কুষ্টিয়ার ঝাউদিয়ায় কুমার নদ দখল করে ভবন নির্মাণ

স্টাফ রিপোর্টার: কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ঝাউদিয়া বাজারের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া কুমার নদ দখল করে ভবন নির্মাণ করছেন প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। নদ দখলে স্থানীয় আওয়ামী লীগের এক নেতা মুখ্য ভূমিকায় রয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এই নেতার নাম জহুরুল ইসলাম। তিনি ঝাউদিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ঝাউদিয়া বাজারের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে কুমার নদ। স্থানীয় জেলেরা এই নদে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন। পাশাপাশি কৃষিজমিতে সেচ ও গৃহস্থালির কাজেও এই নদের পানি ব্যবহার করেন দুই পারের মানুষ। হঠাৎ নদের জায়গা দখল করে বিপণিবিতান নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে।
উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগের নেতা জহুরুল ইসলামসহ ৪৯ ব্যক্তি সড়কের পাশের ২৬ বাই ১০ ফুট করে জমি একসনা ইজারা নেন।

উপজেলা ভূমি কার্যালয় থেকে গত বছরের আগস্ট ও চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে এ জমি ইজারা নেওয়া হয়। নিয়ম অনুযায়ী ওই জমিতে কেবল বাঁশ ও টিনের ছাউনির আধা পাকা ভবন নির্মাণ করা যাবে। কিন্তু জহুরুল ইসলামসহ প্রভাবশালী ব্যক্তিরা সড়কের পাশের ২০ ফুট ফাঁকা রেখে কুমার নদের জায়গা দখল করে পাকা স্থাপনা নির্মাণ করছেন। দুই সপ্তাহ ধরে চলছে এ কাজ। গত মঙ্গলবার বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, সড়ক থেকে দূরে নদীর জায়গায় ভবনের ভিত নির্মাণের কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। চলছে রড, সিমেন্ট ও বালু দিয়ে বড় বড় পিলার তৈরির কাজ। ভবনের একেক তলায় ৫৬টি করে দোকান করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান নির্মাণকাজে নিয়োজিত এক রাজমিস্ত্রি।

এখন নদে পানি কম। বর্ষা মৌসুম এলে এসব জায়গা পানিতে ভরে যায় বলে স্থানীয় লোকজন জানান। নদ দখলের ঘটনায় এলাকার সাধারণ মানুষের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করলেও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে পারছেন না। তাঁরা বলেন, এমনিতেই বিভিন্ন কারণে নদ সংকুচিত। এর ওপর নদের জায়গা দখল করে এভাবে ভবন নির্মাণ করলে একপর্যায়ে এর অস্তিত্বই থাকবে না। এলাকাবাসী অবিলম্বে এই অবৈধ নির্মাণকাজ বন্ধের দাবি জানিয়েছেন।

এ ব্যাপারে জহুরুল ইসলাম বলেন, ভাই, সব দোকান আমার নয়, আমার মাত্র দুটি দোকান। নদের জায়গা দখলের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভাই, এসব নিয়ে লেখালেখির দরকার নেই, আমি আপনার সাথে দেখা করে একটা ব্যবস্থা করবো।

কুষ্টিয়া সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) হাফিজ আল আসাদ বলেন, সড়কের পাশের সরকারি জমি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। নদ দখল করার কথা নয়। এছাড়া ওই জমিতে শুধু আধা পাকা ভবন নির্মাণ করা যাবে। এসব নিয়মের ব্যত্যয় হলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

কুষ্টিয়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খোদেজা খাতুন বলেন, নদী দখল করে পাকা ইমারত নির্মাণের খবর পেয়ে সেখানে জরিপকারী (সার্ভেয়ার) পাঠিয়ে সত্যতা পাওয়া গেছে। জহুরুল ইসলামকে মঙ্গলবার বিকেলে ডেকে এটি ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

Leave a comment