মাথাভাঙ্গা মনিটর: দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনাল নিশ্চিত করলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ফাইনালে তারা মুখোমুখি হবে অজিদের। ত্রিদেশীয় সিরিজের প্রথম পর্বে ৬ ম্যাচে ক্যারিবিয়ানদের পয়েন্ট ১৩। অন্যদিকে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে ফাইনালে উঠেছে অস্ট্রেলিয়া। এদিকে ক্যারিবীয়ানদের কাছে শেষ ম্যাচে হেরে ১২ পয়েন্ট নিয়ে ছিটকে পড়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ত্রিদেশীয় সিরিজের প্রাথমিক পর্বের শেষ ম্যাচে শুক্রবার দক্ষিণ আফ্রিকাকে ১০০ রানে হারিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ক্যারিবিয়ানদের ২৮৫ রান তাড়ায় প্রোটিয়ারা গুটিয়ে যায় ১৮৫ রানেই। অবশ্য সেমিফাইনালে রূপ নেয়া ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার শুরুটা ছিলো অসাধারণ। গতি আর আগ্রাসনে ক্যারিবিয়ানদের কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন কাগিসো রাবাদা। আন্দ্রে ফ্লেচারকে ফিরিয়ে প্রথম ব্রেক থ্রু এনে দেন ওয়েইন পারনেল। এরপরই রাবাদার বাড়তি বাউন্সে স্লিপে ক্যাচ দেন জনসন চার্লস। পরের বলেই রাবাদার ৯১ মাইলের ইয়র্কারে উপড়ে যায় মারলন স্যামুয়েলসের অফ স্টাম্প। অভিষেক ম্যাচের মতো এদিন আর হ্যাটট্রিক করতে পারেননি রাবাদা। তবে খানিক পর আবারও স্টাম্প উপড়ানোর স্বাদ পান তরুণ ফাস্ট বোলার। দিনেশ রামদিনকে নাড়িয়ে দিয়েছিলেন বাউন্সারে হেলমেটে লাগিয়ে। পরের বলে ৯২ মাইলের গোলায় ভুল শটে বোল্ড রামদিন। ৫ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজ তখন ৪ উইকেটে ২১! কেনসিংটন ওভালের গ্যালারিতে গ্রেট এভারটন উইকসের বিরক্ত চেহারাতেই ফুটে উঠছিলো উত্তরসূরিদের পারফরম্যান্সের প্রতিফলন। শুরুতে নড়বড়ে ছিলেন ব্রাভোও। বেশ কয়েকবার বেঁচে যান আউট হতে হতে। ১১ রানে মর্নে মর্কেলের বাউন্সারে জীবন পান লং লেগে, আপাত সহজ ক্যাচটিকে ছক্কা বানিয়ে দেন পারনেল। জীবন পেয়ে যেন সাহসী হয়ে ওঠেন ব্রাভো। আরেকপাশে কাইরন পোলার্ডও জমে যান। খানিক বৃষ্টি বিরতির পর বদলে যায় খেলার চেহারা। দুজনই খেলতে থাকে দারুণ সব শট। ছন্দে থাকা ব্রাভোর ব্যাটিং দৃষ্টিনন্দন সবসময়ই; এদিনও থিতু হওয়ার পর খেলেছেন চোখ জুড়ানো সব শট। ম্যাচ ঘুরিয়ে দেয়া ১৫৬ রানের জুটি ভেঙেছে দুর্দান্ত এক ক্যাচে। মর্কেলের বলে পোলার্ডের (৭১ বলে ৬২) রকেট গতির শট লং অনে দারুণ ক্ষিপ্রতায় হাতে জমান ফাফ ডু প্লেসিস। শতক করে তবেই থেমেছেন ব্রাভো। ক্রিস মরিসকে লং অন দিয়ে ছক্কা মেরে তৃতীয় ওয়ানডে সেঞ্চুরি স্পর্শ করেছেন ঠিক ১০০ বলে। এ ইনিংসও শেষ হয়েছে ডু প্লেসিসের অসাধারণ আরেকটি ক্যাচে। মিড অন থেকে পেছন দিকে অনেকটা দৌড়ে ফুল লেংথ ডাইভে হাতে জমান বল। ব্রাভোর ১০২ রানের ইনিংসে চার ১২টি, ছক্কা ৪টি। এরপর সপ্তম উইকেটে ৫৪ রানের জুটি গড়েছেন জেসন হোল্ডার ও কার্লোস ব্র্যাথওয়েইট। প্রথম রান করতে ১৭ বল লেগেছে হোল্ডারের, পরে করেছেন ৪৬ বলে ৪০। ২১ রানে শেষ ৪ উইকেট হারিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ থামে ২৮৫ রানে। তিন দিন আগে ওয়েস্ট ইন্ডজের ২৮৩ রান অনায়াসেই তাড়া করেছিল অস্ট্রেলিয়া। এদিন ক্যারিবিয়ান বোলাররা ছিলেন সেরা চেহারায়। নতুন বলে জ্বলে ওঠেন শ্যানন গ্যাব্রিয়েল। সুনিল নারাইন ছিলেন বরাবরের মতোই নির্ভরতা। ৬৫ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় প্রোটিয়ারা।
এবিডি ভিলিয়ার্স এদিনও ছিলেন বিবর্ণ। টুর্নামেন্টে একটি অর্ধশতকও করতে পারেননি দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক। পরাজয়ের ব্যবধান বড় হতে পারত আরও। ১৩৪ রানে ৯ উইকেট হারানো প্রোটিয়াদের শেষ উইকেটে ৫১ রানের জুটি গড়েন মর্কেল (৩২*) ও তাহির (২৯)। দুজনই খেলেছেন ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস। তাতে ম্যাচটা একটু দীর্ঘায়িত হয়েছে, মান খুব একটা বাঁচেনি। আজ রোববার ফাইনালে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।