অনেক শিশুকে আমরা বলি ও একদম বড়দের মতো। এই তো বাবার জুতো পরে ফেলে, মায়ের ওড়না পেঁচিয়ে শাড়ি পরে। দাদির চশমা চোখে দেয়। এই কাজগুলো যখন সে করে, ভালোই লাগে। কোনো কোনো শিশু তো মা-বাবা বা বাড়ির অন্যরা কীভাবে কথা বলে, তা-ও অনুকরণ করে। ততোক্ষণ পর্যন্ত এগুলো ঠিক আছে, যতোক্ষণ শিশুরা বড়দের অনুকরণ করে কোনো নেতিবাচক আচরণ করা থেকে বিরত থাকে। বাড়ির ছোট্ট শিশুটি যখন এমন আচরণ করে, বড়রা চোখ বড় বড় করে ভাবেন, এমন কেন হচ্ছে?
একটু গভীরভাবে ভেবে দেখলে বুঝতে পারবেন, শিশুরা যাকে পছন্দ করে, তার আচার-আচরণ অনুসরণ ও অনুকরণ দুটোই করে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, শিশুদের গণ্ডি ছোট থাকে। চোখের সামনে যা দেখে অনায়াসে তা আয়ত্ত করে ফেলে। মা-বাবা যদি ঝগড়া করেন, বাড়ির বয়জ্যেষ্ঠ কাউকে অসম্মান করে কিছু বলেন, সেসবও শিখে ফেলে। এসব আচরণের প্রভাবে শিশুটি আক্রমণাত্মক আচরণও শিখতে পারে। অন্যের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ হারিয়ে ফেলে। শিশুদের সামনে কারও সাথে উচ্চস্বরে কথা বলা, ধূমপান করা, এমনকি তার মায়ের সাথেও কোনো কথা-কাটাকাটি হলে সেটি তার আড়ালেই করা উচিত।
মা-বাবার আচরণ অনেক সংযত হতে হবে। তাদের স্বভাবের নেতিবাচক দিকগুলো যদি তারা বদলে ফেলতে পারেন, তাহলে সন্তানের সামনে অপ্রস্তুত হওয়ার আশঙ্কা থাকবে না। বেশির ভাগ সময় অভিভাবকরাই ভালো-মন্দের তফাৎ বুঝতে পারেন না। সে কারণে সন্তান জন্মের পর নিজের খারাপ অভ্যাসগুলো বদলে ফেলতে হবে। কেননা শিশুরা ভালো-মন্দের বিচার করতে পারে না। তাই সতর্ক ও সচেতন হতে হবে মা-বাবাকেই।
আর যদি কোনো কারণে শিশুর সামনে কোনো বিরূপ আচরণ করে ফেলেন, তাহলে পরে তাকে বুঝিয়ে বলতে হবে যে কাজটি ভুল হয়েছে। আর কখনো এমন হবে না। আরেকটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে, শিশুর সামনে কোনো অবস্থাতেই মিথ্যা বলবেন না। সন্তানের জন্য আদর্শ মা-বাবা হয়ে উঠুন। আদর্শ মা-বাবা হওয়া এমন কোনো কঠিন কাজ নয়। একটু চেষ্টা করলেই সেটা সম্ভব। নিজের সন্তান অন্যের সামনে বেফাঁস কিছু বলে ফেললে মা-বাবা অস্বস্তিতে পড়েন। অভিভাবক হিসেবে যেন এমন পরিস্থিতিতে পড়তে না হয়, তাই আগে নিজেদের আচরণ বদলান। -সংকলিত।