বিশ্বের প্রাচীন বটবৃক্ষ সংরক্ষণের লক্ষ্যে জনসচেতনতা

 

শিপলু জামান: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ.আ.ম.স আরেফিন সিদ্দিক বলেছেন, বটগাছের সাথে আমাদের গভীর সম্পর্ক রয়েছে। অনেক ইতিহাস ঐতিহ্যের স্বাক্ষর রেখেছে বটগাছ। তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যে বটতলাটি ছিলো সেটি ঐতিহাসিক। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় সেই বটগাছটিকে পাকিস্তানের বর্বর বাহিনী এটাকে একেবারে উপড়ে ফেলে। কারণ তারা বটগাছকে ভয় করতো। স্বাধীনতার সংগ্রামের আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যতো আন্দোলন সংগ্রাম হয়েছে সব হয়েছে ঐতিহাসিক বটতলা প্রাঙ্গণে। এখন সেটি অপরাজেয় বাংলা নামে পরিচিত। সেখানে ছাত্রছাত্রীদের নানা অনুষ্ঠান ও শিক্ষকদের নানা কার্যক্রম এখনো চলছে। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের সময় সেই বটগাছটি কেটে ফেলা হলো। কারণ পাকিস্তানী বাহিনী মনে করেছে এ বটতলার যে শক্তি তা পাকিস্তানী বাহিনীর বিরুদ্ধে কাজ করে। পরবর্তীতে ১৯৭২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি স্বাধীনতার পর মার্কিন সিনেটের এভিয়েট ক্যানেডি সেখানে একটি বটের চারা রোপণ করেন। সেটি এখন বিরাট বটবৃক্ষে রুপান্তিত হয়েছে। গতকাল শুক্রবার দুপুরে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের সুইতলা মল্লিকপুরে অবস্থিত এশিয়ার বৃহত্তম ও বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম বটগাছ তলায় প্রাচীন বটবৃক্ষ সংরক্ষণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ বোটানিকেল সোসাইটি আয়োজিত জনসচেতনামূলক কার্যক্রম অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরো বলেন, বটগাছ আজ কমে যাচ্ছে। মানুষ জায়গার জন্য বটগাছ কেটে ফেলছে। যেহেতু বটগাছের সাথে আমাদের একটা ঐতিহ্যবাহী সম্পর্ক আছে। তাই নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষায়, জীববৈচিত্র সংরক্ষণ করতে এবং প্রকৃতিকে ধরে রাখতে আমাদের জনসচেতনামূলক কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হবে।

বাংলাদেশ বোটানিকেল সোসাইটির প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. সৈয়দ হাদিউজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোউপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. নাসরীন আহমাদ, প্রফেসর ড. ইমদাদুল হক, প্রফেসর ড. আবুল বাশার, বনসংরক্ষক অসিত রঞ্জন পাল, কালীগঞ্জ থানার ওসি আনোয়ার হোসেন প্রমুখ। অনুষ্ঠানের আগে ও পরে প্রধান অতিথি উপাচার্য আরেফিন সিদ্দিক পৌনে ৪ একর এলাকাজুড়ে বৃহত্তম এ বটগাছটি ঘুরে দেখেন এবং এটাকে রক্ষাণাবেক্ষণের জন্য পরামর্শ দেন।