ্রহণ বা তার ব্যবহৃত সুচ-ব্লেড, চুম্বনের মাধ্যমে আক্রান্তের প্রচুর লালা চুষে নেয়ার মাধ্যমে মূলত ওই ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করে। আরিফের শরীরে কবে কখন কীভাবে ওই ভাইরাস ঢুকেছে তা অবশ্য নিশ্চিত করে জানা সম্ভব হয়নি। তার আগেই করুণ মৃত্যু হয়েছে তার। গতকাল দৈনিক মাথাভাঙ্গা পত্রিকায় এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। তাতে তার প্রেমিকের বিয়ে এবং ভাগ্যিস বাসর না হওয়ার প্রসঙ্গটিও গুরুত্ব পেয়েছে।

আরিফুল ইসলাম আরিফ এমন এক পরিবারের সন্তান, সেই পরিবারের সকলেই তাকে নিয়ে সচ্ছ্বলতার স্বপ্নে বিভোর ছিলো। ৭ ভাই বোনের মধ্যে আরিফকেই কেবল লেখাপড়া শেখাতে পেরেছেন তার পিতা-মাতা। আরিফও অভাবের সাথে যুদ্ধ করতে গৃহশিক্ষকতা করেছে। চেহারায় সুপুরুষ আরিফ যখন গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তখন তার প্রেমিকা সেবা যত্নের প্রত্যয়ে বিয়ে করেছে। সুস্থ করে তোলার স্বপ্ন ছিলো তার দু চোখ জুড়ে। না, সেই স্বপ্ন যেমন মাঠে মারা গেছে, তেমনই আরিফের পিতা-মাতাসহ পরিবারের সকলে ডুবেছে হাতাশার অন্ধকারে। এমন এক রোগে আক্রান্ত হয়ে আরিফকে অকালে চলে যেতে হলো, যে রোগকে সমাজের মানুষ ভালো চোখে দেখে না। আরিফের এ রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর সচেতন মহলের শঙ্কা- ওই মারণব্যাধি কতোজনকেই না গ্রাস করেছে, করছে।

এইচআইভি এমন এক ভাইরাস, যা শরীরে ঢুকলে রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা দ্রুত হ্রাস করে। কোনো ওষুধেই সুস্থতা মেলে না। ফলে কীভাবে চললে ওই রোগ শরীরে বাসা বাঁধবে না তা জানতে হবে। বিশেষ মুহূর্তে সামান্য অসতর্কতা জীবনযুদ্ধে হতে পারে করুণ পরাজয়ের কারণ।

Leave a comment