কেনই বা বাল্যবিয়ের আয়োজন, আর কেনই বা তা রোধে সামাজিক আন্দোলনের পাশাপাশি প্রশাসনিক পদক্ষেপ? পক্ষে-বিপক্ষে যুক্তি আছে। কোনো পক্ষের যুক্তি দুর্বল, কোনো পক্ষের সবল। সবল যুক্তিই গ্রহণযোগ্য।
বাল্যবিয়ে মানে অপ্রাপ্ত বয়সে বিয়ের আয়োজন। সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন, প্রাপ্তবয়স হতে কতোটা বসন্ত পার করতে হয়? কিশোরীর যতোটুকু বয়সেই ঋতুস্রাব হোক না কেন, তাকে প্রাপ্তবয়ষ্ক বলা হবে তখনই যখন ১৮ বছর পূর্ণ হবে। আর ছেলেদের বেলায় দরকার ২১ বছর। গড় আয়ুতে এটা উঠতি বয়সই শুধু নয়, জীবনটাকে জানা বোঝারও বয়স বটে।
এই উপমহাদেশে এক সময় অপ্রাপ্ত বয়সেই বিয়ের রেওয়াজ ছিলো। শিশুকালে বিয়ে মানেই কুড়িতে বুড়ি হওয়া। জীবনকে অকালেই অসহ্য করে তোলা। দাম্পত্যের সুখকে অসহনীয় যন্ত্রণার কারণ করে তোলা। মূলত এসব কারণেই প্রাপ্ত বয়সের আগে বিয়ে বারণ। মুখে বলে যখন তেমন কাজ হয় না, তখন আইন করে শাসনের আওতায় নেয়া ছাড়া উপায় থাকে না। আইন করা হয়েছে। আইনের প্রয়োগও করা হচ্ছে। তারপরও কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌছুনো যাচ্ছে না কেন? আন্তর্জাতিক জরিপে বার বার উঠে আসছে আমাদের লজ্জার সূচক।
বাল্যবিয়ে আয়োজনের নানা কারণ রয়েছে। ভালো পাত্র হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে বলে যেমন সর্বক্ষেত্রেই বিয়েতে তড়িঘড়ি নয়, তেমনই স্কুল-কলেজের রাস্তায় উত্ত্যক্তকারীদের উৎপাতের কারণেই যে সব সময় বাল্যবিয়ের আয়োজন করা হয় তাও নয়। অসচেতনতাও অনেকটা দায়ী। বুঝে শুনেও কি কোনো পিতা তার সন্তানের ক্ষতি চায়?
বাল্যবিয়ের আয়োজনে গিয়ে হাড়ি উল্টোনোর চেয়ে আগেই রুখতে হবে। ছড়াতে হবে সচেতনতার আলো। শক্ত হাতে বন্ধ করতে হবে উত্ত্যক্তকারীদের উৎপাত। বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে চলমান গণআন্দোলন বয়ে আনুক কল্যাণ।