মসজিদ নির্মাণকে কেন্দ্র করে বাঁশবাড়িয়ায় ৮ জনকে কুপিয়ে জখম মামলার আসামির রহস্যজনক মৃত্যু

আলমডাঙ্গা ব্যুরো: মসজিদ নির্মাণকে কেন্দ্র করে আলমডাঙ্গার বাঁশবাড়িয়া গ্রামে প্রতিপক্ষ ৮ জনকে কুপিয়ে জখম মামলার ৪নং আসামি আশাদুল হকের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। তার আকস্মিক মৃত্যুর ঘটনায় প্রতিপক্ষকে দোষারোপ করা হচ্ছে। গতকাল বাদ আছর তিনি গ্রামের হাট থেকে বাজার করে বাড়ি ফিরলে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান বলে গ্রামসূত্রে জানা গেছে।

জানা গেছে, আলমডাঙ্গা উপজেলার বাঁশবাড়িয়া গ্রামের হাতেম আলী গ্রুপের সাথে একই গ্রামের সাবান মণ্ডলের ছেলে মহাবুল গ্রুপের বিরোধ বেশ পুরোনো। গ্রামের একমাত্র মসজিদটি মহাবুলদের পাড়ায় অবস্থিত। ওই মসজিদে নামাজ পড়তে গেলে বিভিন্ন কারণে হাতেম আলী গ্রুপের লোকজনকে মহাবুল গ্রুপ তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে আসছিলো। এমন অভিযোগ থেকে গ্রামের দক্ষিণপাড়ার নদীর ধারে হাতেম আলী পক্ষ নতুন করে একটি মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করে। গত ২০ অক্টোবর জিয়ার ও সমের আলী নামক ২ ব্যক্তি ৪ কাঠা জমি প্রস্তাবিত মসজিদের নামে রেজিস্ট্রি করে দেন। এ নিয়ে গ্রামের দু পক্ষের বিরোধ আরও তুঙ্গে ওঠে। এ ঘটনায় প্রচণ্ড ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে মহাবুল গ্রুপ। তারা গত ২১ অক্টোবর দুপুরে প্রতিপক্ষের ওপর হামলা চালিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে একই পরিবারের ৫ জনসহ ৮ জনকে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে। এদের ৫ জনকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল ও ৩ জনকে হারদী স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি ৫ জনকেই ঢাকায় রেফার করা হয়। ওই মারামারির সময় মহাবুল পক্ষের ৪ জনও প্রতিপক্ষের হাতে আহত হয়। এ ঘটনায় থানায় দায়েরকৃত মামলায় আলমডাঙ্গা থানায় এসআই টিপু সুলতান বাশঁবাড়িয়ার মৃত হাজারি মণ্ডলের ছেলে হাশেম আলী (৫৫) ও মৃত হাউস আলীর ছেলে আবুল কালামকে (৩৫) গ্রেফতার করেন। বাকি আসামিরা প্রতিপক্ষের সাথে আপসের প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছিলো। এরই এক পর্যায়ে ওই মামলার ৪নং আসামি বাশঁবাড়িয়া গ্রামের ফয়েজ উদ্দীনের ছেলে আশাদুল হক (৪২) গতকাল বৃহস্পতিবার আকস্মিকভাবে মৃত্যুবরণ করেন। প্রতিপক্ষসহ গ্রামের অধিকাংশ মানুষের ধারণা আশাদুল হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করে। কিন্তু মৃত্যুবরণকারী পক্ষের দাবি- মারামারির সময় প্রতিপক্ষ হাতেম আলী পক্ষের হাতে আশাদুল হক আহত হয়েছিলো। সে কারণেই আশাদুল হকের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে গ্রামে সালিস-বৈঠক বসে। উভয়পক্ষের বক্তব্য শুনে সালিসকারীরা সিদ্ধান্ত নেন লাশের ময়নাতদন্তের। তদন্তে মারধরের কারণে তার মৃত্যুর প্রমাণ মিললে প্রতিপক্ষের নামে হত্যামামলা দায়ের করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

Leave a comment