একই নম্বরের ৩টি মোটরসাইকেল উদ্ধার এবং
শত শত মোটরবাইকের মধ্যে কতোটা চোরাই? চুয়াডাঙ্গায় একই নম্বর লেখা দুটি চোরাই মোটরসাইকেল উদ্ধারের পর প্রশ্নটি সঙ্গত কারণেই সচেতন মহলের মুখে মুখে। অবাক হলেও সত্য যে, চোরাই উচ্চমূল্যের মোটরসাইকেল দুটি পৃথক দিনে পৃথক স্থান থেকে উদ্ধার করেছে চুয়াডাঙ্গা ট্রাফিক পুলিশ। অবশ্য চোরাই মোটরসাইকেল দুটির সাথে চোর বা চোরের সহযোগী ধরা পড়েনি। সর্বশেষ খবরে জানা গেছে, একই নম্বরের আরো একটি মোটরসাইকের গতকাল বৃহস্পতিবার চুয়াডাঙ্গা ট্রাফিক পুলিশ উদ্ধার করেছে। সটকে পড়েছে চালক।
শুধু চুয়াডাঙ্গায়ই নয়, গোটা দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলেই বেড়েছে মোটরসাইকেল বিক্রি। চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, ঝিনাইদহ ও কুষ্টিয়ায় যেন হাতে হাতে। শুধু পানবরজেই নয়, ভূট্টার আবাদেও গ্রামবাংলার চাষিদের হাতে এনে দিয়েছে নগদ টাকা। তারই আংশিক বহির্প্রকাশ মোটরসাইকেলের দাপট। আর শহরকেন্দ্রিক ভিন্ন কিছু বিষয় আছে। তা প্রাসঙ্গিক হলেও বলতে পারা না পারার বিষয়টি অবশ্য প্রশ্নবিদ্ধ। মোটরসাইকেলের বিক্রি ব্যবহার যেমন বেড়েছে, তেমনই বৃদ্ধি পাচ্ছে নতুন নতুন মডেল আর গতিবৃদ্ধির প্রতিযোগিতা। পড়শি দেশে প্রস্তুতকৃত মোটরসাইকেল বৈধভাবে আমদানি করা হলেও অবৈধভাবে সীমান্ত গলিয়ে যে আসছে না তা নয়। এসব মোটরসাইকেলকে টানা মোটরসাইকেল বলা হয়। রেজিস্ট্রেশন করা যায় না। তবে চুয়াডাঙ্গা ট্রাফিক একই নম্বর লেখা যে মোটরসাইকেল দুটি উদ্ধার করেছে তা অবশ্য পড়শি দেশের তৈরি নয়, জাপানি। এতেই বিষয়টি স্পষ্ট মোটরসাইকেল ৩টি চোরাই। টানা মোটরসাইকেলেও ভুয়া নম্বরপ্লেট থাকে। দিব্যি চলে। কালেভাদ্রে ধরা পড়ে। অধিকাংশই চলে রাজনৈতিক ক্ষমতার প্রভাবে আবেদিত বা কিছু না লিখে। অথচ শোরুম থেকে বের হলেই তার রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক।
দেশে অতো বড় সড়ক নেই, নেই তেমন কর্মস্থলে যাওয়া-আসার লম্বাপথও। দূরে রোজ যাওয়া-আসার ধকল না থাকলেও অতোটা গতির মোটরসাইকেল কেন দরকার? শখ! তাছাড়া হেডলাইট হেলোজেন কেন? বিপরীতমুখি যানবাহনের চালকের কি দশা হয় তা ওই ধরনের মোটরসাইকেল আমদানির অনুমোদন দেয়া কর্তারা কি অনুধাবন করেছেন? দেশের বাস্তবতায় এসব অবশ্য বাচালতা। ট্রাফিক পুলিশ তিনটি চোরাই মোটরসাইকেল উদ্ধার করেছে। উদ্ধার করা মোটরসাইকেল তিনটি পাশাপাশি রাখা হয়েছে। দেখা গেছে তিনটি নম্বর প্লেটে একই নম্বর লেখা। যেহেতু দেশে ফিটনেস না থাকলেও সনদ মেলে। কালো ধোয়া ছাড়লেও তা দিব্যি চলে উচ্চ শব্দে। আর শ্যালোইঞ্জিনচালিত অবৈধ যান তো অঘোষিত বিশেষ বৈধতা নিয়েই রাস্তায় দৈত্যের মতো দাপিয়ে বাড়ায় দিন-রাত। মোটরসাইকেল বাড়ছে হররোজ, চলছে হরদম। দুর্ঘটনা? ভাগ্যিস অতোটা ঘটে না, যতোটা বেপরোয়াভাবে চলে বৈধ-অবৈধ হরেক কিসিমের যানবাহন। ট্রাফিক আইন? চুয়াডাঙ্গার শহীদ হাসান চত্বরে খানেকক্ষণ দাঁড়ালেই দেখা যাবে আইন অবজ্ঞার ধরন। কর্তব্যরতদের অসহায়ত্ব। এর মধ্যে চোরাই ৩টি মোটরসাইকেল উদ্ধার সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে। অভিবাদন।
অনেক সময়ই অপরাধীরা অপরাধমুলক কাজে মোটরসাইকেলকে বাহন হিসেবে কাজে লাগায়। এর রেজিস্ট্রেশন নম্বর থাকলে অপরাধী শনাক্ত করা সহজ হয়। সরকার পায় রাজস্ব। অবশ্য যে মতলববাজ সে অপরাধমূলক কাজ করতে যাওয়ার সময় তা বদলেও যে নিতে পারে না তা নয়। ট্রাফিক আইনের যথাযথ প্রয়োগ থাকলে ভুয়া রেজিস্ট্রেশনের বা ভুয়া নম্বরের আধিক্য বা রমরমা যে থাকবে না তা বলাই বাহুল্য। তাছাড়া একই রেজিস্ট্রেশন নম্বরের তিনটি মোটরসাইকেল উদ্ধারের পর সংশ্লিষ্টদের ধরে আইনে সোপর্দ করা অপরিহার্য হয়ে পড়েছে।