স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১২ সহকারী শিক্ষকের বদলির সুপারিশ নিয়ে সদর উপজেলা শিক্ষা কমিটি ও শিক্ষা কর্মকর্তাদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। কর্মকর্তারা বলছেন, এর মধ্যে ১১ জনের ক্ষেত্রেই সর্বশেষ নীতিমালা মানা হয়নি। এ কারণে ৩১ মার্চের মধ্যে বদলি প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি।
জানা গেছে, উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষে ৯ মার্চ সদর উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভা হয়। কমিটির সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আসাদুল হক বিশ্বাসের সভাপতিত্বে এ সভায় শিক্ষকদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১২ জনের বদলির বিষয়ে আলোচনা ও সুপারিশ করা হয়। সভায় উপস্থিত ছিলেন এমন একাধিক ব্যক্তি জানিয়েছেন, কমিটির সচিব উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আবু হাসান প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ শিক্ষক বদলির নীতিমালা উপস্থাপন করেন। এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কেএম মামুন উজ্জামান বলেন, নীতিমালা কঠোরভাবে মেনে বদলি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। তার এ বক্তব্যের সাথে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা একমত পোষণ করেন।
সর্বশেষ ওই নীতিমালা অনুযায়ী, যেসব বিদ্যালয়ে ৪জন বা এর কমসংখ্যক শিক্ষক কর্মরত আছেন, সেসব বিদ্যালয় থেকে প্রতিস্থাপনক্রমে সাধারণভাবে শিক্ষক বদলি করা যাবে। একই পদে একাধিক আগ্রহী থাকলে চাকরির জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে অগ্রাধিকার দিতে হবে। পৌর এলাকার বাইরে কর্মরত যেসব শিক্ষকের নিয়োগপত্রে স্থায়ী ঠিকানা জেলা সদরের পৌরসভা, তারা বদলির ইচ্ছা পোষণ করলে শূন্যপদ থাকা সাপেক্ষে স্থায়ী ঠিকানায় বদলি করা যাবে, অন্য কাউকে পৌরসভার বাইরে থেকে বদলি করা যাবে না। কোনো উপজেলায় পদ শূন্য হলে সংশ্লিষ্ট উপজেলার অধিবাসী প্রার্থীরা অগ্রাধিকার পাবেন।
সূত্রমতে, সদর উপজেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ে ৪৪ জন বদলির জন্য আবেদন করেন। ওই সভায় ১২ জনকে বদলির জন্য সুপারিশ করা হয়। তাদের মধ্যে ১১ জনের ক্ষেত্রে নীতিমালা মানা হয়নি। এমএ বারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য স্থানীয় ৮জন আবেদন করলেও তাদের বাদ দিয়ে যশোর সদরের জগন্নাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শাহনাজ সুলতানার পক্ষে সুপারিশ করা হয়েছে। বোয়ালমারী, বালিয়াকান্দি ও গাইদঘাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শূন্যপদে সর্বকনিষ্ঠ একজনের পক্ষে সুপারিশ করা হয়েছে। অন্যান্য বিদ্যালয়ের শূন্যপদে বদলির সুপারিশেও জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে শিক্ষা কমিটির সভাপতি আসাদুল হক বলেন, শাহনাজ সুলতানা পৌর এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা। স্বামীর কারণে তিনি যশোরে চাকরি করতেন। বিধবা হওয়ায় মানবিক কারণে এবং বদলির নীতিমালা মেনেই তার পক্ষে সুপারিশ করা হয়েছে। কমিটির সদস্যদের উপস্থিতিতেই সব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, শিক্ষা কর্মকর্তারা এতো দিন নিজেদের খেয়ালখুশিমতো বদলি করিয়েছেন। এখন শিক্ষা কমিটি দায়িত্ব পালন করায় অনেকেই সমস্যায় পড়েছেন।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রমেন্দ্র নাথ পোদ্দার বলেন, ‘নিয়ম মেনেই এতো দিন বদলি করা হয়েছে। তবে শিক্ষা কমিটির সুপারিশকে কেন্দ্র করে বিতর্ক ওঠায় করণীয় বিষয়ে জানতে প্রাথমিক শিক্ষার খুলনা বিভাগীয় উপপরিচালককে ১৬ মার্চ লিখিত দেয়া হয়েছে। ৩০ মার্চ পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত জানা যায়নি।’