গুলশানে দুষ্কৃতীকারীদের নির্মম রক্তাক্ত অভ্যুত্থান হয়েছে

 

স্টাফ রিপোর্টার: গত শুক্রবার রাতে রাজধানীর গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় বন্দুকধারীদের হামলাকে দুষ্কৃতীকারীদের নির্মম রক্তাক্ত অভ্যুত্থান বলে অভিহিত করেছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। এ ঘটনায় সারাদেশসহ কূটনীতিকদের নিরাপত্তা বিধানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান তিনি। খালেদা জিয়ার এ আহ্বান সম্বলিত বিবৃতি শনিবার সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

গুলশানে দুষ্কৃতীকারীদের হামলায় প্রাণনাশের তীব্র নিন্দা ও ধিক্কার জানান খালেদা জিয়া। এতে নিহত আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের ভাই সম্বোধন করে তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা ও আহতদের আশু সুস্থতা কামনা করেন তিনি।

খালেদা জিয়া বলেন, অগণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার ফলে সৃষ্ট অগণতান্ত্রিক রাজনৈতিক ব্যবস্থা পৈশাচিক স্বৈরতন্ত্রে অধঃপতিত হয়েছে। যার বিকৃত প্রতিক্রিয়ায় দেশের আনাচে-কানাচে উগ্রবাদ বাসা বেঁধেছে। শুক্রবার রাতের দুষ্কৃতীকারীদের নির্মম রক্তাক্ত অভ্যুত্থান দেশে বিরাজমান দুঃশাসনেরই বহিঃপ্রকাশ।

তিনি বলেন, আমরা বারবার উগ্রবাদীদের অমানবিক রক্তঝরা অশুভ পরিকল্পনা মোকাবেলা করার জন্য দলমত নির্বিশেষে পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছিলাম। কিন্তু সরকার আমাদের সেই আহ্বানকে উপেক্ষা করে বরং বিএনপিসহ বিরোধী দলের প্রতি বিষোদগারেই ব্যস্ত থেকেছে। প্রকৃত জঙ্গি দমনে কোনো ধরনের ইতিবাচক তৎপরতা দেখানো তো দূরে থাক, বরং বিএনপিকে অভিযুক্ত করতে ব্লেমগেম খেলতে গিয়ে সরকার জঙ্গিদের স্বাস্থ্যবর্ধন করেছে।

বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, কিছুদিন আগে জঙ্গি দমনের নামে অভিযান চালিয়েছে বিএনপির বিরুদ্ধে এবং গণতান্ত্রিক শক্তিকে ধ্বংস করতে। সরকার প্রধান ও সরকারের লোকজন জঙ্গিবাদ দমনের নামে বেআইনি বিচারবহির্ভূত হত্যাকে জায়েজ করে বক্তব্য রেখে যাচ্ছেন।

তিনি বলেন, এতকিছুর পরও জঙ্গিদের বিবেকবর্জিত অপতৎপরতা থামাতে পারেনি সরকার। গত শুক্রবার ঝিনাইদহে শ্যামানন্দ দাস নামে একজন সেবায়েতকে কুপিয়ে খুন করেছে জঙ্গিরা। তাকে খুন এবং রাতে গুলশানের রোমহর্ষক মানুষ জিম্মি ঘটনায় প্রমাণিত হল-সরকারের সপ্তাহব্যাপী ক্র্যাকডাউনের উদ্দেশ্য ছিলো বিএনপি দমন, জঙ্গিবাদ দমন নয়।

উগ্রবাদী শক্তিকে নির্মূল করতে দলমত নির্বিশেষে সকলের সমন্বিত প্রচেষ্টাকে কাজে লাগাতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান খালেদা জিয়া। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন, ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় এখনই এই উগ্রবাদী শক্তিকে দমন করতে না পারলে এরা দীর্ঘতম যুদ্ধ চালিয়ে দেশের নিরাপত্তা বজায় রাখা কঠিন করে তুলবে। সহিংস ঘটনায় জড়িত প্রকৃত দুষ্কৃতীকারীদের শাস্তি দ্রুত সময়ের মধ্যে কার্যকর হবে এবং এদের নেটওয়ার্ক খুঁজে বের করে তা নির্মূল করতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো সক্ষম হবে বলেও বিবৃতিতে আশাবাদ ব্যক্ত করেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।