স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা ঝিনুক মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষক কর্তৃক ছাত্রী ধর্ষণ মামলার বাদীকে হুমকি-ধামকি দেয়া হচ্ছে। মামলা তুলে নেয়ার জন্য বিভিন্নভাবে তাকে চাপ দেয়া হচ্ছে। ডাক্তারি পরীক্ষার রিপোর্টও ওলোটপালোট করা হতে পারে বলেও তিনি আশঙ্কা করছেন। শেষমেশ পুলিশ প্রশাসন সঠিক স্থানে দাঁড়িয়ে থাকতে পারবে কি-না এতেও সন্দিহান মামলার বাদী। তবে তিনি বলেছেন, সবতো হারিয়েই গেছে, এখন আর কিছু হারানোর ভয় নেই, সামনের দিকে সঠিকভাবে এগিয়ে যেতে চাই।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার নেহালপুর গ্রামের ওয়াজেদ আলীর ছেলে মো. আহাদ আলী চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের ঝিনুক মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। তিনি প্রাইভেটও পড়ান। যদিও বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের বাসায় প্রাইভেট পড়ানো আইনসিদ্ধ নয়। আর এই প্রাইভেট পড়াতে গিয়ে পরিকল্পিতভাবে তিনি স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ করেছেন। ২৯ এপ্রিল শুক্রবার থানা কাউন্সিলপাড়ার ভাড়ার বাড়িতে ডেকে নেন তার বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে। এ ঘটনার আগে অভিযুক্ত ধর্ষক আহাদ তার বোনকে বাসা থেকে কৌশলে গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। দুপুরের পর ছাত্রীকে ধর্ষণ করেন। পরদিন শনিবার ছাত্রীর দুলাভাই বিষয়টি বিদ্যালয়ে জানান। এরই মধ্যে কেটে যায় চারদিন। কিন্তু বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নেয় না। ঘটনা জানাজানি হলে ফুঁসে ওঠে অভিভাবকসহ ছাত্রীরা। গত বুধবার বিদ্যালয়ের আঙিনায় শিক্ষককে পিটুনি দেয় ছাত্রী-অভিভাবকরা। ছাত্রীরা ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভ করে। ওই দিন সন্ধ্যায় ধর্ষিত ছাত্রীর দুলাভাই বাদী হয়ে থানায় ধর্ষণ মামলা করলে শিক্ষক আহাদকে পুলিশ গ্রেফতার করে। এরপরই শুরু হয় আরেক অধ্যায়। মামলার বাদী অভিযোগ করেছেন, তিনি স্বস্তিতে থাকতে পারছেন না। বিভিন্নভাবে হুমকির মুখে রয়েছেন তিনি। বিদ্যালয়ের শিক্ষক শামসুন্নাহার রেনু ও সেলিনা বেগম নিশি নতুনভাবে ষড়তন্ত্র করছেন বলে মামলার বাদী অভিযোগ করেছেন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, রেনু ও নিশি ম্যাডাম ছাত্রীদেরকে উসকে দিচ্ছেন আমাদের বিরুদ্ধে। তারা ছাত্রীদের মধ্যে প্রচার করছে ওই মেয়েরই সব দোষ। বিদ্যালয়ের ৫ ছাত্রীকে দুই ম্যাডাম উসকানি দিয়ে আমার বাড়িতে পাঠানো হয়েছিলো বৃহস্পতিবার। তারা মামলাটি মিটিয়ে ফেলার ব্যাপারে চাপ দেয় এবং ধর্ষিতার ব্যাপারে আজেবাজে কথা বলে। মামলার বাদী বলেন, আমিতো দুই ম্যাডামের কোনো ক্ষতি করিনি, কিন্তু ওনারা ধর্ষক শিক্ষকের পক্ষ নিচ্ছেন কেন?
মামলার বাদী বলেন, আমি ধর্ষক আহাদের সাথে বৃহস্পতিবার কথা বলেছি। আহাদ জানিয়েছে, আমি ঘটনার পর স্কুলছাত্রীর বাড়িতে গিয়ে মাফ চেয়ে আসতে চেয়েছিলাম। কিন্তু বিদ্যালয়ের সভাপতি আমাকে যেতে দেননি। বিদ্যালয়ের সভাপতি নুরুল ইসলামের হুমকি ধামকির মুখে রয়েছেন বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক। তারাও মুখ খুলতে পারছেন না। এদিকে ধর্ষিত ছাত্রীর ডাক্তারি পরীক্ষার রিপোর্ট প্রভাবিত হওয়ার আশঙ্কা করছেন মামলার বাদী। তবে তিনি বলেন, ডাক্তারি পরীক্ষার দিন সংশ্লিষ্ট এক ডাক্তারের সাথে আমার কথা হয়েছিলো, ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে বলে সেসময় ডাক্তার আমাকে জানিয়েছিলেন। তারপরেও বিশ্বাস পাচ্ছি না।