ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে সরকারি নির্দেশ বিরুদ্ধে রিকশা-ভ্যান চালকদের বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ

 

কালীগঞ্জ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের স্থানীয় প্রশাসন রিকশা-ভ্যান থেকে মোটর খুলে নেয়া সরকারি নির্দেশ দেয়ার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে রিকশা-ভ্যান শ্রমিকরা। গতকাল বুধবার দুপুরে উপজেলার শ শ রিকশা-ভ্যান চালকরা একত্রিত হয়ে শহরে এক বিশাল বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে পৌর সভার সামনে এসে এক প্রতিবাদ সমাবেশ করে।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা রিকশা-ভ্যানচালক ইউনিয়নের সভাপতি তাহের আলী, ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা শ্রমিক ঐক্য পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক গাজী আব্দুর রাজ্জাক, শ্রমিক নেতা কালাচান বিশ্বাস, শরিফুল ইসলাম, হাসেম আলী, খোকন দাস, আজিজুল ইসলাম প্রমুখ। এ সময় পৌর মেয়র আলহাজ মকছেদ আলী ও প্যানেল মেয়র আশরাফুল আলম আশরাফ শ্রমিকদের কথা শুনে এবং বিষয়টির খোঁজখবর নিয়ে দেখবেন বলে তাদের আশ্বাস্ত করেন।

উপজেলা রিকশা-ভ্যানচালক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ও শ্রমিক ঐক্য পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক গাজী আব্দুর রাজ্জাক জানান, কালীগঞ্জ উপজেলায় প্রায় ২৫শ’র মতো মোটর চালিত রিকশা-ভ্যান রয়েছে। এসব হত দরিদ্র মানুষ এনজিও থেকে ও জমিজমা বিক্রি করে মোটর চালিত রিকশা-ভ্যানে ভাড়া মেরে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করছে। তাছাড়া তারা পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদে সরকারি রাজস্ব দিচ্ছে। পৌর ও ইউনিয়ন পরিষদ থেকে এসব রিকশা-ভ্যানের রেজিস্ট্রেশন, লাইসেন্স ও ব্লু বুকও দেয়া হয়েছে। কিন্তু সরকারি এ কঠোর নির্দেশনায় খেটে খাওয়া হতদরিদ্র মানুষদের পথে বসানোর চমর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আমরা এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাচ্ছি। পাশাপাশি এসব গরিব-মেহনতী মানুষ যাতে মোটর চালিত রিকশা-ভ্যান চালিয়ে জীবন জীবিকা নির্বাহ করতে পারে তার জন্য সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছি।

কালীগঞ্জ পৌরসভার সহকারী লাইসেন্স পরিদর্শক আব্দুল কাদের জানান, আমরা ইজিবাইক প্রতি ১১শ এবং রিকশা-ভ্যান প্রতি সাড়ে ৫শ টাকা করে নিয়ে তাদের লাইসেন্স ও ব্লু বুক দিয়ে থাকি। তিনি আরও জানান, রিকশা-ভ্যান হিসেবে লাইসেন্স দেয়া হয়। মোটরচালিত যানবাহন হিসেবে এসব লাইসেন্স আমরা দিই না।

পৌর মেয়র আলহাজ মকছেদ আলী বিশ্বাস জানান, শ্রমিকরা রিকশা-ভ্যানে মোটর লাগিয়ে চালাচ্ছে। এটা সরকার নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। এ ঘটনায় তারা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে পৌর সভার সামনে হাজির হয়। সে সময় তাদের সাথে কথাও হয়েছে। যেহেতু সরকারি বিষয়, সেহেতু আমরা কিছুই করতে পারবো না বলে তাদের জানিয়ে দিয়েছি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মানোয়ার হোসেন মোল্লা জানান, মানুষের নিরাপত্তার স্বার্থে সরকার রিকশা-ভ্যান থেকে মোটর খুলে ফেলার নির্দেশ দিয়েছে। ২০ জুলাই থেকে এ ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখার জন্য শহরে মাইকিং করা হয়েছে। এছাড়া যত প্রকার পদক্ষেপ আছে তা আমরা নেবো। কেউ আইন অমান্য করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Leave a comment