মরুর কুয়েত সবুজ চাদরে ঢাকছেন চুয়াডাঙ্গার মেয়ে নাফিস জাহান জোয়ারদার
জাহিদুর রহমান ফিনতাস (কুয়েত থেকে): চুয়াডাঙ্গার মেয়ে নাফিস জাহান জোয়ারদার। মরুর কুয়েতকে সবুজ করে চলেছেন তিনি। গত দু দশক ধরে কুয়েতে, স্থানীয় বেসরকারি সংস্থা আল হাজারি কর্মাশিয়াল ব্যুরোর পরামর্শক হিসেবে কাজ করছেন ।
কৃষি প্রকৌশলী হিসেবে কুয়েতে পা রাখা প্রথম নারী নাফিস জাহান। তিনি একই সাথে ইরিগেশন অ্যান্ড ওয়াটার ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে পাস করা প্রথম বাংলাদেশি শিক্ষার্থীও। নিজের ধূসরতা আড়াল করে সবুজে সাজতে নাফিস জাহানকে সঙ্গী করতে দেরি করেনি রুক্ষ মরুভূমির দেশ কুয়েতও। সবুজায়নের সাথে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো কোনোরকম দেরি না করেই তাকে আপন করে নেয়। কৃষি প্রকৌশলী স্বামী ফকরুল ইসলাম ফারুকের হাত ধরে দু দশক আগে কুয়েতে পা রাখেন নাফিস জাহান। তখন রুক্ষ মরুভূমি সবুজের চাদরে ঢেকে দিতে নানা উদ্যোগ নিচ্ছিলো কুয়েত। প্রয়োজন পড়ছিলো যোগ্য আর যথার্থ জনবলের। ব্যাটে-বলে মিলে যাওয়ায় নাফিস জাহান যোগ দেন সবুজায়নের এই কর্মসূচিতে। সেই থেকে মরুভূমির বুক ঢেকে দিচ্ছেন সবুজের কার্পেটে। কুয়েতকে ৯টি গার্ডেন ডিস্ট্রিক্টে ভাগ করে একটি এলাকায় সবুজায়নের কাজ করছেন নাফিস জাহান। তিনি ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করে যোগ দেন ইক্ষু গবেষণা কেন্দ্রে। পরে ধান গবেষণা কেন্দ্রে। শেষে পাড়ি দেন এই কুয়েতে।
নাফিস জাহান জোয়ারদার জানান, মরুভূমিকে সবুজের উদ্যানে সাজাতে প্রয়োজন সেচ ও পানি ব্যবস্থাপনা। রুক্ষ মরুভূমির দেশে প্রতিটি স্থানেই নেটওয়ার্ক স্থাপন করা হয়েছে ভূগর্ভস্থ সেচ কার্যক্রমের। ডিজিটাল পদ্ধতিতে স্বয়ংক্রিয় সেচ ব্যবস্থাপনার কারণে ছোট বড় সব ধরনের গাছের গোড়ায় গোড়ায় নির্দিষ্ট সময়ে প্রয়োজনীয় পানিটুকু পৌঁছে যায়। তিনি জানান, ঐতিহ্যবাহী খেজুরের পাশাপাশি কার্পাস, আইসপ্লান্ট, আইপোমিরা, ওয়াশিংটনয়া, বাবলা প্রভৃতি গাছ দিয়েই সাজানো হচ্ছে মরুভূমিকে। তেল সমৃদ্ধ কুয়েতের পানীয় জলের উৎস আরব সাগর। সেখান থেকে নোনা জল নিয়ে যাওয়া হয় পরিশোধন কেন্দ্রে। পরে তা বিভিন্ন রিজার্ভার হয়ে পৌঁছে যায় গাছের গোড়ায়। কুয়েত সবুজায়নে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করা হয়েছে জানিয়ে এ বিশেষজ্ঞ জানান, সেচ ব্যবস্থাপনার নকশা প্রণয়ন ও খরচ নির্ণয় করাই তার মূল দায়িত্ব। নিজের মেধা আর পরিশ্রম ঢেলে কুয়েতে সবুজ বিপ্লব আরও এগিয়ে নেয়ার কথা বলেন বাংলাদেশের নাফিস জাহান জোয়ারদার।