জীবননগর ব্যুরো: আসন্ন জীবননগর পৌরসভা নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ মুন্সি নাসির উদ্দীনকে মনোনয়ন প্রদানের প্রতিবাদে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় জাগ্রত জনতার কর্মী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে উপজেলা বাসস্ট্যান্ড চত্বরে মুন্সি নাসির উদ্দীনের মনোনয়ন প্রদানের প্রতিবাদে ও তা বাতিলের দাবিতে জাগ্রত জনতার এ কর্মী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
জীবননগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি উপজেলা চেয়ারম্যান আবু মো. আব্দুল লতিফ অমল বলেন, দেশে যখন মানবতা বিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চলছে তখন কুখ্যাত রাজাকার সালাউদ্দীন কাদের চৌধুরী ও আলী আহসান মুজাহিদের প্রধান আইনজীবী ব্যারিষ্টার মুন্সী আহসান কবিরের বড় ভাই মুন্সি নাসির উদ্দীনকে আসন্ন জীবননগর পৌর নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করাকে সমগ্র উপজেলাবাসী মানতে নারাজ। যুদ্ধাপরাধীর প্রধান আইনজীবীর ভাই মুন্সি নাসির উদ্দীনকে পৌর মেয়র হিসেবে মনোনীত করাকে জীবননগর আওয়ামী লীগ, উপজেলা আওয়ামী লীগ ও পৌর আওয়ামী লীগ কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছে না। গতবারে পৌর নির্বাচনে মাত্র ২৬ ভোটে পরাজিত জীবননগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমকে পুনরায় মেয়র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দিতে জেলা ও কেন্দ্রীয় নের্তৃবৃন্দের কাছে সমাবেশ থেকে সকলে দাবি করেন। তিনি আরো বলেন, জীবননগর উপজেলা আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র চলছে। উপজেলা আওয়ামী লীগের কিছু মুস্তাক মার্কা নের্তৃবৃন্দ ও কিছু মীর জাফর মার্কা সেনাপ্রধান রয়েছে যারা জামায়াত-বিএনপির সাথে যোগাযোগ করে। আওয়ামী লীগের কোনো দলীয় প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করে না, জনগণের পাশে থাকে না বরং দলীয় প্রোগ্রাম হলে তার বিরোধিতা করতে ব্যস্ত থাকে। তাই আসন্ন পৌর নির্বাচনে মুন্সি নাসির উদ্দীনকে পরিবর্তন করে জাহাঙ্গীর আলমকে মনোনয়ন প্রদানের জন্য মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় জাগ্রত জনতার কর্মী সমাবেশ থেকে জেলা ও কেন্দ্রীয় নের্তৃবৃন্দের কাছে এ দাবি জানানো হয়। সমাবেশ শেষে মুন্সি নাসির উদ্দীনের কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়।
সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, জীবননগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মেয়র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম, জীবননগর থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সেকেন্দার আলী, সীমান্ত আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজি আ. মালেক মোল্লা, উথলী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আ. হান্নান, সাধারণ সম্পাদক সোহরাব হোসেন খান, আন্দুলবাড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছোট সাত্তার, হাসাদাহ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি রবিউল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দীন জালাল, বাঁকা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা ফরজ উদ্দিন, ফুটবলার মোজাম্মেল হক এবং পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকবৃন্দ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন যুবলীগ নেতা খাইরুল বাসার শিপলু, শরিফুল ইসলাম ওরফে ছোটবাবু, জীবননগর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সোয়েব আহম্মেদ অঞ্জন, জীবননগর ডিগ্রি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান, পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল আলম মানিকসহ পৌর এলাকার বিভিন্ন নেতাকর্মী।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী আগামী ৩০ ডিসেম্বর বাংলাদেশের ২৩৪টি পৌরসভায় একই দিনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই সর্বপ্রথম বাংলাদেশে প্রতিটি দলের মনোনীত প্রার্থী নিজের দলের প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করতে পারবেন। তারই পরিপেক্ষিতে গত রোববার মনোনয়ন প্রাপ্তির লক্যেনো জীবননগর উপজেলা থেকে আওয়ামী লীগের ৩ প্রার্থী জেলা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বরাবর আবেদন করেন। বেলা ১০টার দিকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের চুয়াডাঙ্গা জেলা কার্যালয়ে সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থী হিসেবে প্রতিটি উপজেলার সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের ভোটগ্রহণ শেষে দলীয়ভাবে মনোনীত হন মুন্সি নাসির উদ্দিন।