প্রযুক্তি শিক্ষার পাশাপাশি প্রয়োজন বিতর্কের মতো সৃজনশীল অনুষ্ঠান

OLYMPUS DIGITAL CAMERA

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী পর্যায়ে বিতর্ক প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে ব্র্যাক শিক্ষা কর্মসূচি (পেইস) চুয়াডাঙ্গার আয়োজনে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী পর্যায়ে বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা ব্র্যাক প্রতিনিধি জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আনজুমান আরা। বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা শিক্ষা অফিসার খন্দকার রুহুল আমীন। বিচারকমণ্ডলী ছিলেন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল মতিন, জীবননগর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আমজাদ হোসেন ও আলমডাঙ্গা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা দীনেশ চন্দ্র পাল।

প্রধান অতিথি বলেন, শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তি শিক্ষার পাশাপাশি, বিতর্কের মতো সৃজনশীল অনুষ্ঠান যতো বেশি আয়োজন করা যাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বন্দ্ব-সহিংসতা ততো কমে যাবে। বৃক্ষরোপণ ও সংরক্ষণের মাধ্যমে শুধু পরিবেশের সুরক্ষা নয়, নিজের অস্তিত্ব রক্ষার পাশাপাশি ভাগ্যও পরিবর্তন করা যায়। এর অনেক নজির রয়েছে দেশে। কানাডার জাতীয় পরিবেশ এজেন্সির একটি গবেষণা প্রতিবেদনে দেখানো হয়েছে, ‘গড়পড়তায় দুটি পরিপূর্ণ বৃক্ষ যে অক্সিজেন সরবরাহ করে, তা চার সদস্যের একটি পরিবারের জন্য যথেষ্ট।’ গাছ পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে। বায়ুমণ্ডলের ওজোনস্তরকে ক্ষতিগ্রস্ত হতে দেয় না। তাই নির্দ্বিধায় স্বীকার করতেই হবে বৃক্ষের মতো উপকারী বন্ধু হয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর মতো পৃথিবীতে আর কেউ নেই। বাংলাদেশে ঘনবসতিকে মাথায় রেখে আমাদের বনায়ন কার্যক্রমে আরো বেশি জোর দেয়া প্রয়োজন। এছাড়া গ্রামীণ জনগণকে শিক্ষিত করে তোলার জন্য শহরের তুলনায় গ্রামীণ শিক্ষা ব্যবস্থায় সুযোগ সুবিধা অপ্রতুল। গ্রামের তুলনায় শহরের শিক্ষার সুযোগ সুবিধা অনেক বেশি। রাস্তাঘাট না থাকায় গ্রামের ছেলে-মেয়েরা বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ায় সমস্যায় পড়ে। অথচ শহরের ছাত্রছাত্রীদের বিদ্যালয়ে যাতায়াতের জন্য আলাদা গাড়ির ব্যবস্থা থাকে। গ্রামে অনেক মেধাবী ছাত্র-ছাত্রী থাকলেও ভালো শিক্ষকের অভাব। ব্যবহারিক ক্লাসের ব্যবস্থা নেই। অথচ শহরের বিদ্যালয়গুলোতে এ সকল সুযোগ সুবিধা পর্যাপ্ত। ফলে মেধা থাকা সত্ত্বেও গ্রামের ছেলে-মেয়েরা মেধার সুষ্ঠু বিকাশ ঘটাতে পারে না।

উল্লেখ্য, ‘যুক্তির আলোয় খুঁজি মানুষের মুক্তি’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে ব্র্যাক সারাদেশে এই কার্যক্রমটি পরিচালনা করছে। এর ধারাবাহিকতায় চুয়াডাঙ্গা জেলার ৪টি উপজেলায় প্রাথমিক বাছাই পর্বে উত্তীর্ণ হয়ে শিক্ষক পর্যায়ে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার মাখালডাঙ্গা দীননাথপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও জীবননগর উপজেলার উথলী মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় এবং শিক্ষার্থী পর্যায়ে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার খাড়াগোদা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও আলমডাঙ্গা উপজেলার কুমারী ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় জেলা পর্যায়ের বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। বির্তকের বিষয় ছিলো শিক্ষকদের জন্য ‘পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গাছ প্রধান হাতিয়ার’ এবং শিক্ষার্থীদের জন্য ‘শহরের তুলনায় গ্রামের স্কুলের বেশি সুযোগ সুবিধা দরকার’। প্রতিযোগিতায় শিক্ষক পর্যায়ে উথলী মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় ও শিক্ষার্থী পর্যায়ে কুমারী ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় বিজয়ী হয়ে বিভাগীয় পর্যায়ে প্রতিযোগিতার জন্য নির্বাচিত হয়েছে। পরে বিজয়ী বিদ্যালয়গুলোর প্রতিনিধিদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন অতিথি মহোদয়।