গাংনীতে এ মরসুমে তুলাচাষে ব্যাপক সাড়া

গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুর গাংনী উপজেলায় চলতি মরসুমে তুলাচাষে ব্যাপক সাড়া দিয়েছেন চাষিরা। গত বছর ভালো ফলন ও কাঙ্ক্ষিত দাম পাওয়ায় এবার তুলা চাষে আগ্রহ বেড়েছে। সবজি ও ধানসহ বিভিন্ন ফসল আবাদে মাঝে মাঝে লোকসান হলেও তুলা চাষে ভিন্ন চিত্র। তাই চলতি মরসুমে এ উপজেলায় উল্লেখ্যযোগ্য পরিমাণ জমিতে তুলা আবাদ আশা করছেন তুলা উন্নয়ন বোর্ড কর্মকর্তারা।

ভৌগলিক অবস্থান ও অনুকুল আবহাওয়ার কারণে মেহেরপুর জেলায় প্রায় সব ধরণের ফসল চাষ হয়। সবজি ও ফল উৎপাদনে ইতোমধ্যে সারাদেশেই পরিচিতি পেয়েছেন এ জেলার চাষিরা। তবে ধান ও সবজিতে প্রতি মরসুমে লাভ না হওয়ায় চাষিরা ক্ষতির শিকার হচ্ছেন। আর তাইতো বিকল্প আবাদ খুঁজতে গিয়ে অনেকেই এখন তুলাচাষ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন। এসব সফল চাষিদের দেখাদেখি প্রতিবেশী ও জমির পার্শ্ববর্তী চাষিরা এখন তুলাচাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। গত বছর ভালো ফলন ও কাঙ্ক্ষিত দর পেয়ে তুলা চাষিরা বেশ লাভবান হয়েছিলেন। আর তাইতো এবার তারা কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছেন তুলা চাষে।

তুলা চাষের খোঁজ নিতে গিয়ে জানা গেছে, বাংলা সনের শ্রাবন মাস জুড়ে তুলা বীজ বপণের উত্তম সময়। মাঘ-ফাল্গুন মাসে তুলা সংগ্রহ করা যায়। তবে আষাঢ় মাসের মাঝামাঝি থেকেই অনেক চাষি বীজ বপণ শুরু করেছেন। তুলা উত্তোলন করে পরবর্তী ফসল হিসেবে ধান, পাট ও মুগসহ বিভিন্ন ফসল অনায়াসে চাষ করা সম্ভব। ধান ও পাট কর্তন করে আবারো পরবর্তী মরসুমে তুলারচাষ করা যায়। এছাড়াও তুলার মধ্যে সাথি ফসল হিসেবে বিভিন্ন ফসল আবাদের সুযোগ রয়েছে। এতে তুলার তেমন কোন ক্ষতি হয়না। ফলে সাথি ফসল থেকে বাড়তি আয় পাওয়া যায়। তুলা চাষে চাষিদের আর্থিক লাভের বিষয়টি বিবেচনা করে তুলা উন্নয়ন বোর্ড কোম্পানির মাধ্যমে বিদেশ থেকে উচ্চ ফলনশীল জাতের বীজ আমদানি করেছে। ফলে বীজ ও ফলন নিয়ে চাষিদের দুশ্চচিন্ত নেই।

গাংনীর কয়েকজন তুলা চাষি জানান, মাঠ পর্যায়ে কর্মকর্তাদের সাথে চাষিদের নিবিড় যোগাযোগ, নিয়মিত আনাগোনা ও চাষের প্রয়োজনীয় পরামর্শ পাওয়া যাচ্ছে। ক্ষেতে বীজ বপণের পর থেকে গাছের পরিচর্যা, তুলার বল আসলে করণীয়সহ ফসলের প্রয়োজনীয় প্রতিরোধ ও প্রতিকার ব্যবস্থা করে থাকেন মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা। এতে একজন অনভিজ্ঞ তুলা চাষিও সহজেই তুলা চাষ করতে পারছেন। এ কারণে গত কয়েক বছরের চেয়ে এবারে তুলা চাষে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। অন্যান্য ফসল চাষের পাশাপাশি এ অঞ্চলের চাষিরা তুলা চাষ করে অর্থনৈতিকভাবে সম্মৃদ্ধ হচ্ছেন বলে জানান তুলা চাষিরা।

গত বছর বিঘায় ১৪-১৬ মণ পর্যন্ত ফলন হয়েছিলো। প্রতি মণ তুলা বিক্রি হয়েছিলো ২ হাজার ১০ হাজার টাকা। চাষিদের কাছে দেয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী তুলা ক্রয় করে তুলা উন্নয়ন বোর্ড। এতে তুলা বিক্রি ও দর নিয়ে চাষিদের চিন্তার কোনো কারণ নেই। অন্যান্য ফসল তোলার পর দর ও বিক্রি নিয়ে ঝামেলা থাকলেও তুলার ক্ষেত্রে তার ভিন্ন চিত্র। বিক্রির নিশ্চয়তার কারণেও চাষিরা তুলা চাষের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি হচ্ছে এ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার চাষিদের।

 

 

Leave a comment