আকরামুল হক বিশ্বাস খোকন বিপুল ভোটে পরিচালক নির্বাচিত

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় পল্লী বিদ্যুত সমিতির ৮ নম্বর এলাকার পরিচালক পদে নির্বাচন উৎসবমুখর পরিবেশে সম্পন্ন হয়েছে। নির্বাচনে ১৪ হাজার ২২১ ভোটারের মধ্যে ৪ হাজার ৯৩৬ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। সদর উপজেলার আলুকদিয়া ইউনিয়ন পরিষদে ভোটগ্রহণ করা হয়। এই ভোটে সদর উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহকরা ভোট প্রদান করেন। নির্বাচনে বাল্ব প্রতীকের প্রার্থী আকরামুল হক বিশ্বাস খোকন ৪ হাজার ৩৭৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। অপরদিকে একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী ছাতা প্রতীকের প্রার্থী আব্দুস সালাম পেয়েছেন ৪৪৩ ভোট । নির্বাচনে ২৮টি ভোট বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। এদিকে নির্বাচিত পরিচালকরা পল্লী বিদ্যুত সমিতি থেকে কোনো বেতন বা সম্মানি না পেলেও ভোটে প্রার্থীদের কয়েক লাখ টাকা খরচের বিষয়টি নিয়ে এলাকায় নানামুখী গুঞ্জন রয়েছে। অনেকেই প্রশ্ন করেছেন, বেতন সম্মানি ছাড়া একটি পদের জন্য কেন প্রার্থীরা এভাবে দু হাতে টাকা উড়িয়েছে তা সংশ্লিষ্ট সকলকে গভীরভাবে খোঁজ করা দরকার।
নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নিং কর্মকর্তা পল্লী বিদ্যুত সমিতির উপপরিচালক (অর্থ) মো. নুরুজ্জামান জানান, সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ করা হয়। দীর্ঘ ২৫ বছর পর এবারই প্রথম চুয়াডাঙ্গায় পল্লী বিদ্যুত সমিতির এলাকা পরিচালক পদে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হলো। ছাতা প্রতীকের প্রার্থী আব্দুস সালাম বলেন, ১৪ হাজার ২২১ ভোটার থাকলেও পল্লী বিদ্যুত সমিতি মাত্র ৭ হাজার আইডি কার্ড সরবরাহ করেছে। বাকি কার্ড নিয়মবহির্ভূতভাবে বাল্ব প্রতীকের প্রার্থী আকরামুল হক বিশ্বাস খোকন তৈরি করে ভোটারদের মাঝে সরবরাহ করেন এবং আইডি কার্ডের সাথে বাল্ব প্রতীকের একটি লিফলেট সংযুক্ত করে দেয়। এসব অভিযোগ আগে করেননি কেন? এর জবাবে বলেছেন, সংশ্লিষ্টরা সেদিকে নজরই দেননি। আকরামুল হক বিশ্বাস খোকন বলেন, আচরণ বিধি ভঙ্গের অভিযোগ সঠিক নয়। মোবাইলফোনে ভোটারদেরকে জানালে তারা স্বতস্ফুর্তভাবেই ভোটকেন্দ্রে এসেছেন। অনেক ভোটার দূর-দূরান্ত থেকে এসেছেন। মানবিক কারণেই ৫ হাজার খাবারের প্যাকেট সরবরাহ করা হয়েছে। তবে, ৫ হাজারেরও বেশি লোক এসেছে। এতো লোক ভোট দিতে আসবে তা কল্পনাও করা যায়নি। আলুকদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আক্তাউর রহমান মুকুল বলেন, এই ইউনিয়নে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হলেও পরিষদের স্বাভাবিক কাজকর্মের কোনো অসুবিধা হয়নি। তবে, খাওয়া দাওয়ার বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। ভোট চলাকালে চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুর সড়কের হাতিকাটা পল্লী বিদ্যুত সমিতির কার্যালয়ের সামনে থেকে আলুকদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ পর্যন্ত এক কিলোমিটার দীর্ঘ সময় ধরে যানজট চলতে থাকে। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইফুল ইসলামসহ পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এছাড়া, এসআই পিয়ার উদ্দিনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ সদস্য ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে ভোটগ্রহণ থেকে গণনা পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।
প্রসঙ্গত, ১৯৯০ সালে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় পল্লী বিদ্যুত সেবা কার্যক্রম শুরু করলেও কখনও ভোট হয়নি। প্রথম ১৯ বছর সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুল হক বিশ্বাস এবং বিগত ৬ মাস আকরামুল হক বিশ্বাস বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বিজয়ের পর প্রার্থী মো. আকরামুল হক বিশ্বাস ও তার ভাই চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুল হক বিশ্বাস, জাতীয় সংসদের হুইপ সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন এমপির বাসায় ছুটে যান। সৌজন্য সাক্ষাত করেন। হু্ইপ ছেলুন জোয়ার্দ্দার নব নির্বাচিত পরিচালককে অভিনন্দিত করে অর্পিত দায়িত্ব নিষ্ঠার সাথে পালনের আহ্বান জানিয়ে বলেন গ্রাহকদের সুবিধা তথা শতভাগ সেবা নিশ্চিত করতে পারলেই ওই পদে নির্বাচিত হওয়ার সার্থকতা মিলবে। বিজয়ীকে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের পক্ষেও অভিনন্দন ও ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়। এ সময় মো. আকরামুল হক বিশ্বাস খোকন বলেন, আমাকে নির্বাচিত করায় সকল ভোটার ও শুভাকাঙ্খীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।