শোক পালন করছে দেশ

 

স্টাফ রিপোর্টার: গুলশান ২ নম্বরের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় সন্ত্রাসী হামলায় নিহতদের স্মরণে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রেখে রাষ্ট্রীয় শোক পালন করছে বাংলাদেশ। দুই দিনের রাষ্ট্রীয় শোকের প্রথম দিন গতকাল রোববার সকাল থেকেই রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ভবন ও অফিসে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়েছে। বিদেশে বাংলাদেশ মিশনেও জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রেখে শোক পালন করা হচ্ছে। একই সাথে দেশবাসী কালো ব্যাজ ধারণ করে রাষ্ট্রীয় শোকে শামিল হচ্ছেন। এছাড়া দেশের মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডায় বিশেষ প্রার্থনা সভার আয়োজন করা হয়।

এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লশানে সন্ত্রাসী হামলায় নিহতদের কফিনে আজ সোমবার শ্রদ্ধা জানাবেন। সকাল ১০টায় ঢাকার আর্মি স্টেডিয়ামে শ্রদ্ধা নিবেদনের এই আনুষ্ঠানিকতা হবে। প্রথমে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পরে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী হিসেবে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে নিয়ে নিহতদের কফিনে শ্রদ্ধা জানাবেন শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে দুপুর ১২টা পর্যন্ত সর্বস্তরের জনগণ শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার রাত পৌনে ৮টায় জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে হোটেল হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় সন্ত্রাসী হামলায় নিহতদের স্মরণে ৩-৪ জুলাই দুইদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেন। পরে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ রবি ও সোমবার শোক পালনের বিষয়ে আদেশ জারি করে। এতে বলা হয়, ‘আর্টিজান বেকারিতে একদল সন্ত্রাসীর হাতে নৃশংসভাবে শাহাদাত্ বরণকারী দুইজন পুলিশ কর্মকর্তা এবং সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত নিরীহ দেশি-বিদেশি ব্যক্তিদের আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের উদ্দেশে ৩ ও ৪ জুলাই রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে শোক পালিত হবে।’

গত শুক্রবার রাতে গুলশান ২ নম্বরের হলি আর্টিজান রেঁস্তোরায় হামলা চালায় একদল অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী। এতে দেশি বিদেশি অন্তত ৩৩ জন সেখানে জিম্মি হন। প্রায় ১২ ঘণ্টা পর কমান্ডো অভিযান চালিয়ে ওই রেস্তোরাঁর নিয়ন্ত্রণ নেয় যৌথবাহিনী। ১৩ জন জিম্মিকে জীবিত উদ্ধার করা হলেও ২০ জনের লাশ পাওয়া যায় জবাই করা অবস্থায়। নিহতদের মধ্যে নয়জন ইতালির, সাতজন জাপানি ও একজন ভারতের নাগরিক। বাকি তিনজন বাংলাদেশি, যাদের মধ্যে একজনের যুক্তরাষ্ট্রেরও নাগরিকত্ব ছিলো। নিহত সাত জাপানির মধ্যে ছয়জন মেট্রোরেল প্রকল্পের সমীক্ষা কাজে নিয়োজিত ছিলেন। তাদের সাথে ওই ক্যাফেতে ছিলেন আরও একজন, যাকে পরে উদ্ধার করা হয়। এর আগে রাতে রেস্তোরাঁয় হামলার পরপরই সেখানে আটকে পড়াদের উদ্ধারে গিয়ে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সহকারী কমিশনার রবিউল ইসলাম ও বনানী থানার ওসি সালাউদ্দীন হামলাকারীদের বোমার স্প্লিন্টারে নিহত হন। বাংলাদেশে নজিরবিহীন এই হামলার হতাহতের ঘটনায় ফেইসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতেও নানাভাবে আসছে শোকের প্রকাশ। অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রোফাইল ও কাভার ছবি হিসেবে কালো ব্যাজ দিয়েছেন। কেউবা স্ট্যাটাস বা নোট লিখে শোকের কথা জানিয়েছেন। এদিকে নিহতদের স্মরণে আজ সোমবারও সারাদেশে মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডায় বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হবে।

Leave a comment