কার্পাসডাঙ্গায় কবি নজরুল এবং তার স্মৃতিবিজড়িত আটচালা ঘর -আহাদ আলী মোল্লা

কার্পাসডাঙ্গায় কবি নজরুল এবং তার স্মৃতিবিজড়িত আটচালা ঘর

-আহাদ আলী মোল্লা

 

‘বাবুদের তাল-পুকুরে

হাবুদের ডাল-কুকুরে

সে কি বাস করলে তাড়া,

বলি থাম একটু দাঁড়া।’

ওপরের চরণগুলো কার লেখা, ছড়াটির শিরোনামই বা কী? জানি, গ্রাম বাংলার ছেলেবুড়ো সকলেই একবাক্যে বলবেন ছড়ার অংশবিশেষ আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের লিচু চোর কবিতার। কিন্তু এই ছড়াটি যে চুয়াডাঙ্গার মাটিতে বসেই কবি লিখেছিলেন। এ খবর হয়তো কেউই তেমন জানি না। না জানারই কথা। ‘লিচু চোর’ কবিতাটি যে চুয়াডাঙ্গার কার্পাসডাঙ্গায় লেখা, এর পক্ষে আমি হয়তো তেমন দলিলিক কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারবো না। তবে জেলার অনেক গুণী ব্যক্তিই এটি স্বীকার করেছেন যে, লিচু চোর কবিতার ভাব, ভাষা, আচরণ ও তার উপস্থাপনের ঢং চুয়াডাঙ্গার পরিবেশকেই চিহ্নিত করে। এছাড়া কবির প্রখ্যাত উপন্যাস ‘মৃত্যুক্ষুধা’ ও ‘পদ্মগোখরা’ এখানকার রচনা বলেও অনুমান করা হয়। তবে মৃত্যুক্ষুধা উপন্যাসটি কৃষ্ণনগরে লেখা বলেও অনেকে মত দিয়েছেন। আমাদের জাতীয় কবি নজরুল তরুণ বয়সে অনেক ক’বার এসেছেন কার্পাসডাঙ্গায়। তার স্মৃতিবিজড়িত খড়ের আটচালা ঘরটি এখনও সাক্ষী হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে। কিন্তু ঘরটি বয়সের ভারে নুয়ে পড়েছে। আর কতদিন সে এভাবে একাকী থাকবে। তার একটা অবলম্বন চাই। একটা হিল্লে হলেই হয়তো এই খড়ের আটচালাটি আবার মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে। এই লেখাটির উদ্দেশ্য লিচু চোর কবিতা বা আর দুটো উপন্যাস চুয়াডাঙ্গায় রচিত বলে দাবির জন্য নয়। শুধু কবির স্মৃতিবিজড়িত আটচালা ঘরটি সংরক্ষণের তাগিদকে সামনে নিয়েই লেখা আর কী! কারণ কবি যে এই ঘরেই অনেক দিন-রজনী কাটিয়েছেন, সে ব্যাপারে কারো দ্বিমত বা কোনো বিতর্ক নেই।

দামুড়হুদা উপজেলার ভৈরব নদের তীরবর্তী কার্পাসডাঙ্গা মিশনপাড়ার সরকার পরিবার ছিলো জ্ঞান-গরিমায় বেশ সম্ভ্রান্ত। এই পরিবারের সন্তান শ্রী মহিম সরকার চাকরির সুবাদে থাকতেন কোলকাতায়। কোলকতা আমহার্স্ট স্ট্রিটে তিনি সপরিবারে বসবাস করতেন। মহিম সরকারের সাথে কবি কাজী নজরুল ইসলামের খুবই সখ্য ছিলো। তার বাড়িতে কবির আসা-যাওয়া ছিলো আপনজনের মতো। কবির দুই মেয়ে আভা রাণী সরকার ও শিউলী রাণী সরকার নজরুল গীতি চর্চা করতেন। তাদের গানের তালিম দিতেন কবি কাজী নজরুল ইসলাম নিজে। পরবর্তীতে আভা রাণী সরকারের গানের রেকর্ডও বের হয়। প্রখ্যাত লেখক ড. আশরাফ সিদ্দিকী অনুসন্ধান করে নজরুলের কথা ও সুরে আভা রাণী সরকারের ছয়টি গানের রেকর্ড-তথ্য পান।

একাধিক তথ্যসূত্রে জানা যায়, মহিম সরকারের পারিবারিক আমন্ত্রণে একাধিকবার কবি নজরুল কার্পাসডাঙ্গায় এসেছেন। তবে ১৯২৬ সালে ২৭ বছর বয়সে কবি সপরিবারে এখানে বেড়াতে আসেন। এ সময় প্রায় দুই মাস কার্পাসডাঙ্গায় অবস্থান করেন তারা। তার সাথে এসেছিলেন শাশুড়ি গিরিবালা, স্ত্রী প্রমীলা ও বড় ছেলে বুলবুল। তারা কোলকাতা থেকে ট্রেনযোগে দর্শনায় নেমে ৬ মাইল গরুর গাড়িতে করে কার্পাসডাঙ্গায় আসেন। কার্পাসডাঙ্গা মিশনপাড়ার প্রয়াত শ্রী দ্বারিক নাথ ওরফে তেরেন সরকারের ভাষ্যমতে কবি কোলকাতা এবং কৃষ্ণনগর থেকে কয়েকবার কার্পাসডাঙ্গায় আসেন। ১৯৮৯ সালে চুয়াডাঙ্গা সাহিত্য পরিষদ থেকে একদল সাহিত্যিক নজরুলের ওপর আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন কার্পাসডাঙ্গায়। সেখানে কার্পাসডাঙ্গার বিপিন সরকার জানিয়েছিলেন, কবির সাথে বসে তাস খেলেছেন তিনি। পারিবারিক আমন্ত্রণে কবি নজরুলের কার্পাসডাঙ্গায় আগমন ঘটলেও স্বদেশি আন্দোলন বেগবান করার জন্য অনেক নেতাকর্মীর সঙ্গে গোপন বৈঠকও তিনি করেছিলেন বলে সে সময়কার অনেকেই মৃত্যুর আগে জানিয়ে গেছেন। তাদের মধ্যে দ্বারিক নাথ ওরফে তরেন বাবু অন্যতম। তার ভাষ্যমতে কার্পাসডাঙ্গা মিশন চত্বরে কয়েকটি ঝাউগাছ ছিলো। সেই গাছে একদিন একটি বিষধর সাপ দেখতে পান দ্বারিক। সাপটিকে মেরে ফেলেন তিনি। পরে কবি বিষয়টি জানতে পেরে ক্ষুব্ধ হন। এ কারণেই কবি নজরুল কার্পাসডাঙ্গায় রচনা করেন পদ্মগোখরা।

কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান প্রয়াত নসকর আলী ১৯৮৭ সালে কোলকাতায় গিয়েছিলেন। তখন জীবিত ছিলেন কার্পাসডাঙ্গার মহিম বিশ্বাসের মেয়ে আভা রাণী সরকার ও শিউলী রাণী সরকার। তাদের দুজনের সাথে কথা বলেন নসকর আলী। আভা রাণী ও শিউলী রাণী নিশ্চিত করেন নজরুল কয়েকবার কার্পাসডাঙ্গায় গিয়েছেন। কাজী নজরুল ইসলাম কার্পাসডাঙ্গার পার্শ্ববর্তী কুড়ুলগাছির গাঙ্গুলী ও মজুমদার বাড়িতেও কয়েকবার এসেছেন বলেও জানা যায়।

কার্পাসডাঙ্গার পার্শ্ববর্তী কোমরপুর গ্রামের কৃতী লেখক ছিলেন এম ইব্রাহিম। প্রয়াত এই মানুষটিই নজরুলকে কার্পাসডাঙ্গায় প্রথম কাগজে-কলমে তুলে ধরেন। তার লেখা নজরুল ও নিশ্চিন্তপুর গ্রন্থে নজরুলকে নিয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেছেন। এই গ্রন্থটি ১৯৯০ সালে প্রকাশ করেন এম ইব্রাহিম। যা আগে চুয়াডাঙ্গা থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক দর্পণ পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়। নজরুল ও নিশ্চিন্তপুর গ্রন্থে লেখা আছে, ‘নিশ্চিন্তপুর কার্পাসডাঙ্গার পূর্বপাড়ার নাম। নিকট অতীতে এখানে ছিলো নীল কুঠি, জমিদারি কোম্পানির সদর দফতর, পরে মেদিনীপুর জমিদারি কোম্পানির সদর দফতর। কার্পাসডাঙ্গা বাজারের পূর্ব পাশে প্রায় দেড়শ একর জমি ঘিরে বাঘাডাঙ্গা গ্রামের পশ্চিম দিকে নায়েব বাড়ি পর্যন্ত এলাকা নিশ্চিন্তপুর নামে পরিচিত ছিলো। কার্পাসডাঙ্গার ঐতিহাসিক এবং ঐতিহ্যবাহী এলাকা নিশ্চিন্তপুরের কোনো চিহ্ন নেই আর। খাতা-কলমেও প্রায় অবলুপ্ত। সর্বশেষ কার্পাসডাঙ্গার ডাকঘরটির নাম ছিলো নিশ্চিন্তপুর, কিন্তু তাও এখন হয়ে গেছে কার্পাসডাঙ্গা।’

কার্পাসডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক ইতিহাস গবেষক প্রয়াত এম এ বকর ও প্রয়াত লেখক এম ইব্রাহিম কার্পাসডাঙ্গার অনেক অজানাকে জানিয়ে গেছেন। লিখে গেছেন বই আকারে। কার্পাসডাঙ্গায় নজরুল এখন জাতীয়ভাবে প্রতিষ্ঠিত। কিন্তু এর গোড়ার কাজগুলো তারাই করে গেছেন। এ তাগিদকে সামনে নিয়ে ১৯৮৫ সালে কার্পাসডাঙ্গায় প্রতিষ্ঠিত হয় কার্পাসডাঙ্গা নজরুল স্মৃতি সংসদ। প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি ছিলেন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান নসকর আলী ও লেখক এমএ বকর ছিলেন সাধারণ সম্পাদক। আর এম ইব্রাহিম ছিলেন নির্বাহী সাধারণ সম্পাদক। তারা কেউই আজ বেঁচে নেই। কিন্তু তাদের দেখানো পথেই আজ কার্পাসডাঙ্গায় নজরুল সম্মেলনের উদ্বোধন হচ্ছে। এ প্রাপ্তিতে প্রয়াত সেসব ব্যক্তি চির স্মরণীয় হয়ে থাকবেন চুয়াডাঙ্গা জেলাবাসীর কাছে।

বর্তমানে কার্পাসডাঙ্গা নজরুল স্মৃতি সংসদের সভাপতি হিসেবে অধ্যাপক আবদুল গফুর ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে কলেজ শিক্ষক সাইফুল ইসলাম কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। বিশেষ করে সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দফতর ঘুরে ঘুরে আমাদের কার্পাসডাঙ্গার প্রাপ্য অধিকার আদায় করছেন। তাকে অভিনন্দন। এছাড়া আমি যদ্দুর জানি, ক্রীড়া সংগঠক কাওছার আলী, রবিউল হোসেন সুকলাল, জাহিদুর রহমান মুকুল, হরিহর বসু, আহমদ আলী মাস্টার, সিরাজুল ইসলাম মাস্টার, কার্পাসডাঙ্গা মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ হামিদুল ইসলাম, কার্পাসডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খায়রুল বাশার, কার্পাসডাঙ্গা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনিরুজ্জামান, শিক্ষক আফাজ উদ্দিন, কামরুজ্জামান রানাও নজরুলকে কার্পাসডাঙ্গায় জাতীয়ভাবে প্রতিষ্ঠিত করার ব্যাপারে দিন-রাত পরিশ্রম করেছেন। স্থানীয় সাংবাদিকদের মধ্যে হাসেম রেজা হাসমত, এম আর কচি, শরিফ রতন ও জিল্লুর রহমান মধু প্রমুখ সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। এছাড়া এমন অনেক ব্যক্তি আছেন যারা অগ্রণী ভূমিকায় না থেকে নেপথ্যে বড় ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন। সবার নাম আমার জানা নেই। বিশেষ করে কার্পাসডাঙ্গা নজরুল স্মৃতি সংসদের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলামের একটা দৃঢ় অঙ্গীকার ছিলো। তিনি বলেছিলেন, ‘কার্পাসডাঙ্গায় নজরুল জাতীয়ভাবে প্রতিষ্ঠিত রা হওয়া পর্যন্ত আমি এলাকাবাসী ও প্রশাসনের সহযোগিতা নিয়ে এগিয়ে যাবো।’ তিনি জানান, উপজেলা ও জেলা প্রশাসন এ ব্যাপারে আন্তরিকভাবে সহযোগিতা করেছেন বলেই আমরা কার্পাসডাঙ্গায় নজরুলকে জাতীয়ভাবে দেখতে পাচ্ছি।

কার্পাসডাঙ্গায় নজরুলকে মূলত আবিষ্কার করেন প্রয়াত লেখক এম ইব্রাহিম। তিনি ১৯৯০ সালের দিকে কার্পাসডাঙ্গাকে নজরুল নগর স্থাপনের দাবি জানান। ফলে তার ছেলে প্রকৌশলী এম ইনামুল হক একটা রূপরেখা তৈরি করে দেন। তবে বর্তমান অবস্থার প্রেক্ষিতে এই নজরুল নগরে কী কী নির্মাণ করা যায় তার একটা প্রস্তাব লিখেছেন কৃষিবিদ রফিকুল ইসলাম চৌধুরী। রাজধানীর আন্তর্জাতিক নজরুল চর্চা কেন্দ্রের গবেষণা সচিব কৃষিবিদ রফিকুল ইসলাম চৌধুরী চাকরির সুবাদে দীর্ঘদিন চুয়াডাঙ্গায় অবস্থান করেছেন। তিনিও কার্পাসডাঙ্গার মানুষের চাওয়া পাওয়ার সাথে একমত হয়ে কিছু দাবি জানিয়ে আসছেন। তার প্রস্তাবনার মধ্যে আছে কার্পাসডাঙ্গায় কবি নজরুল সাংস্কৃতিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা, নজরুল ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা, নজরুল-প্রমীলা স্মৃতি বিজড়িত আটচালা ঘর সংরক্ষণ, নজরুল মঞ্চ, নদীর ঘাটসহ বিভিন্ন স্থাপনা সংস্কার, কার্পাসডাঙ্গায় রেস্ট হাউস বা ডাকবাংলো নির্মাণ, প্রখ্যাত নজরুল সঙ্গীত শিল্পী সোহরাব হোসেন সঙ্গীত একাডেমি প্রতিষ্ঠা ও নজরুল গবেষক এম ইব্রাহিম পাঠাগার স্থাপন। কৃষিবিদ রফিকুল ইসলাম চৌধুরীর মতো আমরাও মনে করি এসব স্থাপিত হলে নজরুলের অসাম্প্রদায়িক চিন্তা ও তার সাহিত্যকর্ম দেশ-বিদেশে আরও প্রসার লাভ করবে।

কবি কাজী নজরুল ইসলাম কার্পাসডাঙ্গায় অবস্থানকালে একটি আটচালা ঘরে তার থাকার জায়গা হয়। যে খাটে তিনি ঘুমোতেন, যে আলমারিটা তিনি ব্যবহার করতেন তা আজও অক্ষত অবস্থায় আছে। কবির গুরুত্ব অনুভব করে তার স্মৃতি লালন করে আসছেন বংশ পরম্পরায় প্রকৃতি বিশ্বাস। কবি কাজী নজরুল ইসলাম এখানে মহিম সরকারের আমন্ত্রণে আসার পর এখানকার কংগ্রেস নেতা শিক্ষক হর্ষপ্রিয় বিশ্বাসের সাথে ভাব জমে তার। হর্ষপ্রিয় বিশ্বাস ছিলেন বর্তমান ভারতের শিমুলিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। ফলে শিক্ষিত মানুষ হিসেবে হর্ষপ্রিয় বিশ্বাসের সঙ্গে কবির বেশ খাতির জমে ওঠে। সেই সুবাদে আটচালা ঘরেই কবির থাকার জায়গা হয়। কবি যতবার এসেছেন এই ঘরেই থাকতে বেশি স্বাচ্ছন্দবোধ করতেন। আটচালা ঘরটি প্রথমত হর্ষপ্রিয় বিশ্বাসের উদ্যোগেই সংরক্ষণ করে রাখা হয়। পরবর্তীতে হর্ষপ্রিয় বিশ্বাসের ছেলে বাবু প্রদ্যুত বিশ্বাস বাবার ভূমিকা পালন করে যান। বর্তমানে কবির স্মৃতিবিজড়িত আটচালা ঘরটি সংরক্ষণ করে রেখেছেন হর্ষপ্রিয় বিশ্বাসের দৌহিত্র প্রকৃতি বিশ্বাস। ৯০ বছর ধরে বিশ্বাস পরিবার নিজ খরচে খড়ের ঘরটি সংরক্ষণ করে আসছে। কবি নজরুল কার্পাসডাঙ্গায় জাতীয়ভাবে স্বীকৃতি পেয়েছেন। তার পেছনে এই বিশ্বাস পরিবারের অবদান একেবারে খাটো করে দেখা যায় না। ইদানীং চুয়াডাঙ্গা জেলায় মাটির ঘর নেই বললেই চলে। যে কারণে কেউ খড়ের আবাদও করে না। কিন্তু এই বিশ্বাস পরিবারের সন্তান প্রকৃতি বিশ্বাস অনেক খুঁজে খড় জোগাড় করে প্রতি বছর ঘরটি ছেয়ে রাখেন। এ জন্য তার যেমন ভোগান্তি তেমনি খরচও একেবারে কম হয় না। আটচালা ঘরটি সংরক্ষণ ও দেখভালের জন্য একজন কেয়ারটেকার রাখার প্রয়োজন। প্রয়োজন ঘরটি স্থায়ীভাবে প্রশাসনের হস্তগত করা। এ কারণে প্রকৃতি বিশ্বাস যাতে না ঠকেন সেটিও জেলা প্রশাসন খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেবে বলে ভুক্তভোগীরা মনে করেন। এই ঘরটির পাশেই চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় দামুড়হুদা উপজেলা প্রশাসন ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে নজরুলের স্মৃতি ফলক নির্মাণ করেছে। একনজরেই যাতে নজরুলের কার্পাসডাঙ্গায় আগমনের বিষয়টি স্পষ্ট হতে পারেন পর্যটক-দর্শনার্থীরা।