দর্শনা প্রতিনিধি: দর্শনা পৌর শহরকে উপজেলা করণের দাবি এখন সকলের। দর্শনাবাসীর প্রাণের দাবি পূরণে এমপি আলী আজগার টগরের আন্তরিক সহযোগিতার দিকে তাকিয়ে আছে সর্বমহল। দর্শনা ভৌগলিকভাবে সীমানা খুব দীর্ঘ না হলেও ইতিহাস, ঐতিহাসিক, সামাজিক এবং অর্থনৈতিকভাবে বাংলাদেশ ভূখণ্ড গঠিত হবার পূর্ব থেকেই অত্যন্ত সমৃদ্ধ একটি শহর। ১৯৩৮ সালে এশিয়ার মহাদেশের ২য় বৃহত্তর ও দেশের সর্ববৃহত চিনিকল কেরু অ্যান্ড কোম্পানি দর্শনায় প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর থেকেই এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক ভিত আরো মজবুত হয়। দর্শনায় কাস্টমস স্থাপিত হয় ১৯৫৮ সালে। দর্শনায় দেশের একমাত্র আন্তর্জাতিক রেলপথ যার মাধ্যমে ১৯৬৫ সালের পূর্বে ভারতের সাথে যাত্রিবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হয় দর্শনা স্টেশন থেকে। বর্তমানে যা দর্শনা আর্ন্তজাতিক স্টেশন নামে পরিচিত। মুক্তিযুদ্ধের সময় দর্শনার ভূমিকা ইতিহাসের মানচিত্রে আজও সমাদৃত। মুক্তিযুদ্ধের সময় টেলিফোন বা টেলিগ্রাফে দর্শনার কোড (ছদ্ম নাম) ছিলো DINGA।
যুদ্ধকালীন মুক্তিযোদ্ধাদের ভারতে পারাপার ও প্রশিক্ষণের ট্রানজিট পয়েন্ট ছিলো দর্শনা। সরকারের কোষাগারে রাজস্ব দেয়ার দিক থেকেও দর্শনা অনেক এগিয়ে। ২০১৩-১৪ অর্থ বছরেই দর্শনা রেলওয়ে ১৯ কোটি ৭৯ লাখ ৯৮ হাজার ২২৭ টাকা, কাষ্টমস সার্কেল ৩২ কোটি ৯৪ লাখ ৬০ হাজার টাকা, ও কেরু অ্যান্ড কোম্পানি রাজস্ব দিয়েছে ৭৪ কোটি ৩০ লাখ ৫৮ হাজার টাকা। এছাড়াও ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান পর্যায় থেকে সরকারের খাতায় রাজস্ব জমা পড়ছে প্রচুর। দর্শনার সাংস্কৃতিক পরিচয় আজও দেশব্যাপী সুনাম অর্জন করছে। দর্শনার এক সময়ের প্রশাসনিক পরিচয় ছিলো ইউনিয়ন যা ১৯৯১ সালে পৌরসভায় রূপান্তরিত হয়। বর্তমানে দর্শনা পৌরসভা ২য় শ্রেণির মর্যাদাপ্রাপ্ত। রাজনৈতিকভাবেও দর্শনার অবস্থান বেশ মজবুত। চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য হাজি আলী আজগার টগরসহ বিভিন্ন দলের কেন্দ্রীয় ও জেলা পর্যায়ের নেতাদের বসবাস দর্শনায়। দর্শনাকে উপজেলা করণের দাবি প্রায় ২ বছরের। দামুড়হুদার পারকৃষ্ণপুর-মদনা, কুড়ুলগাছি, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বেগমপুর, নেহালপুর, গড়াইটুপি ও তিতুদহ ইউনিয়ন নিয়ে দর্শনাকে উপজেলায় উন্নীত করণের ক্ষেত্রে সকলের রয়েছে আন্তরিক মনোভাব। এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম ফেসবুকে দর্শনাকে উপজেলার করণের দাবিতে আন্দোলনের ঝড় তুলেছে একটি মহল। বেশ সাড়া মিলেছে উপজেলা করণের ক্ষেত্রে। সুত্র বলেছে, ইতিমধ্যেই দর্শনা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রকে থানায় রূপ দেয়ার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছেন সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্তারা। ফলে উপজেলা করণের একধাপ এগিয়েছে দর্শনা। এদিকে দর্শনাকে উপজেলা করণের দাবিতে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নবাসিদের সাথে নিয়ে আন্দোলন রয়েছে অব্যাহত। দর্শনা প্রেসক্লাবের ব্যানারে আন্দোলনকারী বেশ সোচ্চার। এরই মধ্যে এ দাবি পূরণের লক্ষ্যে দর্শনায় মাঠে নামলো ছাত্রসমাজ। গতকাল রোববার বিকেলে দর্শনা সরকারি কলেজ মাঠে দর্শনাসহ আশপাশ এলাকার ছাত্ররা সমাবেশ করেছে। সমাবেশ থেকে দেয়া হয়েছে আন্দোলনের ডাক। আগামী ১৯ জানুয়ারি বেলা ১১টার দিকে মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। ছাত্রনেতা আলামিনের সভাপতিত্বে সভায় আলোচনা করেন ওয়েভ ফাউন্ডেশনের উপনির্বাহী পরিচালক আনোয়ার হোসেন, সাহিত্যিক আবু সুফিয়ান, হাবিবুর রহমান বুলেট, হারুন অর রশিদ, দর্শনা প্রেসক্লাব ও সাংবাদিক সমিতির সমন্বয়কারী মনিরুজ্জামান ধীরু, প্রেসক্লাব সভাপতি হানিফ মণ্ডল, সাবেক সভাপতি আওয়াল হোসেন, ছাত্রনেতা রফিকুল ইসলাম ববি, অভি, সুমন, মুকুল, মামুন, ব্রাইট, রমজান, রায়হান, রবিউল, চয়ন, জুয়েল, আকাশ, আরিফ প্রমুখ। দর্শনাবাসীর প্রাণের এ দাবি পূরণের জন্য চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য হাজি আলী আজগার টগরের আন্তরিকতা রয়েছে যথেষ্ট। তাই আবারো এমপি টগরের সুদৃষ্টি কামনা করা হয়েছে।