স্টাফ রিপোর্টার: পুলিশ দম্পতি মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমানের হত্যার দায়ে তাদের মেয়ে ঐশী রহমানের মৃতুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৩’র বিচারক সাঈদ আহমেদ এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ে ঐশী রহমানের বন্ধু মিজানুর রহমান রনিকে ২ বছরের কারাদণ্ড প্রদান ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়া খালাস দেয়া হয়েছে আরেক বন্ধু আসাদুজ্জামান জনিকে। রায় ঘোষণাকালে আদালতে উপস্থিত ছিলেন ঐশী রহমান ও মিজানুর রহমান রনি। জামিনে থাকায় এ সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন না আসাদুজ্জামান জনি। এর আগে গত ৪ নভেম্বর রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষ মামলার যুক্তি উপস্থাপন শেষ করায় ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৩’র বিচারক সাঈদ আহমেদ রায়ের জন্য এ দিন ধার্য করেন।
এ মামলায় ঐশীদের বাসার শিশু গৃহকর্মী খাদিজা আক্তার সুমি অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় তার বিচার চলছে শিশু আদালতে। গত বছরের ২০ মে সুমির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে তাকে জামিন দেন শিশু আদালতের বিচারক জাকিয়া পারভিন। গত বছরের ১ জুন গাজীপুরের কিশোর সংশোধন কেন্দ্র থেকে মা সালমা বেগমের জিম্মায় জামিনে মুক্তি পেয়েছে সে। পুলিশ দম্পতি হত্যার চাঞ্চল্যকার এ মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত তিন আসামি হলেন- ঐশী রহমান, আসাদুজ্জামান জনি ও মিজানুর রহমান রনি। পুলিশ দম্পতি হত্যা মামলায় মোট ৪৯ জন সাক্ষীর মধ্যে ৩৯ জন আদালতে বিভিন্ন সময় সাক্ষ্য দেন।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ২০১৩ সালের ১৬ আগস্ট রাজধানীর মালিবাগের চামেলীবাগে নিজেদের বাসা থেকে পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের (রাজনৈতিক শাখা) পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমানের ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। মা-বাবা খুন হওয়ার পর পালিয়ে যায় ঐশী। ঐশী তার ব্যক্তিগত উচ্ছৃঙ্খল জীবনের পথে পুলিশ দম্পতি বাবা-মা’র বাধাকে দূর করতেই এ হত্যাকান্ড ঘটায় বলে অভিযোগ উঠে। এ ঘটনায় ২০১৩ সালের ১৭ আগস্ট নিহত মাহফুজুর রহমানের ছোট ভাই মো. মশিউর রহমান রুবেল বাদী হয়ে পল্টন থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই বছরের ১৭ আগস্ট ঐশী রমনা থানায় আত্মসমর্পণ করে। এরপর ২৪ আগস্ট আদালতে খুনের দায় স্বীকার করে জবানবন্দী দেয়। পরবর্তীতে ২০১৪ সালের ৯ মার্চ ঐশীকে প্রধান আসামি করে তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ দেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের পরিদর্শক আবুল খায়ের। তাতে বলা হয়, বাবা-মাকে ঐশীই হত্যা করেন, আর অন্যরা তাকে সহযোগিতা করেন। ২০১৪ সালের ৩০ নভেম্বর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৩’র বিচারক এবিএম সাজেদুর রহমান তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।