ঝিনাইদহে কালীগঞ্জে চেয়ারম্যানসহ ১০ প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বী নেই

 

কালীগঞ্জ প্রতিনিধি: একটি ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান ও সদস্য মিলিয়ে পদ ১৩টি। কিন্তু নির্বাচনে চেয়ারম্যানসহ ১০টি পদেই প্রার্থী একজন করে। অর্থাৎ, তাদের কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নেই। বিনা ভোটে নির্বাচিত হতে যাওয়া এসব প্রার্থীদের সবাই আওয়ামী লীগের। এই চিত্র ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার ২নং জামাল ইউনিয়নে। বিএনপির নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেছেন, ভয়ভীতি দেখিয়ে ও হুমকি দিয়ে তাদের প্রার্থী হতে দেয়া হয়নি। আর সাধারণ ভোটাররা বলছেন, নির্বাচনের আনন্দ থেকে তাদের বঞ্চিত করা হয়েছে। পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবেন না।

ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে ২৩ এপ্রিল ভোট হবে কালীগঞ্জ উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের মধ্যে নয়টিতে। মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ দিন ছিলো গত ৩১ মার্চ। চেয়ারম্যান পদে একজন, ৯টি সাধারণ সদস্য পদের মধ্যে ৪টিতে একজন করে এবং সংরক্ষিত মহিলা সদস্যপদে দুটিতে একজন করে মনোনয়নপত্র জমা দেন। সাধারণ সদস্য পদে তিনটিতে দুজন করে মনোনয়নপত্র জমা দিলেও একজন করে পরে প্রত্যাহার করে নেন। অর্থাৎ ১ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সদস্যপদ ও ১ নম্বর সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ডেই কেবল নির্বাচন হচ্ছে।

রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোদাচ্ছের হোসেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে কেউ মনোনয়নপত্র জমা দেননি। এছাড়া ২ নং ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের কর্মী সাইফুল্লাহ, ৩ নং ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল মালেক মোল্লা, ৪ নং আওয়ামী লীগের কর্মী ফসিয়ার রহমান, ৫ নং ওয়ার্ডে ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজ খান, ৬ নং ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের কর্মী মোবারক আলী তরফদার, ৭ নং ওয়ার্ডে মো. ইমদাদুল হক ও ৮ নং ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের কর্মী শের আলী একক প্রার্থী। ২ নং সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ডে শিউলী ও ৩ নং ওয়ার্ডে নূরজাহানের কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নেই।

ওই ইউনিয়নে বিএনপি থেকে মনোনয়ন পেয়েছিলেন মোহাম্মদ আলী। তিনি বলেন, তিনি মনোনয়নপত্রও কিনেছিলেন কিন্তু এর পরদিনই তার বাড়িতে হামলা হয়। তাকে হত্যার হুমকি দেয়া হয়। এমনকি ব্যাংকে টাকা জমা দেয়ার পরও মনোনয়নপত্র জমা দিতে যেতে পারেননি। তাকে উপজেলা পরিষদে ঢুকতে দেয়া হয়নি। প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েও পাননি। ওই ইউনিয়নের বিএনপির সভাপতি আক্কাচ আলী বলেন, ভয় দেখিয়ে তাঁদের প্রার্থী হতে দেয়া হয়নি।

তবে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও চেয়ারম্যান পদের একক প্রার্থী মো. মোদাচ্ছের হোসেন জানান, কাউকে ভয় দেখানো হয়নি। বিএনপি-সমর্থিত প্রার্থীরা নির্বাচনে জয়লাভ করতে পারবেন না ভেবে ভোটে আসেননি। তিনি আরও বলেন, মোহাম্মদ আলীর বাড়িতে হামলার বিষয়টি শুনেছেন। কারা করেছেন, জানেন না। একাধিক ভোটারের সাথে কথা বলে জানা গেছে, তারা ভোট দিতে না পেরে হতাশ। মনিরুল ইসলাম নামের একজন প্রবীণ ভোটার জানান, বাংলাদেশ হওয়ার পর অনেকবার ভোট দিয়েছেন, কিন্তু গ্রাম পর্যায়ে এ-জাতীয় ভোট কখনো দেখেননি। এ বিষয়ে ওই ইউনিয়নের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, কেউ মনোনয়নপত্র জমা না দিলে তাদের কিছু করার নেই। তাছাড়া মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার ক্ষেত্রে  ভয়ভীতি বা হুমকি দেয়ার অভিযোগও কেউ করেননি।