স্টাফ রিপোর্টার: আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে শাসকদলের প্রার্থীদের জিতিয়ে দিতে নির্বাচন কমিশন (ইসি) মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। পাশাপাশি মনোনয়নপত্র জমা দিতে বাধা এবং তুচ্ছ অজুহাতে প্রার্থিতা বাতিলসহ বিভিন্ন করণে বিএনপির ১১৪টি ইউপিতে প্রার্থী থাকছে না বলেও জানিয়েছে দলটি। গতকাল শুক্রবার বিকালে রাজধানীর নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির যুগ্মমহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এসব কথা বলেন। এ সময় দলের কেন্দ্রীয় নেতা নাজিম উদ্দিন আলম, আসাদুল করিম শাহিন, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
রিজভী বলেন, নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য কমিয়ে দেয়া, এমনকি নির্দেশনাও শিথিল করার পরিকল্পনা করছে নির্বাচন কমিশন। কী উদ্দেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংখ্যা কমানো ও নির্দেশনা শিথিল হচ্ছে, কেনো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যসংখ্যা কেন্দ্রপ্রতি তিনজন করে কমিয়ে দেয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে, তা সবার কাছে অত্যন্ত সুস্পষ্ট। লিখিত বক্তব্যে রিজভী বলেন, আসন্ন নির্বাচনে এবারে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে কোনো জোরালো নির্দেশনা দেয়া হবে না বলে সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে। এসব পরিকল্পনা ও নির্দেশনার উদ্দেশ্যই হচ্ছে ইউপি নির্বাচনে শাসকদলের চেয়ারম্যান প্রার্থীদের জিতিয়ে দেয়ার মহাপরিকল্পনা। তিনি বলেন, ভোটারবিহীন সরকার গণতন্ত্রের যে ভগ্নদশা করেছে তাতে নিবেদিতপ্রাণ হয়ে বিগত কয়েক বছর ধরে সহযোগিতা করেছে এই নির্বাচন কমিশন। ইউপি নির্বাচনে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের জন্য আইন প্রয়োগকারী বাহিনীর সংখ্যা এবং নির্দেশনা শিথিল করা সেই সহায়তারই উলঙ্গ প্রকাশ। সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে গিয়ে ইসি সংঘর্ষের পক্ষপাতিত্ব ও শাসকদলের অনুকূলে ভোটকেন্দ্রের সংঘাতকে উস্কে দিচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। রিজভী বলেন, নির্বাচন নিয়ে ক্ষমতাসীনদের নানামুখী অনিয়ম এবং সংঘাত-সংঘর্ষ যা শুধু বিএনপি বা বিরোধী দলেরই অভিযোগ নয়, সংবাদপত্রেও প্রতিদিন এই সমস্ত ঘটনাবলী ছাপা হচ্ছে। কিন্তু কমিশন সেগুলি তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়ে জনগণের ভোট নিয়ে সরকারের ইয়ার্কি-ঠাট্টার সহচর হিসেবে সার্কাসের ভাঁড়ের মতো ভূমিকা পালন করছে। বিএনপির এই নেতার দাবি মনোনয়নপত্র জমা দিতে বাধা, হুমকি-ধমকি এবং তুচ্ছ অজুহাতে স্থানীয় নির্বাচন কর্মকর্তারা বিএনপি মনোনীত প্রার্থীদের প্রার্থিতা বাতিল করছেন। ফলে প্রায় ১১৪ জনের মতো বিএনপি মনোনীত প্রার্থীরা তাদের মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পারাসহ তাদের প্রার্থিতা হারিয়েছেন। আজ্ঞাবাহী কমিশন দিয়ে সরকার নির্বাচনী ব্যবস্থাকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়েছে বলেও মন্তব্য করেন বিএনপির এই যুগ্মমহাসচিব। এছাড়া বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে জড়িয়ে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর একটি বক্তব্যের সমালোচনা করে এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে রিজভী বলেন, যারা ওই সময় দেশকে অস্থিতিশীল করেছে এখন ক্ষমতার লোভে বড় বড় কথা বলছেন।