গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুর গাংনী পৌরসভা নির্বাচনে ভোটগ্রহণে প্রস্তুত প্রশাসন। কেন্দ্রের দায়িত্বের পাশাপাশি স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে মাঠে থাকছে পুলিশ, র্যা ব ও বিজিবি। দায়িত্ব পালন করবেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নির্বিঘ্নে ভোটগ্রহণের লক্ষ্যে সব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান রিটার্নিং অফিসার রোকনুজ্জামান।
১নং ওয়ার্ডে বাঁশবাড়িয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়, ২নং ওয়ার্ডে শিশিরপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৩নং ওয়ার্ডে চৌগাছা প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৪নং ওয়ার্ডে গাংনী পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, ৫নং ওয়ার্ডে পশ্চিম মালসাদহ প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৬নং ওয়ার্ডে গাংনী মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৭নং ওয়ার্ডে গাংনী পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজ, ৮নং ওয়ার্ডে গাংনী মহিলা কলেজ এবং ৯নং ওয়ার্ডে থানাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। নয়টি কেন্দ্রের প্রতিটিতে পুলিশ ১০জন, আনসার-ভিডিপি ১৪ জন সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। অতি গুরুত্বপূর্ণ ৫টি কেন্দ্রে আরো দুজন করে পুলিশ ও আনসার-ভিডিপি সদস্য দায়িত্বে থাকবেন। কেন্দ্রের নিরাপত্তার বাইরে পুলিশের ৫টি স্ট্রাইকিং ফোর্স থাকছে। এছাড়াও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে র্যা বের একটি দল ও এক প্লাটুন বিজিবি মাঠে নেমেছে। পাশাপাশি ছয়জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করবেন।
গত রোববার মধ্যরাত থেকে মোটরসাইকেল চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকলেও গতকাল রোববার মোটরসাইকেল চলাচল ছিলো প্রায় আগের মতোই। তবে নির্বাচনের কাজে নিয়োজিত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাহাত মান্নান ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। এ সময় শহরের কয়েকটি স্থান থেকে মোটরসাইকেল মালিকদের কাছ থেকে জরিমানা আদায় করেন তিনি। তবে দিনের বেশিরভাগ সময় ও সন্ধ্যার পর পর্যন্ত যত্রতত্র মোটরসাইকেল চলাচল করতে দেখা গেছে। আজ সকাল থেকেই মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়েছেন প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা।
১৭ দশমিক ১২ বর্গকিলোমিটার আয়তনের গাংনী পৌরসভা গঠিত হয় ২০০১ সালে। গাংনী পৌরসভায় সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী জনসংখ্যা প্রায় ৪০ হাজার। গত ১৮ নভেম্বর প্রকাশিত সংশোধিত ভোটার তালিকা অনুযায়ী মোট ভোটারের সংখ্যা ১৭ হাজার ৫৫৭ জন। এর মধ্যে নারী ভোটারের সংখ্যা বেশি। পুরুষ ভোটার ৮ হাজার ৫৫২ জন ও নারী ভোটার ৯ হাজার ৫ জন।
২০০৩ সালে গাংনী পৌরসভার প্রথম পৌর নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে চেয়ারম্যান পদে জয়লাভ করেন আমিরুল ইসলাম। নির্বাচনের অল্প কিছুদিন পর তিনি সন্ত্রাসীদের বোমা হামলায় নির্মমভাবে নিহত হলে ২০০৪ সালের শেষের দিকে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে জয়লাভ করেন আওয়ামী লীগ নেতা আহম্মেদ আলী। সর্বশেষ ২০১১ সালে অনুষ্ঠেয় পৌর নির্বাচনে আহম্মেদ আলী পুনঃনির্বাচিত হন। এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আহম্মেদ আলী (নৌক)। বিএনপির প্রার্থী ইন্সারুল হক ইন্সু (ধানের শীষ)। স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল ইসলাম ভেন্ডার (জগ)। ইসলামী আন্দোলন প্রার্থী হুজ্জাতুল ইসলাম ফয়সল (হাতপাখা) এবং জাতীয় পার্টি (এরশাদ) এসএম মর্তূজা বুলবুল (লাঙ্গল) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ৯টি ওযার্ডে কাউন্সিলর পদে ২৮ জন ও সংরক্ষিত ৩টি ওয়ার্ডে মহিলা কাউন্সিলর পদে ১০ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন। গতকাল প্রার্থীরা শেষ দিনের প্রচারণায় ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন। এখন ভোট প্রাপ্তির আশায় ভোটারদের মুখের দিকে তাকিয়ে আছেন। চলছে ভোটের চুলচেরা বিশ্লেষণ। ভোটরাও তাকিয়ে আছেন কি হচ্ছেন পৌর মেয়র ও সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড কাউন্সিলর তা দেখার জন্য।