জমি দখল করে দোকান দেয়ার খুঁটি পুতে মারমারি : স্কুলশিক্ষকসহ আহত ৯

 

স্টাফ রিপোর্টার: এক সময়ের ঐতিহ্যবাহী ঐতিহাসিক মুন্সিগঞ্জ পশুহাটটি দীর্ঘদিন ধরেই নানাভাবে বেদখল হয়ে যাচ্ছে। দখল নিয়ে মাঝে মাঝেই ঘটছে মারামারি, হুমকিধামকির ঘটনা। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় হাটের জমিতে দোকান দেয়া নিয়ে বিরোধে জড়িয়ে তুমুল সংঘর্ষে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকসহ আহত হয়েছেন উভয়পক্ষের ৯ জন। এদেরকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়া হলে একপক্ষ অপরপক্ষের ওপর হামলে পড়লে পরিস্থিতি বেসামাল হয়ে পড়ে। সদর থানা পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়্ন্ত্রণে আসে। আহতদের মধ্যে তিনজনকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসাধীন রাখা হয়েছে। এরা হলেন- স্কুলশিক্ষক আনছার আলী ও তারপক্ষের আব্দুস সালাম এবং অপরপক্ষের আব্দুল আজিজ। এদের সকলেরই বাড়ি মুন্সিগঞ্জ পশুহাট সংলগ্ন কৃষ্ণপুর গ্রামের বাসিন্দা।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার জেহালা ইউনিয়নের মুন্সিগঞ্জ পশুহাটটি এক সময় এলাকার ঐতিহ্য বহন করতো। বিশাল এই হাট নিয়ে নানা চক্রান্ত আর কালের বিবর্তনে এখন অস্তিত্বই বিপন্নের মুখে। সরকারি পশুহাটের সম্পত্তির অধিকাংশই নানাভাবে দখল হয়ে গেছে। স্থানীয়দের অনেকে এ তথ্য জানিয়ে বলেছেন, ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের স্থানীয় প্রভাবশালীদের সাথে যোগসাজোশ আর ইজারাদার  অর্থলিপ্সুতা রাতারাতি জমি বেদখল হচ্ছে। অথচ প্রশাসনের তরফে তেমন পদক্ষেপ লক্ষ্য করা যায় না। হাটের জমি দখল করে দোকান দেয়া নিয়ে মারমারি দীর্ঘদিন ধরেই লেগে রয়েছে। জমি দখল করে দোকান দেয়ার জন্য প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আনছার আলীও খুঁটি পুঁতেছেন। তা নিয়েই মূলত সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়েছে গতকাল সন্ধ্যায়।

পশুহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আনছার আলী (৪২) পার্শ্ববর্তী কৃষ্ণপুরের মৃত নেকবার মণ্ডলের ছেলে। একই গ্রামের মৃত আইনুদ্দিনের ছেলে আব্দুল আজিজের রয়েছে পশুহাট সংলগ্ন জমি। ওই জমির পাশেই পশুহাটে দোকান দেয়ার জন্য খুঁটি গাড়েন শিক্ষক আনছার আলী। আব্দুল আজিজ আপত্তি তোলেন। তিনি বলেন, আমার জমির সামনে তোমার দোকান দেয়ার অধিকার নেই। আনছার আলী ও তার লোকজনের দাবি তারা সকলকে জনিয়ে দোকান দেয়ার জন্য খুঁটি পুঁতেছে। এ নিয়ে গতকাল সন্ধ্যা মারামারিতে জড়িয়ে আহত হয়েছেন শিক্ষক আনছার আলী, তার ছেলে শুভ, একই গ্রামের রবিউল ইসলামের ছেলে আব্দুস সালাম ও অপরপক্ষের মৃত আইনুদ্দীনের ছেলে আব্দুল আজিজ (৫৫), ছেলে টুটুল, ভাতিজা লেলিন, ভাই রায়হান (৩৫) ও আজিজের বৃদ্ধা মা নেশপাতি নেছা (৭০)। আহতদের চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। জরুরি বিভাগে নেয়ার পর আনছার আলীর ছেলে শুভর ওপর হামলা চালায় অপরপক্ষের লোকজন। পরিস্থিতি ভয়ানক হয়ে উঠলে খবর দেয়া হয় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে। পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। আনছার ও আব্দুস সালাম এবং অপরপক্ষের আব্দুল আজিজকে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। বাকি আহতদের প্রথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়ি ফিরিয়ে নেয়া হয়েছে। উভয়পক্ষই মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

Leave a comment