শুধু মেয়র প্রার্থীই দলীয় প্রতীক পাবেন

স্টাফ রিপোর্টার: রাজনৈতিক দলের সরাসরি অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে জাতীয় সংসদে স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) বিল-২০১৫ পাস হয়েছে। সে অনুযায়ী পৌরসভার মেয়র প্রার্থীরা স্ব স্ব দলীয় প্রতীক বরাদ্দ পাবেন। আর কাউন্সিল প্রার্থীদের আগের মতোই প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হবে।

গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে স্থানীয় সরকার, পল্লি উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন বিলটি পাসের প্রস্তাব উত্থাপন করেন। তা কণ্ঠ ভোটে পাস হয়। এর আগে বিলটির ওপর জনমত যাচাই ও বাছাই কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাব উত্থাপন করলেও তা নাকচ হয়ে যায়। এ প্রস্তাব উত্থাপন করেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টির নূরুল ইসলাম ওমর, ফখরুল ইমাম, সেলিম উদ্দিন, আবদুল মতিন, পীর ফজলুর রহমান ও নূরুল ইসলাম মিলন এবং স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য ডা. রুস্তম আলী ফরাজী ও হাজি মো. সেলিম।

বিল পাসের আগে মেয়র পদে দলীয় প্রতীকের পাশাপাশি কাউন্সিলর পদেও দলীয় প্রতীক বরাদ্দ দেয়ার বিধান অন্তর্ভুক্ত করতে সংশোধনী প্রস্তাব দেন সরকারের শরিক দল ওয়ার্কার্স পার্টির এমপিরা। পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা, অ্যাডভোকেট মুস্তফা লুৎফুল্লাহ ও টিপু সুলতান পৃথকভাবে এ প্রস্তাব উত্থাপন করেন। তা কণ্ঠ ভোটে নাকচ হয়ে যায়। তবে সরকারি দলের সদস্যদের উত্থাপিত কয়েকটি সংশোধনী প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। বিলটি এখন রাষ্ট্রপতি অনুমোদন করলে তা আইনে পরিণত হবে। এরপর গত ২ নভেম্বর পৌর আইন সংশোধন করে রাষ্ট্রপতির জারি করা অধ্যাদেশ বাতিল হয়ে যাবে। ১৫ নভেম্বর জাতীয় সংসদে বহুল আলোচিত এ বিলটি উত্থাপনের পর তা অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়। গত বুধবার বিলটি পাসের সুপারিশ করে সংসদে প্রতিবেদন জমা দেয় সংসদীয় কমিটি।

বিদেশি নাগরিকের তথ্য সংগ্রহে বিল: বিদেশি নাগরিকদের তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণে সংসদে বিদেশি নিবন্ধন বিল-২০১৫ উত্থাপন করা হয়েছে। সরকারদলীয় সদস্য মো. ইসরাফিল আলম তা উত্থাপন করেন। পরে বিলটি বেসরকারি সদস্যদের বিল ও বেসরকারি সদস্য সিদ্ধান্ত প্রস্তাব সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।

বিলে বিদেশি নিবন্ধনকারী কর্তৃপক্ষ গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে। বলা হয়েছে, এ আইনের উদ্দেশ্য পূরণের লক্ষ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীনে বিদেশি নিবন্ধন সেল নামে একটি নিবন্ধন সেল থাকবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিজস্ব অর্গানোগ্রাম অন্তর্ভুক্ত জনবলের সমন্বয়ে তা পরিচালিত হবে। প্রচলিত অন্য কোনো আইনে যাই থাকুক না কেনো, নিবন্ধন ফরমে মিথ্যা তথ্য প্রদান করে বাংলাদেশে প্রবেশ শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে বিবেচিত হবে। কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান এই বিধান লঙ্ঘন করলে তিনি বা ওই প্রতিষ্ঠান এই আইনের অধীনে অপরাধ করেছেন বলে গণ্য হবে। এই অপরাধে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এক লাখ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। অনাদায়ে এক মাসের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

সবার শ্রমের মর্যাদা দিতে বিল: কৃষি শ্রমিক থেকে মালিসহ অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের সব শ্রমিকের শ্রমের মর্যাদা দেয়ার বিধানের প্রস্তাব করে সংসদে একটি বেসরকারি বিল উত্থাপিত হয়েছে। তা উত্থাপন করেন সরকারদলীয় সদস্য ইসরাফিল আলম। বিলটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য বেসরকারি সদস্যদের বিল ও সিদ্ধান্ত প্রস্তাব সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়েছে। বিলে বলা হয়েছে, দেশের প্রায় ৮৭ শতাংশ শ্রমজীবী মানুষ অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে অসংগঠিত অবস্থায় বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত। তারা প্রচলিত শ্রম আইন প্রদত্ত অধিকার, সুযোগ-সুবিধা হতে বঞ্চিত। এ বিলটি প্রণয়নের ফলে তাদের আইনি ও সামাজিক মর্যাদা প্রদান করবে এবং বিলটি আইনে পরিণত হলে প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের বৈষম্যমূলক পরিবেশ কমে আসবে।