স্টাফ রিপোর্টার: বঁটিতে গলাকাটা নেকজান বিবিকে (৫৩) শেষ পর্যন্ত রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় ট্রেনযোগে রাজশাহীর উদ্দেশে নেয়া হয়। এদিকে গতপরশুর সন্ধ্যায় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়ার পর অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে সেলাইসহ অস্ত্রোপচার জরুরি প্রয়োজন হলেও কেন করা হলো না? এ বিষয়ে সদর হাসপাতালের সার্জিক্যাল কনসালটেন্ট ডা. নূরুদ্দীন রুমীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেছেন, প্রয়োজনীয় চিকিৎসকের অনুপস্থিতির কারণে অপারেশন থিয়েটারে নেয়া সম্ভব হয়নি। তাছাড় ইএনটি বিশেষজ্ঞও হাসপাতালে নেই। এ কারণেই রোগীকে রেফার করতে হয়েছে।
জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের শঙ্করচন্দ্র ইউনিয়নের গাড়াবাড়িয়া ছাগলাপাড়ার ভিক্ষুক মসলেম উদ্দীন ও ছমিরন নেছার মেয়ে নেকজান বিবি। দীর্ঘদিন ধরেই স্বামী নিরুদ্দেশ। নেকজানের ছেলে হাসান সাতগাড়ির ঘরজামাই। মেয়ে বিবাহিতা। ঢাকায় গামের্ন্টসে চাকরি করে। পৈত্রিক গ্রামেই থাকতেন নেকজান। গতপরশু বিকেলে তিনি প্রতিবেশী কালুর বাড়ির রান্নাঘরে গিয়ে ধারালো অস্ত্র বঁটির কোপে গুরুতর জখম হন। গলায় নিজেই বঁটি দিয়ে কোপ মারেন বলে স্থানীয়রা জানান। তাকে উদ্ধার করে নেয়া হয় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে। ভর্তির পর ওই রাতেই তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অথবা ঢাকায় রেফার করেন চিকিৎসক। একেতো দরিদ্র, তার ওপর গলায় গুরুতর কোপ। রেফার করায় বিষয়টি নিয়ে বিরূপ সমালোচনা শুরু হয়। অপরদিকে যে ছেলের কারণে নেকজান মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে আত্মহত্যার অপচেষ্টা চালিয়েছেন বলে জানা যায়, সেই ছেলে মায়ের শয্যাপাশে ছুটে যায়। অর্থাভাবে নেকজানকে রাজশাহী নেয়ার বিষয়টি অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে। অবশেষে স্থানীয়দের দেয়া কিছু অর্থ আর হাসানের পরিচিতদের নিকট থেকে ধার-কর্য করা হাজার দশেক টাকা নিয়ে নেকজান বিবিকে তোলা হয় ট্রেনে। একজন দরিদ্র অসহায় নারীর বঁটিতে কাটা গলায় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে কেন সেলাই দেয়া সম্ভব হলো না? কেন তাকে দীর্ঘ সময় ফেলে রাখতে হলো? এসব প্রশ্নের জবাব খুঁজতে গেলে সদর হাসপাতালের সার্জারি কনসালটেন্ট ডা. এসএম নূরুদ্দীন রুমী বলেন, নেকজান বিবির গলায় শ্বাসনালি কেটে গেছে বলেই বিষয়টি জটিল। ওই রকম রোগীকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিতে হলে দরকার বেশ কয়েকজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। কয়েকজন থাকলেও তাদের কেউ কেউ অনুপস্থিত। এসব কারণেই রোগীকে রেফার করতে হয়েছে।