আলমডাঙ্গা ব্যুরো: বেশ কয়েক দিন অতিবাআহিত হলেও এনায়েতপুরের পানিপথে বিদেশ পাঠানোর ২ দালালের বিরুদ্ধে থানায় দায়েরকৃত অভিযোগটি এফআইআর হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়নি। পানিপথে বিদেশ পাঠিয়ে মরণফাঁদে ফেলার ২ খলনায়ক আদম ব্যাপারির বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করে বিপাকে বাদীর পরিবার। মালয়েশিয়ায় ভাল কাজ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ২ লাখ ২০ হাজার টাকার হাতিয়ে নিয়ে নিজ গ্রামের এখলাস আলীকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয় ওই ২ প্রতারক। রোমহর্ষক মৃত্যুফাঁদ থেকে বাড়ি ফিরে প্রতারিত এখলাস নিজ গ্রামের ২ প্রতারক পানিপথের আদম ব্যবসায়ির নামে বেশ কয়েক দিন পূর্বে থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।
জানা গেছে, উপজেলার এনায়েতপুরের মৃত ফজলে মণ্ডলের ছেলে নুর আলী ওরফে এমবি নূর আলী একই গ্রামের আলম মণ্ডলের ছেলে লাল চিহ্নিত আদম ব্যাবসায়ী। তারা গ্রামের সহজ-সরল ব্যক্তিকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে পানিপথে বিদেশ পাঠানোর ব্যবসা ফেঁদে বসে। তারা মালয়েশিয়ায় ভাল বেতনে চাকরি দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে নিজ গ্রামের মৃত জলিল মণ্ডলের ছেলে এখলাস আলীর নিকট থেকে ২ লাখ ২০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। ৪ মাস আগে টাকা হাতিয়ে নিয়ে এখলাস আলীকে তারা প্রথমে চট্টগ্রামে নিয়ে যায়। সেখান থেকে বঙ্গোপসাগরে নিয়ে পানিপথে মালয়েশিয়া পাঠাতে গেলে সে প্রথমে রাজি হয়নি। পরে তাকে ২ প্রতারক জোর করে জাহাজে তুলে দেয়া। দীর্ঘ ২২ দিন সাগরে ভাসার পর তাকে অন্যান্যদের সাথে থাইল্যান্ডের এক জঙ্গলে নিয়ে যায় তাকে। সেখান থেকে এখলাসকে ২ প্রতারক পুলিশের হাতে তুলে দেয়। সেখানে থাইল্যান্ড পুলিশ তাকে অবর্ণনীয় নির্যাতন করে। এখলাস জানিয়েছে, মালেশিয়ার ভাষায় রাংতা বলে। সেই রাংতা এখলাসের গোপন অঙ্গে লেপ্টে দিতো। এর ফলে প্রচন্ড যন্ত্রণায় তিনি জ্ঞান হারাতেন। গোপনাঙ্গ দিয়ে রক্ত ঝরতো। দীর্ঘ ৪/৫ মাস অতিবাহিত হলেও এখনও তার গোপনাঙ্গের রাংতার ক্ষতের দাগ যায়নি বলে এখলাস মন্তব্য করেছে। পুলিশের হাত থেকে মুক্ত করতে ২ প্রতারক দালাল দেশে এখলাসের পরিবারের নিকট ফোন করে বাড়তি মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করে। উপায়ান্তর না দেখে এখলাসের পরিবার দালাল নূর আলীর স্ত্রী সাগরী খাতুনের হাতে ৫৯ হাজার টাকা তুলে দেয়। ৫৯ হাজার টাকাও আত্মসাৎ করে দিয়ে দালাল নুর আলী আর লাল এখলাস আলীকে পুলিশের হেফাজতে রেখেই সেখান থেকে গোপনে বাড়ি চলে আসে। হতভাগা এখলাস সেখানে আরও কয়েক মাস নির্যাতন ভোগ করে গত ১২/১৩ দিন পূর্বে দেশে ফিরেছে। এখলাস এ ঘটনায় বাদি হয়ে গত ১১ মে আলমডাঙ্গা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে।
লিখিত এ অভিযোগ দায়ের ঘটনার ইতোমধ্যে কয়েক দিন অতিবাহিত হয়েছে। অথচ আজোবধি এ গুরুতর অভিযোগটি এফআইআর হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়নি। এদিকে, পানিপথে বিদেশ পাঠিয়ে মরণফাঁদে ফেলার ২ খলনায়ক আদম ব্যাপারির বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করে বিপাকে পড়েছেন বাদীর পরিবার। তারা গ্রামে অবস্থান করে বিভিন্নভাবে দরিদ্র ও ক্ষতিগ্রস্থ বাদীর পরিবারকে হুমকি দিয়ে চলেছে। নানাভাবে গোলযোগ করার অপচেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।