চুয়াডাঙ্গায় ছাত্রলীগের দাবি এসব এসব পুলিশের সাজানো নাটক
চুয়াডাঙ্গা শহীদ হাসান চত্বরে গত বৃহস্পতিবার রাতে ছাত্রলীগের দু কর্মীকে আটক করার ঘটনা নিয়ে পুলিশের ও ছাত্রলীগ কর্মীদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করার জন্য রাবার বুলেট, টিয়ারশেল ও লাঠিচার্জ করে। এ ঘটনায় ছাত্রলীগের ১০/১৫ জন নেতাকর্মী আহত হয়। তাদেরকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়। এদিকে পুলিশ সাংবাদিকদের নিকট দাবি করে ছাত্রলীগের হামলায় এএসপি ছুফিউল্লাহসহ ৪ কনস্টেবল আহত হয়েছে। এ হামলার ঘটনায় সদর থানা এসআই পিয়ার আলী বাদী হয়ে গত শুক্রবার রাতে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকসহ অজ্ঞাতনামা ৭০/৮০ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
এদিকে পুলিশের এএসপিসহ ৪ কনস্টেবল আহতের ঘটনাটি কাকতালীয় ও সাজানো নাটক বলে দাবি করেছেন জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাইমেন হাসান জোয়ার্দ্দার অনিক। তিনি এক বিবৃতিতে জানান, ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের আটকের একঘণ্টা পর হুইপ সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন এমপি, পৌর মেয়র রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন ও প্রশাসন একত্রে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে হুইপ ছেলুন থানা থেকে চলে আসেন। এরপর শহরবাসী ও সাংবাদিকবৃন্দ অবগত আছেন শহরে কোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। এদিকে রাতেই সংবাদ সম্মেলন করেন পুলিশ সুপার রশীদুল হাসান। এ সময় পুলিশ সুপারের বাম পাশে সুস্থ শরীরে দাঁড়িয়ে ছিলেন এএসপি ছুফি উল্লাহ। যা থানা চত্বরে উপস্থিত সাংবাদিকদের ক্যামেরাতে বন্দি হয়েছে।
বিবৃতিতে আরো বলা হয় পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে দীর্ঘ সময় সংবাদ সম্মেলন করা হয়। সংবাদ সম্মেলন শেষে সাংবাদিক ও জনতা থানা চত্বর ছেড়ে চলে যান। এ সংবাদ সম্মেলনের দু ঘণ্টা পর পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে কাকতালীয়ভাবে বেশ কিছু সাংবাদিককে মোবাইলফোনে ডেকে নেয়া হয়। এরপর সাংবাদিকদের দেখানো হয় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের হামলায় পুলিশের এএসপি ছুফি উল্লাহসহ ৪ কনস্টেবল মারাত্মক আহত হয়েছে। এ সংবাদটি পরেরদিন শুক্রবার স্থানীয় পত্রিকা প্রকাশিত হয়। তাহলে কীভাবে একজন সুস্থ পুলিশ কর্মকর্তা দু ঘণ্টার ব্যবধানে আহত হয়ে পড়লেন। আর এ আহতের ঘটনাটি ছাত্রলীগের হামলায় হয়েছে বলে দাবি করছে পুলিশ। যেটি মোটেও সত্য নয়। এটি পুলিশের একটি সাজানো নাটক বলে দাবি করেছেন জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাইমেন হাসান জোয়ার্দ্দার অনিক।
এদিকে ঘটনার রাতে ১টা ১৩ মিনিটে থানা থেকে সাংবাদিকদের কাছে মোবাইল করে এএসপি ছুফি উল্লাহকে আহত দেখানো হয়। এ আহতের ঘটনাটি হাস্যকর ব্যাপার। এজাহারে সিপাহীদের নাম আছে কিন্তু এএসপি ছুফি উল্লার নাম নেই। অথচ ছবিতে দেখা যাচ্ছে এএসপি ছুফি উল্লাহ আহত হয়েছেন। এছাড়া আরও উল্লেখ করা হয়েছে, গত বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে বোমার আঘাতে আহত জেলা ছাত্রলীগের প্রচার সম্পাদক আব্দুর রহমান, কলেজ ছাত্রলীগের গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক মেহেদী হাসান হিমেল ও ছাত্রলীগ নেতা সাদ্দাম হোসেন। এসব নেতারা আহত হয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। গতকাল শনিবার হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি ফিরেছে। অথচ সদর থানা পুলিশ বাদী হয়ে এ আহত নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ঘটনা থেকে বোঝা যায় পুলিশের দায়েরকৃত মামলাটি মিথ্যা ও বানোয়াট।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মারামারি ও ভাঙচুর মামলার আসামি ছাত্রলীগ সদস্য আসাদ ও খালিদ মাহমুদকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বিষয়টি জানতে ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ রাত সাড়ে ৯টার দিকে থানায় যান। ওসি সাইফুল ইসলাম আটক দু জনের বিষয়টি অস্বীকার করলে পুলিশের সাথে ছাত্রলীগের কর্মীদের কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে লাঠিচার্জ ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। প্রেসবিজ্ঞপ্তি।