সকলের জন্য সমান সুযোগ গড়ে সুষ্ঠু নির্বাচন কাম্য

 

 

এক তরফা নির্বাচনে ভোটারদের তেমন আগ্রহ থাকে না। ভোটে অনাগ্রহে অজান্তেই পুঞ্জীভূত হয় ক্ষোভ। পরবর্তীতে সুযোগ পেলে তার বহির্প্রকাশ ঘটে। উদাহরণ ভুরিভুরি। তার পরও কেন সকলের জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি করে ভোটারদের দৃষ্টিতে যোগ্য প্রার্থীকে নির্বাচিত করার পরিবেশ গড়ে তোলা হয় না? ক্ষমতার প্রভাব।

আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের সুষ্ঠুতা নিয়ে শুধু প্রশ্নই ওঠেনি, বহু ইউনিয়ন পরিষদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন। সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, প্রথম দফায় ঘোষিত তফশিলভুক্ত ইউনিয়নগুলোর মধ্যে ১১৪টিতে বিএনপির প্রার্থী নেই। কেন? বিএনপির অভিযোগ,  মনোনয়নপত্র জমা দেয়ায় বাধা, নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর জন্য প্রার্থীকে হুমকি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষপাতিত্ব, রিটার্নিং কর্মকর্তা কর্তৃক মনোনয়নপত্র গ্রহণ না করা ইত্যাদি।  সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন, অভিযোগগুলোর প্রতি কতোটা গুরুত্ব দিচ্ছে নির্বাচন কমিশন? পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, অভিযোগুলোর ব্যাপারে নির্বাচন কমিশন মূলত নির্বিকারত্ব দেখিয়ে চলেছে, যেন সেগুলো আমলে নেয়ার মতো নয়। ইসি সচিব তো বলেই ফেলেছেন, ঢালাও অভিযোগ আমলে নেয়া হবে না। তিনি এমন দাবিও করেছেন যে, ইসি এখন পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পায়নি।’ এরপরও কি নির্বাচন কমিশনকে নিরপেক্ষ বলা চলে? প্রথম কথা, ইসি ও রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে জমাকৃত অভিযোগগুলোর প্রতিটিই সুনির্দিষ্ট নয়- একথা বিশ্বাস করা কঠিন। অভিযোগ যখন করা হয়েছেই, নিশ্চয়ই সেখানে এমন কিছু তথ্য রয়েছে যা সুনির্দিষ্ট। এসব নিয়ে নির্বিকারত্ব কিংবা কোনো ধরনের শৈথিল্য নির্বাচনের সুষ্ঠুতাই শুধু বিঘ্নিত করবে না, নির্বাচন কমিশন হারাবে সাধারণ মানুষের আস্থা। নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়কের দাবি পাবে আমজনতার সমর্থন।

বর্তমান নির্বাচন কমিশন এ পর্যন্ত স্থানীয় সরকারের যেসব নির্বাচন পরিচালনা করেছে, তাতে এর দক্ষতা ও নিষ্ঠা দুটোই প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন কতটা সুষ্ঠু হবে, তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। নির্বাচন কমিশনের উচিত হবে সকল সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে থেকে সকলের জন্য সমান সুযোগ গড়ে সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করা।