সম্প্রতি চুয়াডাঙ্গাসহ দেশের প্রায় ১৮ হাজার মাধ্যমিক স্তরের বিদ্যালয় ও মাদরাসায় প্রথম দফায় স্টুডেন্টস ক্যাবিনেট বা ছাত্র মন্ত্রিপরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ নির্বাচন নিয়েও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। এ কারণে চুয়াডাঙ্গা জীবননগরের আন্দুলবাড়িয়ার একটি বিদ্যালয়ে নির্বাচন স্থগিত রাখতে হয়। কুষ্টিয়া ভেড়ামারার একটি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে ছুরিকাঘাতে জখম করা হয়েছে। এ ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার প্রেক্ষিতে প্রশ্ন ওঠা সঙ্গত, যখন কলেজগুলোর সংসদ নির্বাচন করার পরিবেশ গড়ে তোলা যায় না, করা হয় না, তখন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে নির্বাচনী বিরোধ কতোটা কল্যাণ বয়ে আনবে?
কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মাঝে গণতন্ত্র চর্চা ও নেতৃত্বের বিকাশ ঘটনানোর লক্ষ্যেই দেশের সকল মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদরাসায় ছাত্র মন্ত্রিপরিষদ নির্বাচনের আয়োজন করা হয়েছে। এ উদ্যোগ তথা ছাত্র মন্ত্রিপরিষদ নির্বাচনকে একপক্ষ যেমন উত্সাহব্যঞ্জক বলে দাবি করছে, তেমনই অপরপক্ষ ভিন্নমত পোষণ করে বলছে, নেতৃত্ব বিকাশের জন্য উচ্চ মাধ্যমিকে তথা কলেজগুলোর ছাত্রসংসদ পুনরুজ্জীবিত না করে মাধ্যমিকে ছাত্র মন্ত্রিপরিষদ কোমলমতিদের মানসপটে সম্প্রীতির বদলে বিভেদ, হিংসারই ছাপ পড়বে। পক্ষে-বিপক্ষে যুক্তি যতোই থাক, স্কুল ক্যাবিনেটের ভোটের দিনটি শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ আনন্দ ও উত্সবের দিন হিসেবেই দেখা হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা?
কোনো প্রকার পোস্টার-ফেস্টুন না থাকলেও প্রার্থীরা কেবল সহপাঠীদের কাছে ভোট চাইতে গিয়ে বিভক্ত হয়েছে। প্রতীক বরাদ্দ না থাকলেও প্রার্থীর নাম দেখে ও জেনেশুনে ভোট দিতে হয়েছে ভোটারদের। কেউ কেউ কর্মী হিসেবে প্রার্থীর পক্ষে কাজও করেছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা থেকে শুরু করে নির্বাচনী সব দায়িত্বই পালন করতে হয়েছে শিক্ষার্থীদের। তাদেরকেই নির্বাচন কমিশনার, প্রিসাইডিং ও পোলিং অফিসার, আবার ৱ্যাব-পুলিশও হতে হয়েছে। এতে নির্বাচনী সচেতনতা যে বৃদ্ধি পেয়েছে তা, বলাই বাহুল্য। এই সচেতনতা আর শ্রেণিকক্ষে প্রার্থী হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও প্রার্থীর পক্ষে-বিপক্ষে কর্মী হয়ে বিভক্তি কতোটা কল্যাণ বয়ে আনবে তা নতুন করে ভেবে দেখার অবকাশ আছে বৈকি।