আওয়ামী লীগ যুবলীগ ছাত্রলীগের ৩১ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে পৃথক মামলা

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় যুবলীগ কর্মী আজিজুল খুনের ঘটনায় আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। খুনের ৯ দিনের মাথায় ওই ঘটনায় আহত আওয়ামী লীগ কর্মী বুদো গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে মামলাটি দায়ের করেন। চুয়াডাঙ্গা চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত মামলাটি এফআইআর হিসেবে গণ্য করার জন্য সদর থানাকে নির্দেশ দিয়েছেন। আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে মামলাটি দায়ের করা হয়।
গত ১৬ নভেম্বর চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার মানিকদিহি গ্রামের যুবলীগ কর্মী আজিজুল ইসলামকে ছুরিকাঘাতে ও কুপিয়ে খুন করা হয়। একই সময় এলাকার আওয়ামী লীগ কর্মী বুদো ছুরিকাহত হন। আহত বুদোকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল থেকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে বুদো চুয়াডাঙ্গা চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির হয়ে আজিজুল নিহত হওয়ার ঘটনায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। নিহত যুবলীগ কর্মী আজিজুল ইসলাম তার গ্রাম সম্পর্কের ভাতিজা বলে বুদো মামলায় উল্লেখ করেন। মামলার ৩১ আসামির মধ্যে রয়েছেন যুবলীগ নেতা নঈম হাসান জোয়ার্দ্দার, ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক অনিক হাসান জোয়ার্দ্দার, যুবলীগ নেতা আবদুল কাদের, গোলাম মোস্তফা লালা, চুয়াডাঙ্গা পৌর মেয়র রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন, জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক খুস্তার জামিল, ছাত্রলীগ নেতা তারিক হাসান, জেলা যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক আরেফিন আলম রঞ্জু, সাতগাড়ি নতুনপাড়ার খালিদ, কয়রাডাঙ্গা গ্রামের তহিদুল ইসলাম ফকা, একই গ্রামের দেলোয়ার হোসেন দিপু, হাঁপানিয়া গ্রামের হাবিবুর রহমান মন্টু, চুয়াডাঙ্গা মাস্টারপাড়ার হিমেল, আরামপাড়ার অভি জোয়ার্দ্দার, ডিঙ্গেদহের আবুল কালাম, সুবিদয়া গ্রামের আবু তাহের, জালশুকা গ্রামের আশাদুল, শঙ্করচন্দ্র গ্রামের আব্বাস, ডিঙ্গেদহের হারুন, শঙ্করচন্দ্র গ্রামের মাহফুজ, সুবদিয়া গ্রামের হিরা, বনফুল, ফরহাদ, নজু, মোজাম, লিয়াকত ও নুর ইসলাম, নফরকান্দি গ্রামের রহমত, ডিঙ্গেদহের বশির, সুবদিয়ার জাহাঙ্গীর ও আব্দুল হাইসহ অজ্ঞাত ১৫-২০ জন। এ মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ১৫-২০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক ড. এবিএম মাহমুদুল হক মামলাটি এফআইআর হিসেবে গণ্য করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন। মামলার আইনজীবী হিসেবে ছিলেন মো. মইন উদ্দীন মইনুল। মামলার বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুল মালেক গতকাল বিকেলে জানান, ‘এ ধরনের একটি মামলা হয়েছে বলে শুনেছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে আদলতে খোঁজখবর নিচ্ছি।’
প্রসঙ্গত, গত ১৬ নভেম্বর সন্ধ্যায় মানিকদিহি গ্রামের যুবলীগ কর্মী আজিজুল ইসলাম নিহত হন। আজিজুল হক হত্যার ঘটনার একদিন পর ১৮ নভেম্বর আজিজুলের স্ত্রী ডলি খাতুন বাদী হয়ে যুবলীগের বতিলকৃত চুয়াডাঙ্গা আহ্বায়ক কমিটির আহ্বায়ক ওবাইদুর রহমান চৌধুরী জিপুসহ ৩৩ জনকে আসামি করা হয়। এ মামলা দায়েরের এক সপ্তার ব্যবধানে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের ৩১ নেতাকর্মীর নামে পৃথক আর একটি মামলা দায়ের করা হলো। একই ঘটনায় পৃথক দুটি মামলায় পৃথক আসামি করায় পুলিশি তদন্তে বিষয়টি শেষ পর্যন্ত কোন দিকে গড়ায় সেটাই এখন দেখার অপেক্ষা।