ইবি ছাত্রের স্মার্টফোন নিয়ন্ত্রিত রোবট আবিষ্কার

ইবি প্রতিনিধি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্র স্মার্টফোন নিয়ন্ত্রিত একটি রোবট আবিষ্কার করেছেন। কোনো কিছু উদ্ধার করা বা তথ্য সংগ্রহ করার কাজে এটি ব্যবহার করা যাবে। দূর্গম বা বিপদজনক স্থানে গমন করে কোনো কিছু উদ্ধার বা তথ্য সংগ্রহ করা এমনকি বোমা নিস্ক্রিয় করার কাজেরও ব্যবহার করা যাবে রোবটটি। গতকাল রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসকর্নারে রোবটটি সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা দেন আবিষ্কারক বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত পদার্থ বিজ্ঞান, ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র এএসএম শামীম হাসান।
শামীম জানান, রোবটটির সব কিছু একটি স্মার্টফোন মোবাইল দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। রোবটটির আকৃতিগত বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, রোবটটিতে সামনে একটি ক্যামেরা আছে যেটি ১৮০ ডিগ্রি পর্যন্ত ডানে ও বামে ঘুরে চারিদিকের যেকোনো বস্তুর ভিডিও ধারণ করে সেটি তারবিহীনভাবে টিভির মনিটরে পাঠাতে পারবে। রোবটটির ক্যামেরার সাথে একটি মাইক্রোফোন আছে যার সাহায্যে এটি ভিডিও ধারণের পাশাপাশি শব্দ তরঙ্গ পাঠাতে পারে। ধারণ করা ভিডিও টিভির মনিটরে দেখা যাবে যার ফলে চালক রোবটটিকে না দেখে এই ভিডিও টিত্রটি দেখে রোবটটিকে কাঙ্খিত স্থানে চালিয়ে নিয়ে যেতে পারবে। রোবটটির একটি হাত আছে যার দ্বারা এটি বর্তমানে ৫০ গ্রাম কোনো বস্তুকে তুলে আনতে পারবে। রোবটিতে তৈরিতে অ্যাটমেল সিরিজের একটি মাইক্রো কন্ট্রোলার আইসি, একটি ব্লুটুথ ভিভাইস, ৩টি সার্ভেমোটর, ২টি ডিসি মোটর, একটি ক্যামেরা, একটি অডিও অ্যাম ও একটি ভিডিও ট্রান্সমিটার ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়া এটি চলাচলের জন্য তিনটি চাকা ব্যবহার করা হয়েছে। শামীম জানান, রোবটটিতে চেইনযুক্ত চাকা ব্যবহার করা হলে এটি দুর্গম স্থানে সহজেই পৌঁছাতে পারবে। ৪০-৫০ মিটার দূরত্ব থেকে রোবটটিকে স্মার্টফোন দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। এতে ওয়াইফাই ব্যবহার করা গেলে নিয়ন্ত্রণের দূরত্ব আরও বাড়বে বলে জানান তিনি। রোবটটি তৈরিতে আমার ৩ মাস সময় লেগেছে এবং ৬ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। রোবটটির আকৃতি বাড়ানো এবং এটি তৈরিতে আধুনিক সরজ্ঞামাদি ব্যবহার করা হলে এর কাজের পরিধি বাড়বে।
শামীম বিভাগীয় কোনো শিক্ষকের সহযোগীতা ছাড়াই রোবটটি তৈরি করেছে। এর আগে ওয়াটার লেভেল কন্ট্রোলার, অটোমেটিক সোলার ট্রেকার, স্মার্টফোন কন্ট্রোল হোম সিকিউরিটি, হোম লক অ্যাপ্লায়েন্স, অটোমেটিক জেনারেটর ভোল্টেজ কন্ট্রোলার অ্যান্ড স্টাবলাইজার, অটোমেটিক ফ্যান কন্ট্রোলার, সোলার বেড হোম অ্যাপ্লায়েন্স তৈরি করে ক্ষুদে আবিষ্কারক হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিতি লাভ করেন। শামীমের বাড়ি কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার আমলা ইউনিয়নের মহদীপুর গ্রামে। বর্তমানে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত পদার্থ বিজ্ঞান, ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র। বড় হয়ে একজন আবিষ্কারক হিসেবে পরিচিত পেতে চান শামীম।
শামীমের আবিষ্কারের বিষয়ে বিভাগীয় শিক্ষক অধ্যাপক ড. মমতাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমি রোবটটি দেখিছি। এটি একটি ইন্টালিজেন্ট রোবট। এটিকে একটি নির্দিষ্ট আকৃতি দেয়া সম্ভব হলেও এটি তৈরিতে উন্নত সরঞ্জামাদি ব্যবহার করা হলে বড় বড় শিল্প-কারখানা ও বিভিন্ন দূর্যোগে উদ্ধার কাজে ব্যবহার করা যাবে।’