আকাশে মেঘ দেখে বড়ি দেয়া গৃহিণীদের মন খারাপ

বৃষ্টি : চুয়াডাঙ্গায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কিছুটা বাড়লেও কমেছে সর্বোচ্চ তাপ

স্টাফ রিপোর্টার: পৌষের শুরুতে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ আর কুয়াশার মধ্যেই চুয়াডাঙ্গাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় হালকা বৃষ্টি হয়েছে। আবহাওয়া অফিস বলেছে, এই বৃষ্টির ফলে বাতাসের তাপমাত্রা আপাতত সামান্য বাড়তে পারে। তবে মাসের শেষ দিকে জেঁকে বসতে পারে শীত। চুয়াডাঙ্গায় গতপরশুর তুলনায় গতকাল কিছুটা তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলেও সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ তাপমাত্রার ব্যবধান কমে আসায় তীব্র শীত অনুভুত হয়েছে। গতকাল দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় দিনাজপুরে ৯ দশমিক ২ এবং দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো টেকনাফে ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শীতের তীব্রতায় দুস্থদের দুর্ভোগ লাঘবে গতকাল শুক্রবার চুয়াডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার শীতবস্ত্র বিতরণ করেছেন।
পৌষের শুরুতে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি আর আকাশ সারাদিন মেঘাচ্ছন্ন থাকার কারণে গতকাল শুক্রবার বহু পরিবারের দেয়া কুমড়ো-কলাইর বড়ি নষ্ট হয়েছে। তবে ফ্রিজের বদৌলতে ক্ষতির মাত্রা কমেছে। গতকাল চুয়াডাঙ্গা শহরতলী এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বহু বাড়িতেই গৃহিণীরা গতপরশু রাতে কলাই ভিজিয়ে কুমড়ো কুরে কুটার কাজ শেষ করে রাখেন। সকালে মেঘ দেখে মন ভারী হয়ে ওঠে সংশ্লিষ্ট পরিবারের গৃহিণীদের। অবশ্য অনেকেই তাদের কুটে রাখা বড়ির কাঁচামাল ফ্রিজে সংরক্ষণ করেছেন।
এদিকে আবহওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, গতপরশু মধ্যরাতেই চুয়াডাঙ্গায় শুরু হয় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। শুক্রবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ঢাকায় ১ দশমিক ২ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। ঢাকা ও চট্টগ্রামের মতো মাদারীপুর, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, কুমিল্লা, সাতক্ষীরা, যশোর, কক্সবাজার, কুতুবদিয়া, চাঁদপুরেও শুক্রবার সকালে বৃষ্টি হয়েছে। দুপুর পর্যন্ত এসব জায়গায় সূর্যের দেখা মেলেনি। আবহাওয়া অধিদফতর বলছে, উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। পাশাপাশি দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে রয়েছে স্বাভাবিক লঘুচাপ। মূলত এর প্রভাবেই হালকা বৃষ্টি হচ্ছে।
পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ মো. শাহিনুল ইসলাম বলেন, ‘আকাশে কিছু মেঘ আছে। তবে আজকের পর আর বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই।’
বর্তমানে ঢাকা, খুলনা ও রাজশাহী বিভাগে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে, যা আরও কয়েক দিন অব্যাহত থাকবে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের নদী অববাহিকার কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা দেখা যেতে পারে। তবে আগামী কয়েকদিন শীত বাড়ার সম্ভাবনা নেই বলে পূর্বাভাস কর্মকর্তারা জানান। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিলো দিনাজপুরে ৯ দশমিক ০২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অধিদফতরের পরিচালক মো. শাহ আলম জানান, ডিসেম্বরের শেষভাগে দেশের উত্তর, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে আরও ২/১টি মৃদু (৮-১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস) এবং মাঝারি (৬-৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস) শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।
এদিকে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণ শুরু হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কেএম মামুনউজ্জামান প্রচণ্ড শীতে কষ্ট পাওয়া দরিদ্র মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করেছেন। গতকাল শুক্রবার সকালে প্রকৃত দরিদ্র ও শীতার্ত নারী-পুরুষকে খুঁজে খুঁজে শীতবস্ত্র বিতরণ করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা সমবায় নিউমার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মাহফুজুর রহমান জোয়ার্দ্দার মিজাইল, মেহেরুল্লাহ মিলু, আজিজুল হক শীল প্রমুখ।