আলমডাঙ্গা হারদী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান নির্বাচন হবে দ্বিমুখী

 

 

আলমডাঙ্গা ব্যুরো: আলমডাঙ্গার হারদী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মূলত দ্বিমুখী ভোটযুদ্ধ হবে। ৪র্থ ধাপে আগামী ৭ মে উপজেলার অন্য ৬টি ইউনিয়নের সাথে এ ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ ইউনিয়নে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম, বিএনপি দলীয় প্রার্থী মিজানুর রহমান মধু ও জামায়াত দলীয় প্রার্থী সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম উকিল। আলমডাঙ্গা উপজেলার এটি একমাত্র ইউনিয়ন যেখানে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কোনো বিদ্রোহী প্রার্থী নেই। নেই কোনো স্বতন্ত্র প্রার্থী। অর্থাৎ ৩ প্রার্থীই নিজ নিজ দলের জনপ্রিয় ও বিকল্পহীন ব্যক্তিত্ব। আলমডাঙ্গা হারদী ইউনিয়নের গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী উপজেলা চেয়ারম্যান সমিতির সাধারণ সম্পাদক বর্তমান চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি ইউপি চেয়ারম্যান ছাড়াও এলাকায় শিক্ষানুরাগী হিসেবে পরিচিত। বৃহত্তর এলাকায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্মাণের ক্ষেত্রে তিনি অবিস্মরণীয় ভূমিকা রেখে চলেছেন। এবারও তিনি আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছেন। এছাড়াও বিএনপির প্রার্থী মিজানুর রহমান মধু ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন। বৃহত্তর এলাকায় তিনি তরুণ ক্রীড়া সংগঠক হিসেবে পরিচিত। দানশীলতার ক্ষেত্রেও তার ব্যাপক পরিচিতি রয়েছে। অন্যদিকে হারদী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান জামায়াতে ইসলামী সমর্থিত সাইফুল ইসলাম উকিল নির্বাচন করছেন। তিনি ইতঃপূর্বে এই ইউনিয়নে একবার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। সৎ মানুষ হিসেবে তিনি পরিচিত।

আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী নূরুল ইসলামের কর্মী ওমর খৈয়াম মাস্টার। তিনি বলেন- বর্তমান চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বিগত ৫ বছর ইউনিয়নে ব্যাপক কাজ করেছেন। হারদী ইউনিয়নের রাস্তা-ঘাট, মসজিদ-মন্দির, স্কুল-কলেজসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করে মানুষের কাছে কাজের মানুষ হিসে পরিচিতি লাভ করেছেন। ইউনিয়নের সর্বত্র রয়েছে তার উন্নয়নের ছোঁয়া। এতো কাজ করার পর অবশ্যই মানুষ তার কাজের মূল্যায়ন করবে। তাছাড়া আওয়ামী লীগের সকল নেতাকর্মী তার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছে।

বিএনপি সমর্থিত ধানের শীষ প্রতিকের প্রার্থী মিজানুর রহমান মধু উদীয়মান নেতা হিসেবে ইতোমধ্যেই পরিচিতি পেয়েছে। প্রচার-প্রচারণায় এগিয়ে থেকেও ৫ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচনে উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেও পরাজয় বরণ করেন তিনি। এছাড়া হারদী ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান পদে গত নির্বাচনে নূরুল ইসলামের নিকট অল্প ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন তিনি। তার নিবেদিত প্রাণকর্মী আশাবুল হক বলেন, বিশিষ্ট ক্রীড়ানুরাগী হিসেবে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় তার একটা পরিচিতি আছে। গত উপজেলা নির্বাচনে ভোটের আগের রাতে ভোট না হলে মধু উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হতেন। সে উচ্চ শিক্ষিত যুবক। দানশীলতার কারণেও তিনি সকলের প্রিয়। সকলের বিপদে আপদে কাজে লাগেন। একেবারে শূন্য হাতে শুরু করে তিনি এখন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী। কারো দয়ায় না, নিজের মেধা ও পরিশ্রমে আজ মধু প্রতিষ্ঠিত। আমাদের বিশ্বাস- এবারের নির্বাচনে জনগণ তাকে প্রত্যাখ্যান করবে না। তার মেধা ও প্রজ্ঞা ইউনিয়নবাসীর কাজে লাগানোর সুযোগ তারা হাত ছাড়া করবে না।

এছাড়াও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান জামায়াতে ইসলামী সমর্থিত স্বতন্ত্রপ্রার্থী সাইফুল ইসলাম উকিলের সমর্থকরাও ধারণা করছেন গত নির্বাচনে ফল বিপর্যয় হলেও এবারের নির্বাচনে জনগণ তাকে পুনরায় ইউনিয়নের সেবা করা সুযোগ দেবেন। হারদী ইউনিয়নে মোট ভোটার সংখ্যা ২০ হাজার ৮১৬। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১০ হাজার ৪৪৯, মহিলা ভোটার ১০ হাজার ৩৬৭।

ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে ধারণা করা যাচ্ছে এবার হারদী ইউনিয়নে দ্বিমুখী ভোটযুদ্ধ হতে পারে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দলীয় প্রার্থীর মধ্যেই হবে এ ভোটযুদ্ধ। কে হাসবেন বিজয়ের স্মিত হাসি- তা জানতে শেষ পর্যন্ত ৭ মে পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।

Leave a comment