মাথাভাঙ্গায় প্রতিবেদন প্রকাশের পর চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগ
স্টাফ রিপোর্টার: আলমডাঙ্গার খাটো দুই নারী রূপা ও মিম সরকারিভাবে স্বীকৃতি পেতে যাচ্ছেন। মাথাভাঙ্গায় খবর প্রকাশের পর উপজেলা ও জেলা প্রশাসন এ ব্যাপারে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। একই সাথে দুই বোনের জন্য প্রয়োজনীয় সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন তারা। শিগগিরই রূপা ও মিমের জন্য গঠন করা হবে মেডিকেল টিম। মাপা হবে উচ্চতা। এরপরই দুই বোনকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরা হবে বলে উপজেলা প্রশাসন থেকে বলা হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার বাড়াদী ইউনিয়নের একটি গ্রাম আঠারখাদা। ওই গ্রামের ক্ষুদ্র কৃষক আবদুর রশিদের দুই মেয়ে রূপা ও মিম খাটো মানুষ। রূপার বয়স ২৬ বছর, আর মিমের ১৭। গ্রামের সচেতন ব্যক্তিদের দাবি, ওরা পৃথিবীর সবচেয়ে খাটো সহোদর, বিশ্বের সবচেয়ে খর্বকায় নারী। রূপার উচ্চতা ৩৪ ইঞ্চি, আর মিমের ৩৩। বয়সে তারা যুবতী হলেও স্বভাব-আচরণে শিশু। দিনভর পাড়ার শিশুদের সাথে খেলাধুলা করেই তাদের সময় কাটে। রাতে ঘুমায় মায়ের গলা ধরে। বাবার কোলে-পিঠে চড়ে ঘোরে এ বাড়ি ও বাড়ি। এলাকার সবাই তাদেরকে পুতুল মেয়ে বলেই জানে। এ কারণে ওদের বাড়ির নাম পড়েছে পুতুল বাড়ি। পুতুল বাড়ির পুতুল মেয়ে রূপা আর মিম কথা বলে তোতা পাখির মতো ছোট ছোট করে। শুনে মনে হয় কোনো যন্ত্র থেকে যেন মিষ্টি মিষ্টি কথাগুলো বেরিয়ে আসছে। দূর-দূরান্ত থেকে তাদেরকে অনেকেই দেখতে আসে। গ্রামবাসীর দাবি, পৃথিবীর সবচেয়ে খাটো নারী হিসেবে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ডে দু’বোনের নাম ঠাঁই পাক। এ বিষয়ে গত ২৭ আগস্ট দৈনিক মাথাভাঙ্গায় বিস্তর সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। উপজেলা নির্বাহী অফিসার আজাদ জাহান সরেজমিনে রূপা ও মিমকে দেখতে যান। তাদেরকে আদর করেন। সোমবার দুপুরে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি টিম যায় রূপা ও মিমের বাড়িতে। ওই টিমে ছিলেন জেলা প্রশাসক সায়মা ইউনুস, সিভিল সার্জন ডা. সিদ্দিকুর রহমান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার আজাদ জাহান, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইফুল ইসলাম ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান তবারক হোসেন। ইউএনও আজাদ জাহান বলেন, ‘রূপা ও মিমের ব্যাপারে জেলা প্রশাসন বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ইতোমধ্যে রূপার নামে প্রতিবন্ধী ভাতা চালু করে দেয়া হয়েছে। মিমের নামেও দেয়ার চেষ্টা চলছে। তাছাড়া তারা শারীরিকভাবে স্বাভাবিক নারী হতে পারে কি-না সে ব্যাপারে সিভিল সার্জনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের মেডিকেল টিম গঠনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ ছাড়া জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে রূপা ও মিমের উচ্চতা মেপে তাদেরকে সরকারিভাবে বিশ্বের খাটো নারী বা সবচেয়ে খর্বকায় সহোদরের স্বীকৃতি দেয়ার ব্যাপারে আলোচনা চলছে। শিগগিরই উদ্যোগগুলো বাস্তবায়ন করা হবে।’