সকল শঙ্কা তাড়িয়ে ইউপি নির্বাচন হোক অবাধ শান্তিপূর্ণ

 

প্রথম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২২ মার্চ। প্রথম ধাপের নির্বাচনে চুয়াডাঙ্গার কোনো ইউনিয়ন না থাকলেও পার্শ্ববর্তী ঝিনাইদহের কোর্টচাঁদপুর ও কুষ্টিয়ার মিরপুরের বেশ কয়েকটি ইউনিয়ন পরিষদ রয়েছে। প্রথম ধাপের নির্বাচনের মাত্র কয়েকদিন বাকি, এরই মধ্যে বোমাবাজি, হামলাসহ নির্বাচনী নানা সহিংস ঘটনা ঘটছে। সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন, শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে কি অবাধ শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটার সাধারণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে পছন্দের প্রতিনিধি নির্বাচিত করতে পারবেন? সর্বশেষ চুয়াডাঙ্গার ৪টি পৌর নির্বাচনের চিত্র দেখে চুয়াডাঙ্গাবাসীর মধ্যে আশা জাগা অমূলক নয় যে, সুষ্ঠু ও অবাধ পরিবেশেই ভোটাররা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন। যদিও কুষ্টিয়ার মিরপুর, বাগেরহাটসহ সারাদেশের হালচিত্র যতোই ফুটে উঠছে ততোই শঙ্কা বাড়ছে।

দলীয়ভাবে এবার ইউপি নির্বাচন হওয়ায় আগের যে কোনো সময়ের চাইতে সহিংসতা বেড়েছে। বাড়ছে। নির্বাচনের পরও যে এর রেশ থাকবে না তা নিশ্চিত করে বলা যাবে না। প্রতিদিন কোথাও না কোথাও সংঘাত-সংঘর্ষ ঘটছে। এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এ পর্যন্ত এক প্রার্থীসহ নিহত হয়েছে চারজন। তন্মধ্যে গত শুক্রবারই মারা গেছে দুজন। ইতোমধ্যে কাউখালীর শিয়ালকাঠি ইউনিয়নে জাতীয় পার্টির (জেপি) একজন কর্মীকে গুলি করার চেষ্টা করা হয়েছে। এর আগে এক সংঘর্ষে আহত পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলা ছাত্রদলের এক নেতা নিহত হয়েছেন। কুষ্টিয়া মিরপুরে ককটেল হামলার ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া যেসব এলাকায় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও দলটির বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছে বা থাকছে সেখানেই বিস্ময়করভাবে সংঘাত-সংঘর্ষের আশঙ্কা বেশি হচ্ছে। সে হিসেবে দ্বিতীয়ধাপে ঘোষিত তফসিল ভুক্ত চুয়াডাঙ্গার কয়েকটি ইউপি নির্বাচন যে ঝুঁকিমুক্ত নয় তা বলাই বাহুল্য। কেননা, প্রায় সব ক’টিতেই বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছে।

ইউপি নির্বাচন মূলত স্থানীয় সরকার নির্বাচন। এ নির্বাচনে যারা ক্ষমতার দাপট দেখান  আখেরে তাদের লাভের বদলে চরম খেসারতই দিতে হয়। অতএব, ভোটার সাধারণের ভোটাধিকার প্রয়োগের পরিবেশ গড়ে যোগ্যতার ভিত্তিতেই নির্বাচিত হওয়ার মানসিকতায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা দরকার। জনপ্রিয়তা অর্জনের বদলে পেশিশক্তি প্রয়োগে ভীতিকর পরিস্থিতিতে নির্বাচনী পরিবেশ নিজের অনুকূলে নিতে প্রভাব সৃষ্টির পরিণাম ভালো হয় না। কেননা, জোর-জবরদস্তি ও সংঘাত-সংঘর্ষে জনগণের মন জয় করা যায় না। জনগণ উত্সবের আমেজে ভোটের দিন নিজেদের পছন্দমতো ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন, এরকম পরিবেশই কাম্য। এজন্য নির্বাচন কমিশনকেই যথাযথ দায়িত্ব পালনে আন্তরিক হতে হবে। যদিও আপাত দৃষ্টিতে তা প্রত্যাশা করা জেগে স্বপ্ন দেখারই শামিল।