চুয়াডাঙ্গায় হাজামের হাতে ছুন্নাতে খৎনায় তিন দিনে ৩ শিশু মৃত্যুশয্যায়

 

স্টাফ রিপোর্টার: চলছে ছুন্নাতে খৎনার মরসুম। এ মরসুমে অসচেতনতার কারণে হাজামদের দিয়ে শিশুপুত্রের ছুন্নাতে খৎনা দিয়ে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। এদেরকে নিয়ে একের পর এক অভিভাবককে ছুটতে হচ্ছে হাসপাতালে। দিতে হচ্ছে রক্ত।

গত তিন দিনে ৩ শিশুকে শুধু চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিতে হয়েছে। একজনকে রাজশাহী মেডিকেলে নিয়ে চিকিৎসাধীন রাখা হয়েছে। গতকাল পৃথক গ্রামের দু শিশুকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়া হলে কতর্ব্যরত চিকিৎসক ডা. এহসানুল হক মাসুম দ্রুত রক্ত দেয়ার পাশাপাশি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পরামশ দেন। তিনি বলেছেন, হাজামদের কারণেই একের পর এক শিশু মৃত্যুর ঝুঁকিতে পড়ছে। ফলে অভিভাবকদের সচেতন হওয়া দরকার। হাজাম নয়, হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসকের মাধ্যমে ছুন্নাতে খৎনা অনেকটাই নিরাপদ।

জানা গেছে, গতকাল শুক্রবার দামুড়হুদা জুড়ানপুরের গোপিনাথপুরের মনিরুজ্জামানের ছেলে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র জাবির হোসেনের (৯) ছুন্নাতে খৎনা দেয়ার জন্য ডাকা হয় আলমডাঙ্গা ওসমানপুরের এক হাজামকে। বেলা ১১টার দিকে ছুন্নাতে খৎনা দেয়া হয়। বিকেল ৩টার দিকে শুরু হয় রক্তক্ষরণ। অনবরত রক্তক্ষরণে শিশু জাবিরের শারীরিক অবস্থার যখন  আশঙ্কাজনক হয়ে পড়ে তখন নেয়া হয় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে। শিশু রোগীর একদিকে রক্তক্ষরণ অন্যদিকে রক্ত জোগাড়ে তার লোকজনকে হিমশিম খেতে হয়। অবস্থা দৃষ্টে হাসপাতালের স্বেচ্ছাসেবক চঞ্চল নিজেই এক ব্যাগ রক্ত দিয়ে শিশুর প্রাণ বাঁচাতে সহায়তা করেন।

অপরদিকে চুয়াডাঙ্গা নতুন ভাণ্ডারদহের নূরুল ইসলামের ছেলে সৌরভের (৭) গতকাল শুক্রবার বিকেলে ছুন্নাতে খৎনা দেয় বালিয়াকান্দির হাজাম ওহাব। সন্ধ্যায় শুরু হয় রক্তক্ষরণ। হাজামকে ডাকা হয়। হাজাম প্রথমে পাউডার দিয়ে রক্তক্ষরণ বন্ধের চেষ্টা করেন। তাতে কাজ না হলে টুকরো পুরনো কাপড় চেয়ে নিয়ে তাতে আগুন ধরিয়ে ছাই দিয়ে রক্তক্ষরণ বন্ধের ব্যর্থ চেষ্টা করেন। এক পর্যায় প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেয়ার কথা বলে কৌশলে পালিয়ে যান তিনি। সৌরভের পিতা এসব তথ্য দিয়ে বলেছেন, অনবরত রক্ত ঝরছে দেখে উপায় না পেয়ে হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করিয়েছি।

চিকিৎসক জাবির হোসেন ও সৌরভকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ দেন।

হাজামের দেয়া ছুন্নাতে খৎনার কারণে অনবরত রক্তক্ষরণ বন্ধের জন্য নিতে হয়েছে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।