দামুড়হুদা প্রতিনিধি: দামুড়হুদার ঠাকুরপুর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত রুহুলের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে ভারতের কৃষ্ণনগর হাসপাতাল মর্গের হিমঘরে ৭ দিন রাখার পর গতকাল বৃহস্পতিবার শ্মশানে ফেলে দেয়া হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। বিষয়টি লোক মারফত জানতে পেরেছেন বলে জানিয়েছেন নিহত রুহুলের মা রাজিয়া খাতুন। তিনি বিজিবির প্রতি ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, বিজিবির অনীহার কারণেই ছেলের লাশ দেশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হলো না। বিজিবি যদি একটু সদয় হতো তাহলে অবশ্যই ছেলের মৃতদেহ দেশে ফিরিয়ে আনা যেতো। ছেলের মৃত্যু শোকে মূহ্যমান মা রাজিয়া কাঁন্নাজড়িত কণ্ঠে আরো বলেন, বিজিবির কাছে কতো কাকুতি মিনতি করলাম। তাদের কারণেই ছেলের মরা মুখটাও শেষ বারের মতো দেখা হলো না।
উল্লেখ্য, দামুড়হুদার সুবলপুর গ্রামের বাবলুর রহমানের ছেলে রুহুল গত ১০ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার দিনগত রাতে এলাকার ৪/৫ জন গরু ব্যবসায়ীর সাথে ঠাকুরপুর সীমান্ত দিয়ে অবৈধ পথে ভারতে যায়। রাত আনুমানিক সাড়ে ৩টার দিকে ভারতের ঢালীপাড়া সীমান্ত দিয়ে গরু পার করার সময় ভারতীয় মালুয়াপাড়া ক্যাম্পের ৮৯/৯১ মেন পিলারের কাছে বিএসএফ সদস্যরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। রুহুলের সাথে থাকা অন্যরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও রুহুল ঘটনাস্থলেই নিহত হয়। শুক্রবার সকালে ভারতের চাপড়া থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কৃষ্ণনগর হাসপাতালমর্গে নেয়। ভারতে বসবাসরত নিহত রুহুলের ফুফু লাশ শনাক্ত করেন। বিকেলে ময়নাতদন্ত শেষে লাশ কৃষ্ণনগর হাসপাতালমর্গের হিমঘরে রাখা হয়। ৭ দিন অতিবাহিত হওয়ার পরও কেউ লাশ গ্রহণ না করায় শেষমেষ গতকাল নিহত রুহুলের লাশ শ্মশানে ফেলে দেয়া হয়। এদিকে বিএসএফের গুলিতে রুহুল নিহত হওয়ার পর চুয়াডাঙ্গা-৬ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের পরিচালক এসএম মনিরুজ্জামান প্রেসবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানান, সুবলপুর গ্রামে নিখোঁজ বাংলাদেশি নাগরিক রুহুল আমিন এবং ভারতের অভ্যন্তরে নিহত ভারতীয় নাগরিক রুহুল মণ্ডল এক ব্যক্তি নয়। বিএসএফের গুলিতে যে রুহুল নিহত হয়েছে সে ভারতীয় নাগরিক। তার পিতার নাম কাশিম মণ্ডল। ভারতে স্থানীয় একটি বাড়িতে ডাকাতি করার সময় রাতে মালুয়াপাড়া বিএসএফ’র সাথে সংঘর্ষে সে নিহত হয়।