স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় পৌর নির্বাচন জমে উঠেছে। প্রার্থীরা নাওয়া খাওয়া ভুলে দিন রাত ছুটছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। কিভাবে ভোটারদের মন জয় করা যায় তা নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন তারা। একই সাথে তাদের প্রচার প্রচারণা চলছে মাইকে মাইকে। কর্মী সমর্থকরাও নিজ নিজ প্রার্থীদের প্রচার প্রচারণায় প্রশংসার পঞ্চমুখ হয়ে কাজ করছেন। বিলি করছেন হ্যান্ডবিল, লিফলেট। বিশেষ করে জেলা শহরের অলিতে গলিতে শোভা পাচ্ছে মেয়রসহ সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থীদের পোস্টার।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে হাজরাহাটি গ্রামের কয়েকটি স্থানে গণসংযোগ করেন বর্তমান মেয়র ও আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন। এ ছাড়া বাড়ি বাড়ি ঘুরে প্রচারণা চালান তিনি। বিশেষ করে দ্বারে দ্বারে ঘুরে নারী ভোটারদের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন এবং নৌকা মার্কায় ভোট প্রার্থনা করেন। বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় গনসংযোগকালে তিনি ভোটারদের উদ্দেশে বলেন, আপনাদের ভোটে নির্বাচিত হয়ে ২০০৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে চুয়াডাঙ্গা পৌরবাসীর সেবা নিশ্চিত করার জন্য নিরলসভাবে পরিশ্রম করে যাচ্ছি। যথা সময়ে নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কর্মচারীদের ডিজিটাল অ্যাটেনডেন্স সিস্টেম চালু করা হয়েছে। হাজরাহাটি গ্রামে জাইকা জাপানিজের অর্থায়নে একটি অত্যাধুনিক গভীর নলকূপ স্থাপনের কাজ হাতে নেয়া হয়েছে। অচিরেই এ কাজ শুরু হবে। ইতোমধ্যে হাজরাহাটি ও তালতলা গ্রামে পানির লাইন সম্প্রসারণ করা হয়েছে। মেয়র রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন গতকাল হাজরাহাটি, তালতলা ইসলামপাড়ায় গণসংযোগ করেন। এ সময় তার সাথে ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগ নেতা খুস্তার জামিল, জহুরুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার, কালাম, হাসানসহ নেতৃবৃন্দ।
বিকেলে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী খন্দকার আবদুল জব্বার সোনাকে দেখা যায় পৌর এলাকার ঈদগাহপাড়া এলাকায়। যাকেই সামনে পাচ্ছেন তাকেই জড়িয়ে ধরে ভোট প্রার্থনা করছেন। বিগত পৌরসভার দুটি নির্বাচনে যথাক্রমে চেয়ারম্যান ও মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন সোনা। সেই বিশ্বাস থেকে তিনি মনে করেন তার বিজয় এবার অবশ্যম্ভাবী। তাছাড়া তিনি মনে করেন ধানের শীষ মার্কা চুয়াডাঙ্গায় খুবই জনপ্রিয়। সেই হিসেবে বাড়তি ইমেজে আছেন সোনা। তিনি সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করেন এবং পৌরবাসীর কাছে ভোট ও দোয়া কামনা করেন। এ ছাড়া সোনা ইমারজেন্সি রোড, হাসপাতালপাড়া, ভিমরুল্লা, হাটকালুগঞ্জ, সিঅ্যান্ডবিপাড়া ও কেদারগঞ্জে গণসংযোগ করেন। তার সাথে দলীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
বেলা ১১টার দিকে দেখা হয় চুয়াডাঙ্গা পৌর নির্বাচনে একমাত্র স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী ওবায়দুর রহমান চৌধুরীর সাথে। সেসময় তিনি চুয়াডাঙ্গা বড়বাজার, সমবায় নিউ মার্কেটসহ আশপাশ এলাকায় গণসংযোগ করেন। রিকশা ওয়ালা, শ্রমিক, দোকানি, অটোচালক, পথচারীসহ সাধারণ মানুষের সাথে তিনি শুভেচ্ছা বিনিময় করে দোয়া ও ভোট চান। জিপু সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে বুকে জড়িয়ে নেন এবং দোয়া করতে বলেন। তিনি বলেন আমি, পৌরসভায় মেয়র নির্বাচিত হলে পৌর পিতা নই, পৌরবাসীর সেবক হতে চাই। জিপু গতকাল কোর্টপাড়া, কুলচারা ও তালতলায় গণসংযোগ করেন। তালতলা গ্রামে কয়েকটি উঠোন বৈঠকও করেন তিনি। এ সময় জিপু তার মোবাইলফোন মার্কায় ভোট প্রার্থনা করেন। জিপুর সাথে কর্মী-সমর্থকরা উপস্থিত ছিলেন।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী তুষার ইমরানও গণসংযোগ অব্যাহত রেখেছেন। তুষার ইমরান জানান, সম্ভবত তিনিই বাংলাদেশের সকল প্রার্থীর মধ্যে বয়সে সর্বকনিষ্ঠ মেয়র প্রার্থী। সেই হিসেবে তরুণদের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে। তারাই আমাকে বেশি ভোট দেবে বলে বিশ্বাস করি। তিনি গতকাল কোর্টমোড়, কেদারগঞ্জ, বেলগাছিসহ পৌর এলাকার বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করেন। এ সময় সকলের দোয়া ও হাতপাখা প্রতীকে ভোট প্রার্থনা করেন তুষার ইমরান। এ সময় তার সাথে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।